১। এখানে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁকে আকাশ দেখতে হয় না । এখানে নেই উচু প্রাসাদ-এখানে নেই ইট কংক্রিটের রাস্তা। এখানে সর্বত্র শান্তির ছোঁয়া। নীলের চাদরে পেজাতুলো মেঘের **িশ-নিশ্চিন্তে শুয়ে থাকা যায় কল্পনীড়ে। এখানে দিগন্ত জুড়ে সবুজ তার পাশ ঘেঁষে নীল আকাশটা নুয়ে পড়ে মর্ত্যে। আমি আকাশ ভালবাসি, ভালবাসি পেজাতুলো শুভ্র মেঘ। তুমি কি কখনো ঠায় দাড়িয়ে এমন আকাশ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলে? আমি জানি তুমি এসব দেখো না -প্রকৃতির সৌন্দর্যে তোমার মন নাড়া দেয় না মুগ্ধতায়। শুধু একটি বিকেল এসো তালপুকুরে-জলের ছায়ায় তোমায় আমি আকাশ শিখাবো-চিনাবো কি করে মুগ্ধ হতে হয়। প্রকৃতিকে ভালবাসতে হয়।
আবার ফিরে আসলাম কিছু ছবি নিয়ে। আশাকরি সবাই ভালই আছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমিও আছি আলহামদুলিল্লাহ। হাবিজাবি কিছু ছবি। আমাদের গ্রামের ছবি। শীতের কুয়াশার ছবি আর ট্রেন থেকে তোলা একটা ছবি আছে। ভেজা পাতার ছবি আশাকরি স্নিগ্ধতায় মন ভরে যাবে। বরাবরের মতো এগুলোও ক্যানন ৬০০ডি দিয়ে তোলা । একটা ছবি মোবাইলের- কামিনী ফুলেরটা।
২। তুমি সবুজ আমি সাদা, সবুজের সজীবতায় না হয় এ বেলা হারিয়ে যাই-চুপটি করে বুকের বিছানায় শুয়ে থাকি গুঁটিসুঁটি। তুমি দু'চোখে স্বপ্ন দিয়ো। আমি চোখ মুদে গুনে যাবো স্বপ্ন প্রহর।
৩। বৃষ্টির ফোঁটা ভেবে আবার ভুল করে বসো না। ধরে নাও এই পাতা আমার চোখ। তোমায় দেয়া বিরহে কাতর-মাঘের ভোরে এভাবেই শিশির হয়ে ঝুলে থাকে জল-আমার চোখের পাতায়-তুমি কি এমন স্নিগ্ধতা মাটিতে পড়তে দিবে? নাকি আঙ্গলের ডগায় আলতো তুলে নিবে ভালবাসার এ অশ্রু? আচ্ছা! তুমি কি কখনো কিছুতেই মুগ্ধ হও না। উচ্ছ্বাসভাঙ্গা প্রহরে সেই দূরেই রয়ে গেলে-যাক, এবার শীতের ভোরে দখিন জানালা খুলে দেখো-শিশির হয়ে ঝুলে আছি তোমার জানালার শার্শিতে।
শিশির বিন্দু
৪। বসন্ত এই এলো বলে....... উড়িয়ে নিয়ে যাবে শিশিরের স্নিগ্ধতা। এমন প্রহরে ফিরে যেতে আবারো অপেক্ষার জাল বুনতে হবে। পায়ের তলায় ভেজা মাটি। চারিদিকে কুয়াশায় ঢাকা একটি সকাল রেখে এসেছি পিছনে ফেলে। হয়তো আগামীতে তাকে ফিরে পাবো হয়তো না। জীবন এমনই-শিশিরের ফোটার মতই-অকষ্মাৎ ঝরে যায়-শুকিয়ে যায় জীবন পাতা। এমন প্রহর শুধু ছুঁতেই ইচ্ছে করে। মুগ্ধতাগুলো শাটারের ক্লিকে হয়ে থাকে বন্দি। তবুও চোখের শান্তি-সবুজের শিশির স্নানের সজীবতা দেখতে।
৫। গাঁদার বাগে রঙ লেগেছে-বন্ধু এসো ত্বরা
সাজব রঙ বসন্ত সাজে-মনে তৃষ্ণার খরা
হাতের **া চুলের খোঁপায়-পরিয়ে দাও মালা
আসল বুঝি ঐ বসন্ত- গাঁদায় ভরো ডালা।
ছুঁয়ে দাও চোখের পাতায়-গাঁদা ফুলের পল্লব
মনের মাঝে সুর উঠেছে-আহ্ প্রেমের কলরব।
৬। ও ফড়িং তোর ডানা দে-না-ওড়তে ইচ্ছে জাগে
রক্ত রঙের জামা পড়ে-বন্ধুর ফুলের বাগে
ওড়ব বাগের ফুলে ফুলে-বন্ধু দৃষ্টি রাইখো
দখিন জানলা খোলা রেখে-আমার ছবি আঁইকো।
মন ফড়িংয়ের দেশে তুমি-রাজা হবে শুনছো!
ও বন্ধু কি আমার জন্য-অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছো?
