সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন পরিব্রাজক ও পর্যটকদের এ দেশে আগমন তারই সাক্ষ্য বহন করে। সপ্তম শতাব্দীতে প্রখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডের মধ্যে এসে উচ্ছ্বসিত হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন- “A sleeping beauty emerging from mists and water.” তিনি এই জনপদের সুপ্ত সৌন্দর্যটিকে কুয়াশা এবং পানির অন্তরাল থেকে ক্রমশ উন্মোচিত হতে দেখেছিলেন। প্রাকৃতিক লীলাভূমির দেশ-আমাদের এই বাংলাদেশ। এর অপরূপ সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। মনে ছড়িয়ে দেয় মনোহরী রং। কক্সবাজার বাংলাদেশ তথা পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজারের কলাতলী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের পাড় দিয়ে চলে যাওয়া ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের সর্ববৃহৎ মেরিন ড্রাইভ সত্যিই অপূর্ব, মনোরম ও মনোমুগ্ধকর। একদিকে উত্তাল বাধাহীন সাগরের আছড়ে পড়া ঢেউ-এর মন-মাতানো লীলাখেলা অন্যদিকে সুউচ্চ পাহাড়শ্রেণি মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া মেরিন ড্রাইভ প্রকৃতি প্রেমিককে সৌন্দর্যের সাগরে করে অবগাহন আর ভাসিয়ে নিয়ে যায় কোন সুদূরে কেউ তা জানে না। এটি ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। শুধু অনুভবে তৃপ্তি মেলে। তাই মনে রাখতে হবে—এই মেরিন ড্রাইভ আর এই সমুদ্র সৈকত কেবল আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশেই শেষ নয়। আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, গ্লোবাল ভাবমূর্তির উন্নয়ন; জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার স্থানান্তর; অবাধ বাণিজ্যিক সুযোগ সৃষ্টি ইত্যাদিও সম্ভব হবে একদিন। সেই দিন আর বেশি দূরে নয়—যেদিন বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর বুকে এক স্বর্গভূমি।
↧