“পবিত্র কাবা ঘর ও মহানবি মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) এঁর রওজা মুবারক জিয়ারত।”
১
আমার জীবনে ২০১২ ইং সালটি চরম চাওয়ার ও পাওয়ার বছর। প্রতিটি মুসলমানের মনের একান্ত কামনা ও বাসনা এই দুইটি পবিত্র জায়গা জিয়ারত করা। সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে ও মহানবীর দয়ায় ২০১২ ইং সালে পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় যাইতে সৌভাগ্য হয়েছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, হজ কষ্টসাধ্য ইবাদত। এই পবিত্র হজব্রত পালন করতে গেলে অবশ্যই কষ্ট সহ্য করা মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। এই বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে সঠিকভাবে লিখা আছে ও বিভিন্ন অলি আওলিয়াগণ সঠিক তথ্যসহ লিখে গেছেন। আমি খুবই ক্ষুদ্র ব্যক্তি, আমার এই বিষয়ে জ্ঞান নাই, আমি শুধু আমার সমস্যা, কষ্ট ও আল্লাহর কুদরত ও মহানবীর প্রত্যক্ষ দয়া দেখেছি তা লিখার চেষ্টা করলাম। আমি ইচ্ছা করে কাহাকেও কোনো প্রকার কষ্ট দিবার চেষ্টা করি নি। তবুও আমার এই লিখার জন্য কেহ কোনো প্রকার কষ্ট বা দুঃখ পান তাঁর বা তাঁদের নিকট আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
আমার চাকুরী জীবনে শত কষ্টের মধ্যে সৎ থাকার চেষ্টা করেছি। চাকুরীর প্রথম জীবন থেকেই ইচ্ছা ছিল, আল্লাহ যদি সুস্থ রাখেন তবে সরকার হতে প্রাপ্ত গ্র্যাচুইটির টাকা দিয়ে প্রথম হজব্রত পালন করব। ইচ্ছা ছিল জীবন সংগিনীকে সঙ্গে নিব। কিন্তু সে বেশি হাঁটতে পারে না, তাই তাকে সঙ্গে নিতে পারলাম না।
আমার এলাকার দুইজন সুহৃদ বড় ভাইয়ের কথায় আমি সরকারি ভাবে হজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। বাংলাদেশের সরকারি আমলাদের ব্যবস্থাপনা নিচু মানের হওয়ায় ও ২০১২ইং সালে সৌদি বাজার দর বেশি হওয়ায় আমি আর্থিক ও শারীরিকভাবে খুবই কষ্ট পেয়েছি, এটা মানুষের সৃষ্টি। এগুলি আল্লাহ আমার ভাগ্যে রাখেননি।
আল্লাহর কুদরত ও রহমতঃ
আমি নিয়মিত ভাবে দাড়ি কাটতাম। হজের নিয়ত যখন করলাম, তখন একদিন কামদিয়ার বাজারে একটা কাজের জন্য হাঁটতেছিলাম, হঠাৎ মনে পড়লো আমাদের দয়ার মহানবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) পবিত্র নগরী মদিনায় জীবিত অবস্থায় শুয়ে শুয়ে তাঁর উম্মতের অর্থাৎ আমাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতেছেন। আমি কোন সাহসে দাড়িহীন মুখে (সুন্নত ছাড়া) তাঁকে সালাম দিব ? তখনই নিয়ত করলাম, আমি আর কখনোই দাড়ি কাটবো না এবং সুন্নত ভাবে দাড়ি রাখবো। ইতিপূর্বে বহু আতœীয় -স্বজন ও বন্ধু বান্ধব আমাকে দাড়ি রাখার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিল, কিন্তু দাড়ি রাখার জন্য মনের গভীর থেকে তাগাদা বা প্রয়োজন মনে করি নাই। আমার দাড়ি রাখাটা আমার জীবনে আল্লাহর কুদরত মনে করি।
হজে যাওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে ভীষণ সর্দি, জ্বর আর আমাশয় রোগে আক্্রান্ত হলাম। স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক ১০২ ডিগ্রি জ্বরকে শিরায় ইনজেকশন দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেন, কিন্তু ফল শূন্য। হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নাম নিয়ে ঐ অসুস্থ অবস্থায়, সকলের নিকট হতে দোয়া নিয়ে বাড়ি
