Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

হুদাই গ্যাজাইলাম (২৬/০১/২০১৩)

$
0
0

১. ভাই আরেকটা জিনিস আমার ভাল লাগে না, আমরা খুব বেশি নিজেদের ডিভাইড করতে পছন্দ করি। একটা উদাহরণ দেই, সুইডেনে আইসা প্রথমেই আমরা নিজেরা একটা গ্রুপ খুললাম, এরপরে আইসা ফেরদৌস ভাই সহ বাকি এক্স ক্যাডেট দের সাথে পরিচয় হওয়ার পরে খুললাম এক্স ক্যাডেটস ইন সুইডেন, এরপরে আইইউটিয়ান নিয়া খুললাম আরেকটা, এরপরে বাংলাদেশী স্টুডেন্টস ইন সুইডেন এ জয়েন করলাম, আর পরে আইইউটিয়ানস ইন ইউরোপ (অল আইইউটিয়ানস কিন্তু আছেই), এরপরে বাংলাদেশী কমিউনিটি ইন স্ক্যান্ডিনেভিয়া, এরপরে আরো একটায় বাংলাদেশী স্টুডেন্টস ইন সুইডেন, বাংলাদেশী স্টুডেন্টস ইনস স্টকহোম যেইটায় এইবছর আসা পোলাপান ঢুকছে।
এক বছরে এতগুলা গ্রুপ নিজেদের মধ্যে!!! এছাড়া নোয়াখালি ভার্সেস বরিশাল ভার্সেস চিটাগাং ভার্সেস উত্তরবঙ্গ ইত্যাদি ছাড়াও অড জব করে পেটে ভাতে বেঁচে থাকা বাঙালি ভার্সেস রেস্টুরেন্টের মালিক/ব্যবসায়ী/ভাল জব করা বাঙালির দ্বন্দ্বও আছে।
এক বাঙালির মধ্যে এত ভেদাভেদ হইলে কেমনে হইবো?

স্টকহোমের যেই এলাকায় থাকি, সেইটার নাম হইলো শিস্তা, ছোট্ট একটা মহল্লা, মিউনিসিপ্যালিটিও না। একলোকের সাথে পরিচয় হওয়ার পরে সে নিজের পরিচয় দিল শিস্তা ছাত্রদলের সভাপতি বইলা। জিগাইলাম, সুইডেন বিম্পি আম্লীগ আছে মানলাম, আইচ্ছা যান, সুইডেনের ভিত্রে স্টকহোম, উপসালা গোটেনবার্গের আলাদা আলাদা বিম্পি আম্লীগ আছে সেইটাও মানলাম, কিন্তু শিস্তার মত পিচ্চি একটা জায়গারও আবার আলাদা বিম্পি আম্লীগ, আবার ছাত্রদল-লীগ, যুবদল-লীগও আছে? শুইনা সে হাসল খালি আর কিছু কইলো না।

২. গত ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে লাস্ট কোর্সের লাস্ট প্রেজেন্টেশন দিয়ে বের হবার আগে কি মনে করে প্রফেসর বলল, ইউ নো হোয়াট, সামনে ক্রিসমাস নিউ ইয়ার এই সবের মধ্যে এত কষ্ট করে রিপোর্ট জমা দেয়ার দরকার নাই। এনজয় কর, জানুয়ারী তে জমা দিও, রিপোর্টের নতুন ডেডলাইন তোমাদের মেইল করে জানিয়ে দিব।
সেই থেকে অদ্যবধি পড়ালেখা চাঙ্গে। দিন রাতের ঠিক নাই, ঘুম থেকে উঠি সন্ধ্যা ছয়টা, আবার ঘুমাই রাত দুইটায় আবার সকাল দশটায় উঠি আবার দুপুরে আবার ঘুম, ঘুম ধরলে ঘুমাই, খিদা লাগলে খাই, সারাদিন বিছানায় শুইয়া সিরিয়াল আর মুভি। সুখ বেশিদিন আর নাই থিসিস শুরু করতে হবে এই ফেব্রুয়ারী থেকে।

