Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

আমরা যেন ভুলে না যাই ভাষাসংগ্রামী বীরদের

$
0
0

ভাষা সংগ্রামের সূচনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলেও বাংলা ভাষার প্রতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং খাজা নাজিমুদ্দিনের অবজ্ঞা ও অবমাননা সব বাঙালিকেই ক্ষুব্ধ ও ত্রুক্রদ্ধ করেছিল। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এ কারণে গ্রেফতার ও নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু সঠিক তালিকা না থাকায় আজ ছয় দশক পরও অনেকেরই অজানা, কারা এই ভাষা সংগ্রামে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। আমাদের অবশ্যই জানতে হবে, কারা সেই সাহসী বীর- যাদের প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কারণে আমরা আমাদের মাতৃভাষাকে হায়েনার হাত থেকে রক্ষা ও পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে পেরেছিলাম। কিন্তু সেই ভাষাকে আজও সর্বস্তরে চালু করতে পারিনি। বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা শেখা, বলা, লেখা যাবে না- এমন অনুদার মন-মানসিকতা ভাষাসংগ্রামীদের ছিল না। ভাষা আন্দোলন ছিল সে সময়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যর অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি; অন্য ভাষার প্রতি অনীহা নয়। তাই আমরা 'অন্যতম রাষ্ট্রভাষা' দাবি করেছিলাম যৌক্তিকভাবে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের ব্যাপ্তিকাল। কিন্তু বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি ও পরের দিনগুলোতে মুসলিম লীগ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনের গুলিবর্ষণে কতজন শহীদ হয়েছিল মাতৃভাষার জন্য, তার হিসাব নেই। গুলিতে নিহত বহুজনকেই পাকিস্তানি মিলিটারি রাতের অন্ধকারে সরিয়ে ফেলেছিল। তাই আমরা সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর প্রমুখ ক'জনের নামই মাত্র জানতে পেরেছি। আন্দোলন সংঘটিত করায় সক্রিয়দের তালিকাও নেই। তাদের কেউ কেউ নিভৃতচারী। সাঈদ হায়দারের মতো নবতিপর বয়সেও ভাষা নিয়ে চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। তারা হয়তো মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন করার জন্য কোনো পুরস্কার চাইবেন না, কিন্তু আমাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই এই মহান ভাষাসংগ্রামীকে শ্রদ্ধা জানানোর? মোহাম্মদ ইমাদুল্লা ছিলেন ভাষা সংগ্রামের সক্রিয় সংগঠক। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি গুলি চালনার পর ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে যে বিক্ষুব্ধ ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে সভাপতিত্ব করেন তিনি। পরে ইমাদুল্লা যুব আন্দোলনের শক্তিমান সংগঠক এবং পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন তুখোড় বক্তা। ১৯৫৬ সালে কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালেই মৃত্যুবরণ করেন। এমন এক শক্তিমান সংগঠক ও প্রগতিশীল রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্বকে আজ পর্যন্ত তার অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এরকম অসংখ্য ছাত্র জনতা আমার মাতৃভাষার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিল যাদের অনেকের নামই আমাদের অজানা। অথচ আমরা চাইলেই তাদেরকে সনাক্ত করে সম্মানিত করতে পারতাম। যার ব্যর্থতা গ্লানী আমাদেরকে এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>