২
থেকে রওয়ানা দিলাম, সঙ্গে ছেলে। যথা সময়ে ঢাকা হজ ক্যাম্পে উপস্থিত হলাম। ছেলে এক আতœীয়ের বাসায় থাকার জন্য চলে গেল। আমি আমার বেড ঠিক করে, পায়খানার চাপ দিলে টয়লেটে গেলাম, শুধু রক্ত আর রক্ত। আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিলাম, কোনো মতে বেডে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবারও টয়লেটে গেলাম, আবারও রক্ত ঝড়লো। কোনো মতে টয়লেট থেকে এসে হাজী ক্যাম্পের ডাক্তারের নিকট যেয়ে আমার রোগের কথা বলায় উনি কিছু ঔষুধ দিলেন। তার ঔষুধ খেয়ে আমার কোনো উপকার হলো না। সারা রাত্রিতে বেশ কয়েকবার টয়লেটে যেতে হলো, প্রত্যেকবার রক্ত ঝড়তে লাগলো। ছেলেকে মোবাইল করলাম, ছেলে আমাকে সান্তনা দিয়ে বলল, আগামিকাল ভোরে বাহির থেকে ঔষুধ নিয়ে আসবো। সকালেই ছেলে ঔষুধ নিয়ে হাজির। ঔষুধগুলো যথা নিয়মে খেতে লাগলাম,কিন্তু রক্ত বন্ধ হয় না।
মরার উপর খাঁরার ঘা হিসাবে দেখা দিলো আমার গা ঘেসে পাশের বেডে জৈনক হজ যাত্রী হিসাবে এক ব্যাক্তি অবস্থান করতে ছিলেন। তাঁর অভ্যাস ছিলো দিনের বেলায় তীব্র আলো ও হৈচৈর মধ্যেও মুখ হাঁ করে নাকের ঘরঘরি শব্দ তুলে গভীর ভাবে ঘুম পারতো আর সারা রাত্রি জেগে মবাইলে উচু শব্দে ওয়াজ শুনতো,এতে আমি কিছুতেই ঘুমাতে পারতাম না। অসুখ এবং ঘুমাতে না পারায় আমার শরীর আর মন একদম ভেঙ্গে পরলো। আমাদের ফ্লাইট মাত্র দুই দিন পর। এক সময় মনে হলো, আমি আর বোধ হয় হজে যেতে পারবো না। আমি শুধু আল্লাহর নিকট কান্নাকাটি করে, কায়মনে তাঁর রহমত কামনা করতে লাগলাম। আল্লাহর নিকট চাইলাম, পবিত্র শহর মক্কায় যেয়ে কাবা ঘর দেখে যেন আমার মৃত্যু দেন। দুইদিন রক্ত পড়ার পর একটুক কমলো। গোসল ও অজু করে চোখের পানিতে সকলের সঙ্গে ইহরাম বেঁধে (নির্দ্দিষ্ট দোয়া) “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হামদা,ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।” পড়তে পড়তে বিমান বন্দরের বাসে উঠে বসলাম। ছেলেও অন্য বাসে বিমান বন্দরে আসলো এবং লাইন পর্যন্ত আগাইয়া দিল, ছেলের সঙ্গে আর দেখা হলো না। আমি সব সময় আল্লাহর নাম নিতেছিলাম। অফিসের নিয়ম সেরে সকলে একটা ঘরে বসে হজ পালনের নিয়মনীতি শুনতে লাগলাম। এক ঘণ্টার উপর অপেক্ষার পর অনেক নিয়ম কানুনের পর আমরা বিশাল বিমানে উঠলাম, যাত্রী সংখ্যা ৫৬০ জনের উপর। বিশাল বিমানের মধ্যে বিমানবালা ও পুরুষ কর্মকর্তারা আমাদিগকে ১ম বার চা নাস্তা,২য় বার দুপুরের খাবার ও ৩য় বার চা নাস্তা দিল। খাবারের মান উন্নত এবং তাদের ব্যবহার খুবই ভালো।
প্রায় ৭ ঘণ্টার পর আমাদের বিমানটি আল্লাহর রহমতে ভালোভাবে জেদ্দা বিমান বন্দরে অবতরণ করে। জেদ্দা বিমান বন্দরে প্রায় ৩ ঘণ্টা লাগলো সৌদি সরকারের নিয়মনীতি পালন করতে। বিমান বন্দরের বাইরে সৌদি মোয়ল্লেমের বাস দাঁড়াইয়া আছে। আমাদেক গুনতি করে বাসে উঠানো হলো। বাসে উঠানোর পর হাজিদিগকে আবার দুইবার গণনার পর বিভিন্ন চেক আপের পর আমাদের বাস পবিত্র মক্কার দিকে যাত্রা করলো। সকলের মুখে লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।” প্রায় ৪ ঘণ্টার পর আমাদের প্রাণ প্রিয় পবিত্র কাবা শহর মক্কার মিসফালার ৫নং বিল্ডিংয়ের সামনে বাস থামলো। চোখের