৩. ইন্টারনেট ব্যাংকিং ঠিকমত বুঝতাম না প্রথমে, ভয় লাগতো, এটিএম থিকা ক্যাশ তুইলা খরচ করতাম, কার্ড দিয়া কিনতে ভয় লাগতো। ক্যাশ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়াও বিশাল পেইন। না, আমি লাইনে খাড়ায়া থাকনের পেইনের কথা কইবার লাগছি না। ট্যাকা জমা দিতে গেলে ব্যাংকে হাজারটা প্রশ্ন করবে এই টাকার সোর্স কি? কই থিকা পাইলেন? হাজারটা প্যারা। এক বন্ধুর কাছে কিছু টাকা পাইতাম, সে আমাকে ক্যাশটাকা ফেরত দিল, আমি ব্যাংকে জমা দিতে গিয়া বিশাল বিপদে পড়লাম, যতভাবেই বলি যে আমার বন্ধু দিছে, বলে সে পাইলো কেমনে? আমারে যাইতেও দিবো না আবার টাকাও জমা দিতে দিবো না, রীতিমত ইন্টারোগেশন সেল বইসা গেল ছোটখাট।
আবার একবার একব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুইলা আরেক ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে গেছি, বলে টাকার সোর্স কি? কই স্কলারশীপ। কাগজ দেখাও। মেজাজ খারাপ হয়া গেল, মায়রে বাপ, তোর কাগজ কি আমি পুন্দের চিপায় নিয়া নিয়া ঘুরি নাকি নাটকির পো? সেই দিন ব্যাংক থিকা ছাড়া পাইতে আমারে সুইডিশ ইন্সটিটিউটের অফিসে ফোন দিতে হইছিলো। তয় একটা লাভ হইছে, ব্যাংক ওয়ালারা আমার অ্যাকাউন্ট মার্ক কইরা রাখছে এইটা লেইখা যে এই পোলার সোর্স অফ ইনকাম বৈধ, এরে যাতে আর ট্যাকা জমা দেওনের সময় পেইন না দেওয়া হয়। পুরা ভিআইপি কাস্টমার!!!

৪. কয়েকদিন আগে একটা লেখা দেখলাম, লন্ডনের এক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীকে ফিচার করে লেখা, তার গুণগান করা, দেশের মুখ কিভাবে উজ্জ্বল করছেন, একজন বাংলাদেশী হয়ে বিদেশে এত টাকা কামাই করে ব্যবসা করতেছেন, কত লোকের কর্মসংস্থান কইরা দিতেছেন। আর আমরা এই খবর দেইখা খুশিতে বগল বাজাইতেছি।
এই ধরনের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের বাস্তব ঘটনা শুনেন আমার কাছ থিকা। এরা যারা বিদেশে বিশ-ত্রিশ বছর ধরে আছে, এদের বেশিরভাগই দাগী মৃত্যুদন্ড কিংবা any other দন্ডপ্রাপ্ত আসামী, রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছে (বাচ্চু রাজাকারের জন্য পুরো পৃথিবীটা এখন যেমন ওপেন হয়ে গেছে)। এদের ৯০% লোক অশিক্ষিত (লিখতে পড়তে পারাটাকে শিক্ষা বলছি না আমি), স্টুডেন্টদেরকে এরা কুকুরের মত খাটায়। বিশেষ করে যারা দেশ থেকে এটা ভেবে আসে যে বাইরে এসে পার্টটাইম জব করে নিজে চলবে, তাদেরতো আর কোন পথ নেই এদের আন্ডারে কাজ করা ছাড়া। একটা ঘটনা কই,
এক পিএইচডি স্টুডেন্ট নতুন আসছে, কিছুই চিনে না, ফান্ডিংও ঠিকমত ম্যানেজ করে আসে নাই, সম্ভবত আসার একমাস পরে প্রথম ফান্ডিং এর টাকা পাবে এরকম ব্যাপার। তিনচার দিন কোন মতে হাবিজাবি খেয়ে মসজিদে থেকে পার করছে, কিন্তু এভাবে তো আর চলেনা, গেল একটা রেস্টুরেন্টে কাজের জন্য। মালিক বাঙালি, উনি প্রথমেই তাকে পাঠালেন ডিশ ওয়াশ করতে (সুইডিশ ভাষায় বলে Diska, বাঙালিরা বলে ঢিচকা মারা)। স্বভাবতই নতুন আসা  বাঙালিদের মধ্যে একটু দ্বিধা থাকে, আমি পিএইচডি স্টুডেন্ট হয়ে ডিশওয়াশ করব?? মুখ ব্যাজার করে সে কাজ করতেছিল, নতুন বলে একটু স্লো ও ছিল। মালিক আধাঘন্টা পরে আইসা ঝাড়ি, এই কয়টা ডিশ এখনো ধোয়া হয় নাই? সেই স্টুডেন্ট তখন রাগের চোটে বলল, দেখেন আমি পিএইচডি করতে আসছি এই দেশে, বিপদে পড়ছি বলেই এই কাজ করতেছি, জীবনে কখনো এইগুলা করি নাই.... তখন সেই রেস্টুরেন্টের মালিক তাচ্ছিল্যভরে বললেন, হ্যাহ... কত পিএইচডি মোর গোয়ার তল দিয়া ঢিচকা মাইরা গেল এইখানে, আর তুই আইছস কই থেকে....

