বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং অন্যান্য অপরাধ ঠেকাতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ অভিনব এক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অস্ত্রটিকে তারা বলছে চিলি বোমা। এই বোমার ভেতরে বিস্ফোরকের বদলে থাকবে ভুট জোলাকিয়া নামে বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচের গুড়া। এই প্রজাতির মরিচ উৎপাদিত হয় আসাম ও নাগাল্যান্ড রাজ্যে।
বিএসএফ কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালনা আর তাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমাতে তারা চোরাচালানকারী বা অনুপ্রবেশকারীদের ওপরে লঙ্কার গুঁড়ো ভর্তি এই বোমা ছুড়বে। বাংলাদেশ সীমান্তর বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই এই বোমার পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়েছে।
বিএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন পৃথিবীর সবথেকে ঝাল লঙ্কা – ভুট জোলাকিয়ার গুড়া মেশানো এই বোমায় চোখে পানি আসবে – যেমনটা হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটালে।
মরিচের গুড়া মেশানো এই বোমা প্রথম তৈরি করে ভারতের সামরিক অনুসন্ধান ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও ওই প্রণালী অনুযায়ী গোয়ালিয়রে বিএসএফের নিজস্ব কারখানাতে এখন এই লঙ্কা বোমা তৈরি হচ্ছে।
বিএসএফ বলছে, যদিও বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ সীমান্তে মারণাস্ত্রের ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছে, তবে পরিবর্তে যে ছররা গুলি ব্যবহৃত হচ্ছে- সেগুলিও খুব কাছ থেকে চালালে মৃত্যু হতে পারে। বিকল্প হিসাবে সীমান্তে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে করতে তাই লঙ্কা বোমার ব্যবহার শুরু করা হচ্ছে। সীমান্তে বিএসেএফের গুলিতে মৃত্যু নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদের মুখে বিএসএফ যতটা সম্ভব প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ছররা গুলিসহ স্টান গ্রেনেড বা অজ্ঞান করে দেওয়ার বোমার মত অস্ত্র ব্যবহার করছে, কিন্তু তারপরেও বিএসএফের গুলিতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের দেয়া এক হিসাবে, ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২৬০ জনেরও বেশি বাংলাদেশী মারা গেছে। গত এক বছরে মারা গেছে অন্তত ৩৪ জন।
বিএসএফ দাবি করে গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় কমছে। বাহিনীর কর্মকর্তারা আশা করছেন নতুন এই লঙ্কা বোমা ব্যবহারে সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা আরো কমানো সম্ভব হতে পারে। সূত্র : বিবিসি।