৩
সামনে ভেসে উঠল পবিত্র কাবা চতরের ঘড়ির মিনার । মনে হলো প্রাণ প্রিয় কাবাঘর অল্প একটু দূরে। সেখানে ৫ওয়াক্ত নামাজ আদায় এই বৃদ্ধ বয়সে সহজ হবে, অথচ পবিত্র হেরেম শরীফ এতো কাছে নয়। আমরা লিফটে ৫তলায় নিজেদের রুমে যেয়ে যার যার বেড ঠিক করে নিলাম। আল্লাহর খাস রহমতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা আমার টয়লেটে যাওয়ার চাপ হয় নাই। আমি টয়লেটে গেলাম, আবার রক্ত আর রক্ত পড়লো। আমি আর কিছুতেই ভয় পেলাম না। আমি আমার প্রাণের পবিত্র শহরে পৌঁছেছি, এখানেই আমার মৃত্যু হলে মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট কোটি কোটি শুকুরিয়া।
পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ ঃ (ফরজ)
রুমে ঢাকার এক মুরব্বি যিনি ইতিপূর্বে ৭বার হজ করেছেন, এবার দিয়ে ৮বার হজ করতেছেন, তাঁর সঙ্গে পরিচয় হলো, তাঁর নাম হাজী মো: আ: খালেক,বর্তমানে ইনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না:)। তিনি বললেন, আপনারা ওযু ও গোসল সেরে নিন, আমরা রাত্রিতেই পবিত্র কাবাঘর ৭বার তাওয়াফ (ফরজ) ও ৭বার সাঈ (ওয়াজিব) করতে হবে। সকলে গোসল ও ওযু করে কিছু নাস্তা খেয়ে মহা শক্তিমান আল্লাহর নাম নিয়ে মুরুব্বির নেত্রিত্বে হেরেম শরীফের দিকে রওয়ানা দিলাম, মুখে সব সময় লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।” আল্লাহর নাম জিকির। পথে নেমে অবাক, পথের দুধারে বিভিন্ন রকমের বহুতলা বিল্ডিং, গভীর রাত্রিতে দিনের মতো আলো এবং বহু লোক আসা যাওয়া করতেছেন। তর সইছে না, কখন আল্লাহর পবিত্র কাবাঘর, পৃথিবীর সব চেয়ে আদি পবিত্র ঘর, হযরত ইব্রাহিম(আ:), ইসমাইল(আ:), বিবি হাজেরা(আ),বহু রসুল, নবীর স্মৃতি জড়িত স্থান এবং সর্বশেষ মহানবী দয়ার নবীর জন্ম স্থান দেখার জন্য মন প্রাণ ব্যাকুল। এক সময় হঠাৎ দুই চেখের সামনে অবাক বিস্ময়ে দেখতেছি সর্বশক্তিমান আল্লাহর পবিত্র ঘর। মনের গভীরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। দু’চোখ বেয়ে অঝর ধারায় পানি ঝড়ছে। নিদ্দিষ্ট দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে আল্লাহর পবিত্র ঘর তাওয়াফ করার জন্য ঢাকার মুরুবীর পিছে পিছে নিচে নামলাম। কাবার আঙ্গিনাটা কয়েক ধাপ সিঁড়ির নিচে। নির্দিষ্ট জায়গা হতে কাবাঘর তাওয়াফ করতে আরম্ভ করলাম। খুবই ভির থাকায় হাজ্রে আস্ওয়াদ (বেহেশতের পাথরে) চুমু দেওয়া সম্ভাব হয় নাই, তবে ইশারায় চুমু দিলাম। আর আল্লাহর পবিত্র কাবা ঘরের ইয়ামানির কোনের শুরু থেকে শেষ স্পর্শ ও অসংখ্যবার চুমু দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আল্লাহর পবিত্র কাবা ঘরে যখন প্রথম স্পর্শ ও চুমু দিলাম তখন যেন আমার দেহের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল, তা শেষ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এইভাবে নিষ্টার সহিত ৭বার আল্লাহর পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ (ফরজ) করলাম ও হাজ্রে আস্য়াদে ইশারায় চুমু দিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে মাকামে ইব্রহিমে ও হাতিমের ভিতরে তাওয়াফের নিয়তে দুই রাকাত (ওয়াজেব) নামাজ পড়ে দোয়া করার সুযোগ হয়েছে। এখানে দুই জায়গা দোয়া কবুলের স্থান। মহান আল্লাহ্র দরবারে রহমত ও রোগমুক্তির দোয়া কামনা করে জমজমের পানি তৃপ্তি সহকারে পান করলাম।