সেই পিএইচডি স্টুডেন্ট ভাইয়া এখন সুইডেনের Karolinksa Institute (http://ki.se) এই রিসার্চার হিসেবে কর্মরত আছেন, যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, ক্যারোলিনস্কা হল মেডিকেল ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে বিশ্বে প্রথম পাঁচটির একটি।

... এত কথা কয়া কাম নাই, ওদের ডিলটা বলতেছি।

কোম্পানি থেকে ঘন্টাপ্রতি ১২০ ক্রোনা দেয়ার নিয়ম থাকলেও এরা আমাকে দিবে প্রতি ঘন্টা ৫১ ক্রোনা, প্রতিদিন ৪ ঘন্টা কাজ করতে হবে, কিন্তু পেমেন্ট দিবে আড়াই ঘন্টার, শুক্রবারে ৮ ঘন্টা করতে হবে, কিন্তু পেমেন্ট ওই আড়াই ঘন্টারই দিবে, সেটাও দুই মাস পর পাওয়া যাবে, নভেম্বরে ২২ দিন কাজ করলে সেই পেমেন্ট পাবেন জানুয়ারীর ২২ তারিখে। প্রথম দুই দিন মাগনা খাটাবে কাজ শেখানোর নামে। ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার জন্য এরা আপনাকে পেমেন্ট দেবে ক্যাশ টাকায়, এবং আপনি একজন ভূত, ট্যাক্স অফিসের লোকজন আসলে স্ট্রেট বলে দেবে যে আপনাকে ওরা চেনে না। এই ধরনের কাজকে বাঙালিরা বলে "কালো কাজ" যেটার কথা সরকার জানে না এবং মালিক আপনি দুজনেই ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছেন।

লন্ডনে তো অবস্থা আরো খারাপ, IELTS এক্সেম্পট কইরা দেওয়ার পর থেকে ব্যাঙের ছাতার মত ভুয়া কলেজ গজাইছে ইউকে যে, যেইগুলার লাইসেন্স পরের বছরেই বাতিল হয়ে গেছে, কিন্তু যেই পুলাপানগুলা অলরেডি নিজের বাপের কিডনি বেচা ট্যাকা দিয়া পড়তে আসছে অগোর কি ইহবো? অগোরে সরকার কইছে, দেশে ফিরা যাও।

যাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাদের আসলে কিছুই করার নেই, এই ডিল মেনে নিয়েই কাজ করতে হয়, নিজের পেটটা তো চালাতে হবে নাকি? আর এদের চুষে চুষেই উনারা নিজেদের টাই পরা ছবি প্রথম আলোতে ছাপাবেন, আর আমরা দেইখা বগল বাজামু।

আরো ম্যালা কিছু লেখুম ভাবছিলাম, মাগার এই হালাগোরে নিয়া লেখতে লেখতে মেজাজ গরম হয়া গেছে, ধুরো আর লেখুমই না আজকে। সরি আজকে আজেবাজে জিনিসই বেশি লেইখা ফেলছি। প্রুফ রিডিংয়েরও ধৈর্য হইতেছে না, বানান ভুল অর গুরুচন্ডালি দোষ মাপ কইরা দিয়েন। বিড়ি খাইতে গেলাম।

https://s3-us-west-2.amazonaws.com/droplr.storage/files/tmp_5834c8af02ce04bddcc67802de9af60c/xJSl?AWSAccessKeyId=AKIAJSVQN3Z4K7MT5U2A&Expires=1359235134&Signature=4UPlHYyxCH%2B2sribPjcqQcUIyY8%3D&response-content-disposition=inline%3B%20filename%2A%3DUTF-8%27%27BD%2520STD.png


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>