দেশে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক বিস্তার ও হামলার পর হামলা জটিল ও বহুমুখী সঙ্কটে পরিণত হয়েছে। জঙ্গিদের বহুমুখী হামলায় দেশবাসী চরম উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। পার্থিব-অপার্থিব কল্যাণের অলীক আশায় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। তারা তাদের হীনস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কিছু বিভ্রান্ত তরুণ মুসলমানকে এহেন কাজে ব্যবহার করছে। বেশ কিছু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মেধাবী উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এ পর্যন্ত এতসব জঙ্গি শনাক্ত হলেও একজনও কোনো মাদরাসার ছাত্র নয়। অল্পসংখ্যক মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থী বুঝে হোক না বুঝে হোক তাদের সেই ফাঁদে পা দিয়েছে। জঙ্গি বা সন্ত্রাসী নামে কোনো খবর প্রকাশিত হলেই সমাজের একশ্রেণীর মানুষ ধরে নেয় এটা মুসলিমদের কাণ্ড। শুধু তাই নয়, যারা সুন্নতি লেবাস পরিধান করে, দাড়ি রাখে, টুপি পরে এবং আল্লাহু আকবারের তাকবির উচ্চারণ করে তারাই সাধারণত এই কাজের সাথে জড়িত ধারণা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে লেবাসধারীরা সত্যিকার মুসলমান নয়, তারা দাড়ি-টুপি পরে আলেম সেজে ধরেছে মুসলমানের বেশ। আল্লাহু আকবারের তাকবির স্লোগান এবং ইসলামি বইপুস্তক, সুন্নতি লেবাস পরিধান, দাড়ি-টুপিধারী ব্যক্তিদের ঢালাওভাবে জঙ্গি বানানো কোনো সচেতন-বুদ্ধিমান এবং প্রকৃত মুসলমানেরও কাজ নয়! এ ধরনের মানসিকতা ও ধারণা থেকে দূরে থাকা জরুরি। বিশ্বের সব বরেণ্য আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, ইসলামি চিন্তাবিদেরা এবং মূলধারার সব ইসলামি সংগঠন ও সংস্থা এ বিষয়ে একমত হয়েছে যে, এ ধরনের ব্যক্তিরা বিভ্রান্ত, বিপথগামী। এরা ইসলামের শত্রুদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। ইসলামের শত্রুরা এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। ওরা এদেরকে ইসলামের ভাবমর্যাদা ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করছে। এসব ব্যক্তি কোনোভাবেই ইসলামের জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। তারা ইসলামকে বিশ্ববাসীর সামনে বিকৃত ও কুৎসিতভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়। গুলশান ও শোলাকিয়ায় ঘটে যাওয়া অতর্কিত সন্ত্রাসী-জঙ্গি হামলার ঘটনা দেশের সচেতন কোনো নাগরিক সমর্থন করতে পারেনি। সম্প্রতি সিলেটে ঘটে যাওয়া কাহিনীটিও মেনে নিতে পারছেন না দেশপ্রেমিক জনগণ। সরকার থেকে নিয়ে আলেম-ওলামা, ইসলামি দলগুলো এবং সাধারণ জনগণও এর প্রতিবাদ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইটে জোরালো প্রতিবাদ করতে দেখা যায় দেশের নাগরিকদের। কোনো ব্যক্তি, দল বা দেশের পে একক চেষ্টায় জঙ্গি নির্মূল খুব দুরূহ ব্যাপার। বাংলাদেশসহ সব দেশকে সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাসী-জঙ্গি নির্মূলে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে বাংলাদেশ জঙ্গিমুক্ত হোক এ প্রত্যাশা সকলের।
↧