হযরত বিবি হাজরা (আঃ) এঁর শিশু পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)এঁর পানির জন্য সাফাÑমারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে ৭বার দৌড়া-দৌড়ি (সাঈ) করেছিলেন, তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে ও আল্লাহর আদেশে
৪
প্রত্যেক হজযাত্রীগনকে সাফা-মারওয়া ৭বার সাঈ (ওয়াজিব) করতে হয়। আমিও (মুরুবির নেত্তিত্বে) সাঈর নিয়ত করে যথারীতি ভাবে সাফাÑমারওয়া ৭বার সাঈ শেষ করে মহান আল্লার্হ দরবারে দোয়া করি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সঃ)এর আদর্শের অনুসরণে আমরা সকলে সম্পূর্ণ মাথা মুন্ডন (হলক করাÑওয়াজিব) করি। এরপর বাসায় এসে গোসল করে ইহ্রাম খুলি।
পবিত্র হেরেম শরীফে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করিলে এক লক্ষ,মদিনা মনোয়ারায় ৫০০০০ এবং বায়তুল মোকাদ্দাসে ১০০০০ ওয়াক্তের নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়। তাই প্রত্যেক মুসল্লির একান্ত ইচ্ছা এই সব মসজিদে নামাজ আদায় করা সুযোগ হাত ছাড়া করেন না। আমি বা আমরা যত দিন পবিত্র কাবা শরীফে ও পবিত্র মদিনায় নগরীতে ছিলাম তত দিন তাহাজ্জতের নামাজসহ জামাতে নামাজ আদায় করেছি।
পবিত্র মক্কা ও মদিনা শরীফে যত দিন অবস্থান করেছিলাম, তত দিন আমার জীবনে অনেক ঘটনা ঘটেছিল। পবিত্র মক্কায় হাজী ক্যাম্পের ডাক্তারের ঔষধ খাওয়ার পর আল্লাহ্র রহমতে রক্ত আমাশয় ভাল হয় কিন্তু সাদা আমাশয় ভালো হয় না। তাই আমি বাধ্য হয়ে ইহ্রাম,খাটো পান্জাবী ও লুঙ্গী পড়ে হজের যাবতীয নিয়ম কানুন পালন করি। বাঙ্গালীর খাটো পানজাবী ও লুঙ্গী পড়ে হজ্জব্রত পালন করতে যেয়ে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তার কয়েকটি ঘটনা উল্ল্যেখ না করে পারলাম না। হজ্জব্রত পালন মুসলিম জাহানের মিলন ক্ষেত্র হওয়ায়, আমি তা মনে প্রানে বিশ্বাস করি। তাই আমি প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজের আগে আমার লাইনের ডানে- বামে যে কোন দেশের মুসুল্লির সংগে সালাম বিনিময় ও নাম, কোন দেশের নাগরিক, কেমন আছেন ও কি করেন ইত্যাদি ইংরাজিতে জিজ্ঞাসা করি। কোন কোন দেশের নাগরিক বলে, নো নো ইংলিশ নো, আবার বেশী ভাগ দেশের নাগরিক সাবলিল ভাবে ইংরাজীতে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দেয়। তার মধ্যে মিশর, আফ্রিকার বিভিন্নদেশ,জার্মানী,ইউকে,আমেরিকা, ইরাক, ইরান, আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ভারত,শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া,মালোশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের হাজীগন ছিল। থাইল্যান্ড,ইন্দোনেশিয়া,মালোশিয়া হাজীগন বিশেষ ভাবে লুঙ্গি পড়ে ও বাঙ্গালিরা কেহ কেহ লুঙ্গি পড়ে,কোন কোন দেশের নাগরিককে শার্ট-প্যান্ট-গেনজি পড়ে, আফ্রিকা মহাদেশের