বাংলাদেশে মানব-ইতিহাসের নিকৃষ্ট, নির্লজ্জ ও ঘৃণ্যপন্থায় ইয়াবাপাচার (ইয়াবাপাচারের ভিডিওলিংকসহ)
সাইয়িদ রফিকুল হক
বিশ্ব এগিয়ে চলেছে। দিনে-দিনে আরও এগিয়ে যাচ্ছে উন্নতবিশ্ব। আর সর্বাগ্রে এগিয়ে চলছে তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিযোগিতা। আর তাই, গোটা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে শুরু করে এশিয়ার অনেক দেশই এখন মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছে। আর আমাদের দেশের কিছুসংখ্যক অমানুষ আরও বেশি পশু আরও বড় শূয়র হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে খুঁজলে এখন সামান্য মনুষ্যত্বও হয়তো আর পাওয়া যাবে না। এই শূয়রগুলো দেশের যুবসমাজকে (যুবমহিলাসমাজসহ) বিকলাঙ্গ করা থেকে শুরু করে তাদের একেবারে মেরুদণ্ডহীন করার ঘৃণ্যপ্রচেষ্টায় তাদের শয়তানীকর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। এই শয়তানীঅপকর্মের একটি হলো চোরাকারবারি। আর এই তালিকায় রয়েছে যৌনউত্তেজক ভায়েগ্রাবংশের অবৈধসন্তান ‘ইয়াবা’।
দেশের তথাকথিত-শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা এখন নিজেদের ইয়াবাপাচারের মতো জঘন্য অপকর্মে শামিল করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করছে না। আর এক্ষেত্রে সর্বদিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে একশ্রেণীর সুন্দরী। এরা এখন নিজেদের যৌনাঙ্গের মধ্যে ভরে ইয়াবাপাচারের মতো জঘন্য অপকর্মে লিপ্ত। হ্যাঁ, আমাদের দেশের একশ্রেণীর সুন্দরী ও উঠতি তরুণী-যুবতী এখন লাভের আশায় নিজেদের সর্বনাশের পথে ধাবিত করে যৌনাঙ্গের মধ্যে ভরে ইয়াবাপাচারের মতো নির্লজ্জ ও জঘন্য অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। অতিসম্প্রতি পুলিশের হাতে এই চক্র ধরা পড়ায় দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। আগে শোনা যেতো পেঁপে, তরমুজ, নারিকেল, মাছ, সুপারী, গাড়ির টায়ার ও যন্ত্রাংশ, এলপি গ্যাস-সিলিন্ডার, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স-সামগ্রী, বইপত্র, ফলমূল, শাকসবজি শিশুখেলনা, ধর্মীয় উপকরণ, শিক্ষাসামগ্রী, ক্রীড়াসামগ্রী ইত্যাদির মধ্যে করে ইয়াবাপাচার করতো। আর এখন এসব রুট পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তা পরিবর্তিত হয়ে সরাসরি নারীর যৌনাঙ্গ পর্যন্ত এসে ঠেকেছে! এদের আদিমশূয়র ছাড়া আর কী বলা যায়? এদেরই আগ্রাসনে আজ দেশের তরুণী-যুবতীসমাজ নিজেদের লজ্জাশরম সামান্য টাকার কাছে বিক্রি করে দেশ, জাতি ও মানবতা ধ্বংসের অপকর্মে নিয়োজিত।
ইতঃপূর্বে আমরা শুনেছি, দেখেছি, পুরুষ-চোরাকারবারিরা তাদের পায়ুপথে (মলদ্বারে) কিংবা পেটের ভিতরে ঢুকিয়ে সোনা থেকে শুরু করে নানারকম মাদকদ্রব্য পাচার করেছে, আর তা এখনও করছে। অবশ্য এই অপকর্মটি নারীপাচারকারীরাও একসময় করেছে। এটিও একটি অতীব ঘৃণ্যপন্থা। আর এইসকল ঘৃণ্যপন্থাকে ছাড়িয়ে বর্তমানে দেশের একশ্রেণীর নারী-মাদকপাচারকারী সরাসরি তাদের যৌনাঙ্গের মধ্যে করে ইয়াবাপাচার শুরু করেছে। এরা একটি কনডমের ভিতরে কমপক্ষে চারশ’-পাঁচশ’ (আর সর্বোচ্চ ৭০০-৮০০) পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে তারপর তা নিজেদের যৌনাঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছিলো। অতিসম্প্রতি এদের কয়েকটি চালান ধরা পড়ায় দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর টনক নড়েছে।
যারা নিজদেহের যৌনাঙ্গের মধ্যে ইয়াবা-বহন করছে তারা বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আর তাদের বেশিরভাগই তরুণী-যুবতী আর সুন্দরী। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে তাদের এই অপকর্ম করার যথেষ্ট সাহস রয়েছে। আর মাদকপাচারকারীচক্র বা মাদকসম্রাটরা সেভাবেই এদের গড়ে তুলেছে। এরা এখন ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
নারীদেহের-যৌনাঙ্গের মধ্যে ইয়াবাপাচার-বিষয়টি আমাদের দেশে সম্প্রতি ধরা পড়ে। আর এতে নড়েচড়ে বসে দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এই বিষয়ে ইউটিউবে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন এখানে সংযুক্ত করা হলো।
নারীর যৌনাঙ্গের মধ্যে ইয়াবাপাচারের ভিডিওলিংকটি এখানে:
দেশের বইবিমুখ-যুবসমাজ এমনিতে আজ রসাতলে যেতে বসেছে। তার উপরে নতুন করে আঘাত হেনেছে জীবনীশক্তিধ্বংসকারী এই ইয়াবা। এর ছোবলে দেশের যুবসমাজ ধীরে-ধীরে অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যেতে বসেছে। আমরা দেখতে পাই আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলারক্ষাবাহিনী অনেক ইয়াবা-ব্যবসায়ীকে মাঝে-মাঝে গ্রেফতার করছে। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এক্ষেত্রে সবসময় সম্পূর্ণ ধরা-ছোঁওয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালীচক্র—গডফাদারগোষ্ঠী। এবার এদের গ্রেফতার করতে হবে।
দেশের প্রাইভেট-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইয়াবাপাচারের সবচেয়ে নিরাপদ রুট। এখানকার একশ্রেণীর সুন্দরী এখন সরাসরি ইয়াবাসেবনে ও পাচারের মতো জঘন্য অপকর্মে নিয়োজিত। জাতির এই ক্রান্তিকালে দেশবিরোধী একটি চিহ্নিত-শয়তানচক্র জঙ্গিবাদের সঙ্গে দেশের যুবশক্তিবিধ্বংসী-মাদকপাচারের মতো আরও একটি ভয়াবহ অপকাণ্ডকে জোরালো করতে চাইছে। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র কি এব্যাপারে এখনও হাত-পা-গুটিয়ে বসে থাকবে? আর দেশের আইনশৃঙ্খলারক্ষাবাহিনী মাঝে-মাঝে চুনোপুঁটি মাদকসেবী কিংবা মাদকপাচারকারীকে গ্রেফতার করে নিয়মিত নাটক-প্রহসন মঞ্চস্থ করতেই থাকবে?
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৩/০৩/২০১৭