জ্ঞান অর্জনের জন্য যেমন বইয়ের প্রয়োজন তেমনি ভ্রমনের মাধ্যমেও জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। আর সেটা যদি হয় কোন নতুন দর্শনীয় স্থান তাহলে তো কথাই নেই। আজ আমি সে রকম একটা জায়গার নাম বলতে চাই আর সে জায়গাটা হল তাহল বানিয়াচং উপজেলার প্রাচীন বিথঙ্গল আখড়া। নতুন রূপে ঐতিহাসিক নিদর্শন বিথঙ্গল আখড়া এখন পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। আখড়ার প্রাচীন জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কার করায় এর জৌলুস বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আখড়ায় আসছেন। বর্ষাকালে জেলা সদর হতে ইঞ্জিন নৌকাযোগে দেড় ঘণ্টায় বিথঙ্গল পৌঁছার সহজ ব্যবস্থা রয়েছে। তবে শুকনো মৌসুমে আখড়ায় যাওয়া অনেকটা কঠিন। আখড়ার বিশাল ইমারতগুলোর নির্মাণশৈলী সহজেই দর্শকদেরকে আকৃষ্ট করে। বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের জন্য এ অঞ্চলের অন্যতম তীর্থ ক্ষেত্র এই আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা রামকৃষ্ণ গোস্বামী হবিগঞ্জের রিচি পরগণার অধিবাসী ছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি উপমহাদেশের বিভিন্ন তীর্থস্থান সফর শেষে বিথঙ্গল এসে এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলা ১০৫৯ সালে রামকৃষ্ণ গোস্বামী মারা যান। আখড়ায় রামকৃষ্ণ গোস্বামীর সমাধিস্থলের উপর একটি সুদৃশ্য মঠ রয়েছে। মঠের সামনে একটি নাট মন্দির, পূর্বপাশে একটি ভাণ্ডার ঘর এবং দক্ষিণে একটি ভোগ মন্দির রয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পুরোনো ইমারত আছে। আখড়ায় দর্শনীয় বস্তুর মধ্যে রয়েছে ২৫ মণ ওজনের শ্বেতপাথরের চৌকি, পিতলের সিংহাসন, রথ, রৌপ্যনির্মিত পাখি, মুকুট ইত্যাদি। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এলাকাবাসী প্রতিদিন রোগবালাই হতে পরিত্রাণের জন্য আখড়ায় এসে মোহন্তের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়ে যান। ভ্রমণ পিপাসু যারা আছেন তারা শহরের কোলাহলময় পরিবেশ থেকে একটু রেহাই পেতে ভ্রমণ করে আসতে পারেন ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্বলিত এই জায়গাটিতে। এতে একদিকে যেমন আপনার চিত্ত বিনোদন হবে তেমনি আপনার জ্ঞান ভাণ্ডার কিছুটা হলেও সমৃদ্ধ হবে।
↧