নিগ্র হাজীগন বিচিত্র ধরনের পোষাক পড়ে নামাজ পড়তে দেখেছি। আফগানিস্থানের হাজীদের পাগড়ি পাখির বাসার মত বড় হয়। পাকিস্তান ও ভারতের কোন কোন হাজীদের গোঁফ একটুকু বড় দেখেছি। হজ্জব্রত পালনের ক্ষেত্রে সকল মুসলিমকে সাদা কাপড়ের সেলাইহীন ইহ্রাম পড়তে হয়। যখন কোন পকিস্তানের একাধিক হাজীদের সংগে আমার খাটো পানজাবী ও লুঙ্গি পড়িহিত অবস্থায় সালাম বিনিময় করি এবং যখন আমি আমার বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে পরিচয় দেই, তখন পুত-পবিত্র স্থানেও তাদের চোখে-মুখে রাগ বা ঘৃনার বহির প্রকাশ দেখতে পাই।
একদিন পবিত্র হেরেম শরীফে খাটো পানজাবী ও লুঙ্গি পড়ে জহুরের নামাজ পড়তে যাই। নামাজের আগে সেদিন সকলের সংগে এক লিটার বোতলে জমজমের পানি নিতে কাছের পানির ড্রামে যেয়ে যেমন টেপ খুলে বোতলে পানি নিতেছিলাম ওমনি নিকটে থাকা পরিচ্ছন্ন এক কর্মী আমার কাধের নিকট পানজাবীর কাপড় টেনে আমাকে দাঁড় করালো এবং জমজমের পানি নিতে কোঠর ভাবে নিষেধ করলো।
৫
উপস্থিত যারা জমজমের পানি নিতেছিল,তাদেক জমজমের পানি নিতে নিষেধ করলো না। তারা তো অবাক,কিন্তু তারা কোন প্রতিবাদ করলো না। আমি অপমানে কেঁদে ওখান থেকে নিজ জায়গায় চলে আসি। আমি জানতাম না জমজমের পানি বাহিরে নেওয়া নিষেধ। যদি জমজমের পানি বাহিরে নেওয়া নিষেধ হয়, তবে কেন? কেন? হাজার হাজার মুসুল্লিকে (হাজীগন) পানি নিতে দেওয়া হয়? আমার অপরাধ কোথায়? আমার খাটো পানজাবী ও লুঙ্গি পড়া বাঙ্গালী হজযাত্রী ছিলাম? ঐ নিষেধকারী পরিচ্ছন্নকারী কর্মী কি চির বৈরী পাকিস্তানের নাগরিক ছিল? আমি মহান আল্লাহর দরবারে বিচার প্রার্থী।
৫নং বিল্ডিংএর ৫ তলায় এক রুমে আমরা ৫জন হজযাত্রী ছিলাম। রুমটা একটু ছোট ছিল, তবুও আমাদের রুমে সৌদির মোয়াল্লেমের হুকুমে এক হজযাত্রীকে (তিনি আমাদের দলের হজযাত্রী ছিলেন না) জোর করে ঢুকে দেন। আমাদের বাংলাদেশের গাইডকে এই বিষয়ে বলা হলো, কিন্তু তিনি কিছুই করতে পারলেন না। সৌদি মোল্লেমের হুকুমই একমাত্র হুকুম। তাতে আমাদের রুমের মধ্যে চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হলো। তাঁর বেড হলো যে পার্শ্বে লাইট, ফ্যান ও এয়ারকুলারে সুইচ। ওনার সর্দ্দি ও কাশি ছিল, উনি আবার কোন ঔষধ খান না। উনি প্রতি রাত্রিতে ফ্যান ও এয়ারকুলারের সুইচ বন্দ করে রাখেন। ফলে আমরা গরমের জন্য ঘুম পারতে পারি না। উনার ছেলে ও ভাতিজা সৌদিতে চাকুরি করতো,তারা প্রতিদিন উনার জন্য বিভিন্ন প্রকার খাবার এনে দিত। সুইচ বন্দ করার ব্যাপারে তাদেক ও আমাদের দলের গাইডকে বলেও এটার সুষ্ট ব্যবস্থা করতে পারেন নাই বা তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন নাই। এসবের ব্যাপারে রুমের মধ্যে একমাত্র আমিই প্রতিবাদ করতাম। শেষের দিকে বাধ্য হয়ে আমি আমার সর্দ্দি, কশির ঔষধ তাঁকে দিয়ে সুস্থ্য করি, আরোগ্য করার একমাত্র মালিক আল্লাহ ॥ উনি একদিন রাস্তায় যে টেক্সিতে খেলনা বিক্রয় করে, তার নিকট থেকে ভিড়ের মধ্যে রিয়েল না দিয়ে খেলনাটি নিয়ে আসেন, এটা উনি আমাদেক নিজে বলেছেন। আমরা বলি চুরি করা পাপ, হজের সময় হাজী হয়ে না বলে কোন জিনিষ লওয়া মহা পাপ, আপনি দোকানদারকে বলে অর্থটা তাকে ফেরৎ দেন। উনি নিজে আমাদেক বলেছেন, উনি কয়েক বৎসর আগে বদ্ধ পাগল ছিলেন। তাঁর মধ্যে এখনও মাথায় ছিট বর্তমান, তিনি কেমন করে পাসর্পোট ও ভিসা পান? ইনি সেই ব্যাক্তি, যিনি আমাকে ঢাকার হজ ক্যাম্পে ২রাত্রিতে ঘুমাতে দেন নাই।
