Quantcast
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

দৃপ্ত শপথে পালিত হল ৪৭তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

৪৭তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে  জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার দৃপ্ত শপথে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। দেশজুড়ে নানা আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারও উদযাপিত হয়েছে জোরেশোরে। একই সঙ্গে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও রায় কার্যকরের দাবিও উঠে এসেছে। এদিন ভোরের আলো ফোটার মুহুর্তে সেই বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সমবেত হয়েছিলেন লাখো জনতা। দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পর জনস্রোত ছিল জাতীয় স্মৃতিসৌধ অভিমুখে। পাকিস্তানি ঘাতকদের প্রেতাত্মা ধর্মান্ধ কাপুরুষ জঙ্গিদের আস্ফালন বাঙালির স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন ম্লান করতে পারেনি এতটুকুও। বরং শত সহস্র কন্ঠে জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতাবিরোধী স্লোগানে মুখরিত হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্বর। পরম শ্রদ্ধায় স্মৃতির বেদি ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। এবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসা সর্বস্তরের জনতার আরও দাবি ছিল মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যার আন্তর্জতিক স্বীকৃতির। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন জাতির বেদনা ও গৌরবের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের সামনে আরও মূর্ত করে তুলবে। দিনটি ছিল সরকারি ছুটি। ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবসের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ সুসজ্জিত করা হয় জাতীয় পতাকায়। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এবং বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশী মিশনেও স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। হাসপাতাল, সরকারি শিশুসদন ও এতিমখানা এবং কারাগারে বন্দিদের দেওয়া হয় উন্নত খাবার। সন্ধায় গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়।  ভোরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির পক্ষ থেকে জাতির সূর্যসন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল এ সময় রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়, বিউগলে বাজে করুণ সুর। স্মৃতিসৌধের বেদির সামনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এরপর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সকালে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ চত্বর ত্যাগ করার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করা হলে জনতার ঢল নামে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাসংসদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম এবং ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের উর্ধ্বতনরা শ্রদ্ধা জানান। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ বিভিন্ন বয়সী ও শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষও দলে দলে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাদের কন্ঠে ছিল উদ্দীপনামূলক স্লোগান, সমবেত কন্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানের সুরও শোনা যায়। সব মিলিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্বর পরিণত হয় বাঙালির মিলন মেলায়।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>