বর্তমান বাংলাদেশ সরকার যেসব সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছেন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাল্যবিবাহ। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব না। এজন্য দরকার এ বিষয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, স্থানীয় সরকারের সহযোগিতা এবং মেয়েদের শিক্ষাসহ দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ। ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে বিয়ের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনাসহ বাল্যবিবাহের কারণ চিহ্নিত করতে সরকার কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করছেন। বাল্যবিবাহ ঠেকাতে এরই মধ্যে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে শুরু করেছে দেশের মেয়েরা। এজন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশি মেয়ে শারমিন আক্তারের সাহসী ভূমিকা প্রশংসিতও হয়েছে। শারমিনের মতো জেলায় জেলায় অন্য মেয়েরাও নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধে সাহসী হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখা গত তিন বছরে প্রায় দুই হাজার বাল্যবিবাহ বন্ধ করছে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার স্কুলের মেয়েরা নিয়মিত বৈঠক করে স্বাস্থ্যগত সমস্যার পাশাপাশি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের বিষয়ে গ্রামে গ্রামে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্ল্যান বাংলাদেশের ‘ওয়েডিং বাস্টারস’ নামক দলটি এখন কাজ করছে। আর সে দলে আছে কিশোর-কিশোরীরাও। স্বর্ণকিশোরীর পক্ষ থেকে বাল্যবিবাহ বন্ধে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। যার ২৪ ঘণ্টাব্যাপী হটলাইনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এই ক্লাব দেশের দুই কোটি কিশোরীর কাছে সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে বাংলাদেশের ৭২টি এলাকা যেখানে বাল্যবিবাহ বেশি হয়। সেখানকার নয় হাজার মেয়ের ওপর এই জরিপ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। যে মেয়েরা শিক্ষা ও দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদের ৩১ শতাংশই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে।উপজেলা, থানা পর্যায়ে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি যারা বাল্যবিবাহ বন্ধ করবে তাদের বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
↧