হজ্জব্রত পালন করতে যেয়ে যেমন কষ্ট পেয়েছি, তেমনি শান্তিও পেয়েছি। আমার যে মুরুব্বি ৮বার হজ্জ করতেছেন, তিনার ছেলের এক বন্ধুর লোক পবিত্র মক্কায় চাকুরি করেন। মুরুব্বির ছেলে তাঁকে ফোনে আমাদের খোঁজ খবর নিতে বলেন। একদিন উনি এলেন আমাদের খোঁজ খবর নিতে। উনি এসে বললেন, আপনারা আগামি কাল দুপুরের খাবার আনবেন না, আমি আপনাদের দুপুরের খাবার আনবো। উনি তাঁর মেয়েকে সংগে নিয়ে আমাদের জন্য প্রচুর খাবার নিয়ে আসেন এবং নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করে তৃপ্তি সহকারে খাওয়ান। তিনি বলেন, আপনারা আল্লাহ্র মেহমান, আপনাদেক মেহমানদারী করা আমার সৌভাগ্য। তাঁর ও পরিবারের সদস্যগনের সর্বপ্রকার মঙ্গল কামনা করে আল্লাহর নিকট দোয়া করি। হজ্জব্রত পালন করতে এসে আমি আল্লাহ্র অনেক কুদরত ও রহমত দেখেছি। আজ আমি একটা আল্লাহ্র কুদরত বর্ননা করতেছিÑ আমরা দলসহ পবিত্র কাবাঘর তোওয়াব
৬
ও সাঈ করার পর সংগের কয়েকজন বলল আমরা প্রশ্রাব করবো। আবু জেহেলের বাড়ীতে (লেট্রিন) প্রশ্রাব করার জন্য সকলেই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলাম। কয়েকজন আবার সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে লেট্রিনে গেল। আমি ও মুরুব্বি উপরে থেকে পবিত্র কাবার আসপাশের দৃশ্য দেখতে থাকলাম। সোবহানাল্লাহ্ সামনের দৃশ্যটি আমি কয়েক মাস আগে বাড়ীতে ঘুমের মধ্যে স¦প্নে দেখেছি। এ কথাটা আমার মুরুব্বিকে বললাম, তিনি বললেন স্বপ্নটি খবুই ভাল, যা মহান আল্লাহ্ পাক আপনাকে এখনে পবিত্র হজ্জে এনেছেণ।
পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থানকালে নগরীর আশ পাশের কয়েকটা পবিত্র জায়গা দেখার জন্য আমরা কয়েকজন একটা কার ভাড়া করলাম,যাওয়া-আসার জন্য জনপ্রতি ১০ রিয়াল। গারে হেরাÑ মক্কার সর্বাধিক উঁচু পাহাড়ের একটি নির্জন স্থান। এখানে নবী করিম (স:) ধ্যানমগ্ন থাকতেন এখানেই সর্বপ্রথম ওহি নাজিল হয়। গারে সাওর Ñ মসজিদুল হারামের পশ্চিমে হিজরতের সময় এই প্রকান্ড সুউচ্চ পাহাড়ে রাসূলুল্লাহ (স:) ও আবু বক্কর(রা:)সহ তিন দিন অবস্থান করেছিলেন। মিনা Ñমক্কা মুয়াযযমা থেকে তিন মাইল পূর্বে অবস্থিত একটি মাঠের নাম। যেখানে কোরবানী এবং কংকর নিক্ষেপ করা হয়। মিনা হরমের অন্তর্ভুক্ত। মুযদালিফা Ñ মিনা ও আরাফাতের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত একটি ময়দান। এ ময়দান মিনা থেকে তিন মাইল পূর্বদিকে অবস্থিত। আরাফাত Ñ আরাফাতের ময়দানে জাবাল-ই-রহমত অবস্থিত। এ পাহাড়ে সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ:)এর দোয়া কবুল হয়। এখানে তিনি বিবি হাওয়া (আ) এর সাক্ষাৎ পান। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ট ও সর্ব শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (স) বিদায় হজের খুতবাও এখান থেকেই দিয়েছিলেন। এইসব পবিত্র স্থান দেখানোর জন্য ড্রাইভারের সংগে চুক্তি হয়।