৭। এমন মুগ্ধ প্রহর আমারও ছিলো একদিন- এলোমেলো কত দৃশ্য ভাসে স্মৃতির ভেলায়। তালপুকুরের পাড়ে কত সময় কেটেছে এমন দৃশ্য দেখে দেখে। আহা সেই মৃদু মন্দ ঝিরিঝিরি হাওয়া.....গরু চড়ানো মাঠ- বাচ্চাদের হই হুল্লোড়। কেমন জানি আপন হয়ে কাছে টানে-ফিরে গিয়ে আজো সেখানেই বসে কাটাই বিমুগ্ধ প্রহর। সবুজের সজীবতা গায়ে মাখি আজো-একটু সময় নিয়ে নেই ব্যস্ততার কাছে ধারে। সবুজ হলুদ আলোর প্রহরগুলো কখনো পুরান হয় না-চোখে লেপ্টে থাকে মুগ্ধতার বেশে। বয়সের জরাজীর্ণতা কখনো আমায় কাছে টানতে পারে না। কারণ আমি সময় উপভোগ করতে- অনুভবে মুগ্ধতা মাখাতে জানি-মুগ্ধ হতে গেলে ভালবাসতে হয় হুম প্রকৃতির সুন্দর ভালবাসতে হয়।
৮। একা বসে কিসের প্রহর গুনছো-ওগো কালো পাখি
বন্ধুর জন্য তবে কি তোমার ছলছলায় দু আঁখি
সোনার খাটে বসে কাটাও নিদ্রাবিহীন রাতি
রোজ বিহানে খুঁজে ফিরো তোমার সেই হারানো সাথি।
৯। এই শহরে পৌষও নেই মাঘও নেই। এখানে আছে শুধু ইটসুড়কির ধূলার কুয়াশা... এখানে ভেজা ঘাস নেই, নেই লতাপাতায় শিশিরের ছোঁয়া। এখানে পথ চলতে পায়ে পরতে হয় সুখ পাদুকা। হ্যাঁ আমার গাঁয়ে পৌষ-মাঘ আছে, আছে শিশির আর মরিচিকা কুয়াশা, দৃষ্টিতে আছে অথচ ছুঁতে গেলে নেই। পথ এগোলেও কুয়াশা দাঁড়ায় আবছা মিষ্টি ভেজা অনুভূতি নিয়ে সামনে। এখানে নগ্ন পায়ে হাঁটলে দেহমনে আনে প্রশান্তি। শিশির বসে থাকে দূর্বাঘাসের উপর। তুমি এসো, দেখবে যেখানে তুমি দাঁড়াবে তোমার মন শান্তিতে ছুঁয়ে যাবে।
১০। বৃক্ষের বুক ফুঁড়ে গজায় নব কিশলয়। ঝরে যায় পুরাতন, নতুন আলোর মুখ দেখে নবকুঁড়ি। পর্যায়ক্রমে ওরা বেঁচে থাকে-ঝরে পড়ে-এইতো নিয়ম। আসা যাওয়ার খেলায় আমরাও হারিয়ে যাবো চিরতরে। নতুন কুঁড়ি হয়ে এসেছিলাম ধরায়, কৈশোর তারুণ্য হারিয়ে ধীরে ধীরে লাল কমলা পাতার মতো ঝরে যাবো-হবো একদিন ঝরা পাতার কাব্য। কিসের তবে এত অহংকার শুনি-এত অহম মনে কেনো মানুষ তোমরা বেঁচে থাকো বুক ফুলিয়ে-কিছুই নেই হাত বাড়ালে- কেউ রাখবে না মনে। তুমিও ঝরে যাবে শেষ খেয়ায় চড়ে যেতে হবে অনন্তে।
১১। ইট পাথরের যন্ত্র শহরে কি তুমি মুগ্ধতা খুঁজে পাও - না পাবে? এমন ঝোঁপ জঙ্গল ডোবা...... সবুজের পাটি বিছানো তার পাড়ে-কি দুপুর কি বিকেল প্রতিটি মুহুর্তই মুগ্ধতায় ভরা। চারিদিকে সবুজ গাছগাছালি-মুর্হুমুহু স্নিগ্ধ হাওয়ায় উড়িয়ে দেয় সকল ক্লান্তি। এখানে কর্ম শেষে সবাই এসে বসে ক্লান্তি ঝেড়ে দেয়ার মানসে। আর মুগ্ধ দৃষ্টি স্থির হয় ডোবার জলে-কতটা স্বাধীনতায় এখানে খেলা করে রাঁজহাস-পাতিহাঁস-মাছেরা। জলের ছায়ায় আকাশটা তার নীল ঢেলে দেয়-আর আমি মুগ্ধ হই । আমি জানি না আর কেউ মুগ্ধ হয় কিনা কিঙবা এমনদৃশ্য দেখে কেউ থমকে যায় কিনা-আমি উপভোগ করি প্রকৃতির সুন্দর আর শোকরিয়ায় মাথা নত করি আমার প্রভুর প্রতি।
১২। নিবিড় বুননে বুনে যাই নীড়-। কুয়াশা এসে পরিয়ে যায় মুক্তোর মালা। ধূলোরা পড়ে ঝরে। ক্লান্তিহীন অপেক্ষায় শিকারের। মশা মাছি প্রজাপতি আসুক তবে উড়ে উড়ে। জালে জড়িয়ে দিবো তবে পেটের যুগান। হ্যাঁ কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই । মহান আল্লাহ এমনভাবেই জীব সৃষ্টি করেছেন-একে হই অন্যের আহার। বড় মাছ খেয়ে ফেলে ছোট মাছ, আবার ব্যাঙ খায় পোকা মাকড়। ব্যাঙকেও খায় আবার মাছ। ঠিক তেমনি খাদ্য চক্র এই পৃথিবীর। শুধু মানুষ ব্যতীত। এজন্য শোকরিয়া জানাই মাবুদ-মানুষ করিয়া সৃষ্টি করিয়াছো এই ভূবনে।