পবিত্র নগরী মদিনাতে মহাবনী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (স:) এঁর রওয়াজা মুবারক জিয়ারত ঃ পবিত্র নগরী মক্কায় বেশ কিছুদিন থাকার পর সৌদি মোয়াল্লেম আমাদেক বাসে করে পবিত্র নগরী মদিনাতে নিয়ে আসেন। দয়ার মহানবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (স) এঁর রওয়াজা মুবারক জিয়ারত ও মদিনা মনোয়ারায় ৫দিনে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয়। অর্থাৎ ৪০,০০০ ওয়াক্তের নামাজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। মসজিদের নববিতে বিশেষ বিশেষ জায়গায় নামাজ পড়া সর্বত্তোম মর্যাদা,কিন্তু সেখানে খুবই ভীরের জন্য নামাজ পড়া কঠিন হয়। সব সময় মুরুব্বিকে অনুসরন করি। দয়ার মহা নবীর রওয়াজা মুবারক জিয়ারত, রিয়াযুল জান্নাত ও আসহাবের ছুফ্ফাতে নামাজ পড়া মনের একান্ত কামনা ও বাসনা, খুব ভীরের জন্য জিয়ারত ও নামাজ আদায় করতে পারতেছি না। আমার এক মাত্র সম্বল দুচোখের পানি,রহমতের মালিক আল্লাহ্ ও তাঁর মহা দয়ালু নবীর নিকট হৃদয় হতে দুচোখ পানি ফেলে আকুল আবেদন নিবেদন করতে লাগলাম, আমার বাবা-মা রসুলের নামে আমার নাম রেখেছেন মোহাম্মদ। আমি তো আল্লাহর ও মহানবীর পথে চলি নাই, আমার মত মহা পাপী দুনিয়াতে কেহ নাই। আল্লাহ্ তুমি আমাকে রহমত আর দয়ার মহা নবী আমাকে দয়া না করলে আমি চ’ড়ান্ত ক্ষতি গ্রস্ত হবো। আমাকে শুধু মাত্র একবার সুযোগ করে দাও। ফলে আমার হৃদয় হতে নিঙ্ড়ানো দুচোখের পানি ব্যাথা গেল না। দয়ার মহা নবী রওয়াজা মুবারক জিয়ারত, রিয়াযুল জান্নাতে ও আসহাবের ছুফ্ফাতে দু’রাকাত নামাজ ফাঁকা অবস্থায় অর্থাৎ প্রথমে একজন অচেনা বিদেশী হাজী, ২য়জন আমার মুরুব্বি ও ৩য়জন
৭
আমি অধম বান্দা জিয়ারত ও নামাজ পড়তে আল্লাহ্ রহমতে ও মহানবী দয়া করে সুযোগ করে দিয়েছেন। মুরুব্বি বার বার বেশী করে নামাজ ও জিয়ারত করার জন্য আমাকে বলতেছিলেন। আমি তাঁকে বললাম, আমি আল্লাহ্ ও তাঁর দয়ার নবীর নিকট মাত্র একবার সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি, আমি তা অমান্য করবো না। এই ছিল আমার প্রতি আল্লাহ্র রহমত ও মহানবীর দয়া।
জান্নাতুল বাকী জিয়ারত:
একদিন সময়- সুযোগ বুঝে জিয়ারতের নিয়মনীতি মেনে জান্নাতুল বাকী জিয়ারত করলাম। জান্নাতুল বাকী হল পবিত্র মদিনা শরীফের কবরস্থান। মসজিদে নববীর পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে রসুলুল্লাহর (স:) বংশধর, পবিার পরিজন, বহু সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, শহীদান, ইমামগন, এবং বহুওলী দরবেশ শায়িত রয়েছেন।
আমি মুরুব্বির জন্য বাংগালী হোটেল হতে খাবার এনে দিতাম। আমাদের রুমে আমার পার্শ্বের জেলার দুজন হাজী সাহেব ছিলেন। অন্য রুমে তাঁদের স্ত্রীরা ছিল, তাঁরা রান্না করে খেতেন। পবিত্র মদিনা নগরীতে মুরুব্বির এক চাচাতো ভাই চাকুরী করতেন। মুরুব্বি তাঁর ভাইকে পবিত্র মদিনাতে পৌছার খবর জানানো হলে তিনি আমাদের সংগে দেখা করলো বিভিন্ন প্রকার খাবার নিয়ে। মুরুব্বির সংগে অনেকক্ষন পারিবারিক ও সৌদির সর্ম্পকে আলোচনা করে বিদায় নিলেন। বিদায়কালে বলে গেলেন, আগামি কাল দুপুরের খাবার নিয়ে আসবেন না। পরের দিন জহরের নামাজ পর তিনি আমাদের দুজনের জন্য বড় দুইটি প্যাকেট খাবার নিয়ে হাজির। এক প্যাকেটের খাবার মুরুব্বি ও আমি দুজনে শেষ করা কঠিন। এক প্যকেট খাবার বাঁকি রইল, রাতে খাবার জন্য তা রাখলে নষ্ট হবে। তাই প্যাকেটটি আমার পার্স্বের জেলার দুজন হাজীকে দেওয়া হলো, তাঁরা হাসি মুখে তা গ্রহন করলেন এবং সংগে সংগে তা তাঁরা যে রুমে তাঁদের স্ত্রীরা থাকে সে রুমে নিয়ে গেলেন। কিছুক্ষন পরে রুমে ফিরে আসলেন এবং বললেন প্যাকেটে অনেক আইটেমের সুস্বাদু খাবার ছিল। আমরা পরে কৌশলে জানতে পেরেছি যে, এক প্যাকেটের খাবারের দাম বাংলাদেশী টাকায় ৪০০/=। মুরুব্বির ভাইকে অত বেশী বেশী করে খাবার আনতে মানা করা সত্বেও প্রায়দিন বিভিন্ন আইটেমের খাবার আনতেন। আমরা দুজনে অত খাবার খেতে পারতাম না। তাই বেশী খাবার গুলি রুমের হাজীদ্বয়কে দিতাম তাঁরা হাসি মুখে তা গ্রহন করতেন এবং সংগে সংগে তা তাঁরা যে রুমে তাঁদের স্ত্রীরা থাকেন সে রুমে নিয়ে যেতেন।। উক্ত হাজী সাহেবরা নিজেরাও বিভিন্ন খাবার নিয়ে এসে রুমে খেতেন এবং স্ত্রীদের রুম থেকে খাবার খেয়ে এসে আমাদের উপস্থিতে সুস্বাদু খাবারের গল্প করতেন। যে কয়েক দিন পবিত্র মদিনা নগরীতে ছিলাম, উক্ত হাজীদ্বয় শুধু আমাদের খাবার নিয়েছেন। কিন্তু সৌজন্যের জন্য একবারও তাঁরা কোন খাবার আমাদেক অফার করেন নাই। এটাই কি আরাফাতের ভাইয়ের মন বা হৃদয়?
অথচ পবিত্র মদিনা নগরীতে বাংগালী মুসলিম ভাইয়ের মেহমানদারীর আন্তরিকতা দেখেছি, যা জীবনে ভুলবার নয়। মুরুব্বির এক ছেলের বন্ধুকে মোবাইল করায় একদিন তিনি তাঁর কার নিয়ে আমাদের
৮
সংগে দেখা করলেন, তিনি পবিত্র মদিনা নগরীতে ভালো ব্যবসা করেন। তিনি বললেন যে, আগামি কাল জহুরের নামাজ বাদ আমার বাসায় দুই জনের দাওয়াত। আপনারা তৈরী থাকবেন, আমি কার নিয়ে এসে আমার বাসায় নিয়ে যাব। পরের দিন তিনি যথা সময়ে কার নিয়ে এসে আমাদেক তাঁর বাসায় নিয়ে আসলেন। তাঁর বাসায় বসার ঘরে তাঁর শ্বশর সাহেব(যিনি হজ্জ করতে এসেছেন), তাঁর ছোট ছোট ২ ছেলে ১ মেয়েকে দেখলাম। তাঁর এক আত্বীয়ও আছেন। মুরুব্বির ছেলের বন্ধু আমাদেক বললেন, আমি আমার কয়েক জন বন্ধুদেকেও দাওয়াত করেছি। আমি তাদেক নিতে যাচ্ছি, আপনারা খেতে বসুন। ঘরের এক পার্শ্বে দস্তরখানা বিছানো রয়েছে, তার উপর সারি ভাবে বিভিন্ন রান্না করা খাদ্য রয়েছে। আমরা বেসিনে হাত মুখ ধুয়ে দস্তরখানার উপর বসলাম, তাঁর আত্বীয়টি আন্তরিকতার সহিত ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন আইটেমের খাবার পরিবেশন করলেন। আমাদের খাবার শেষ হওয়া মাত্র তিনি তাঁর বন্ধুদেক নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন। সংগে সংগে তাঁরা হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসলেন। খাবার পর তিনি মুরুব্বি ও আমাকে তাঁর কারে করে আমাদের বিল্ডিং পৌছে দিলেন।
আমরা কয়েকজন একমত হয়ে পবিত্র মদিণা শরীফের নি¤œ স্থান সমুহ জিয়ারত করার জন্য প্রতিজন ১০ রেয়াল করে দেওয়ার জন্য এক টেক্স্রি ডাইভারের সংগে চুক্তি হল। অসমাপ্ত
হাজী মোহাম্মদ আলী আকন্দ
গ্রাম ঃ পিয়ারা, পো ঃ ছাতিনালী, ৮নং আওলাইউ:পি:
উপ-জেলা: পাঁচবিবি, জেলা ঃ জয়পুরহাট।
মোবাইল নং ০১৭১৮-৪৮৪১১১, তারিখ ঃ ২৭Ñ৩Ñ১৭ইং
1 minute and 51 second after:
[img][/img]