Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

কক্সবাজারের নাট্যচর্চা: অতীত ও বর্তমান

$
0
0

মানব সভ্যতার অগ্রগতি সাধিত হয় উৎপাদন ব্যবস্থার বিকাশের সাথে এবং এর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে সংস্কৃতিসহ সভ্যতার অন্যবিধ উপাদান। উৎপাদনের সম্পর্কসমূহের সমহারই অর্থনীতি- যা সমাজের ভিত্তি। যার উপর দিয়ে গড়ে ওঠে উপরিকাঠামো। উৎপাদনের সুত্রপাত মূলত কৃষি ব্যবস্থা থেকে। কৃষি ব্যবস্থা প্রথমে ছিল নিছক রোপন ব্যবস্থা। পরে লাঙলের মাধ্যমে ভূমি কর্ষণ ব্যবস্থার সুত্রপাত। হল বা লাঙল কৃষি কাজের প্রধান হাতিয়ার। উৎপাদনের জন্য যা করা হয় তা হল কর্ষন। এই কর্ষনই জীবনের মৌলিক ভিত্তি তৈরী করে এবং তার উপরে নির্ভর করে যা কিছু বিকাশ করে যেমন রীতি-নীতি, পোষাক-পরিচ্ছদ, আইন-কানুন, সংস্কার-বিশ্বাস ইত্যাদিও হয় এই উৎপাদনের ব্যবস্থার উপরি কাঠামো। সে জন্য এ গুলোর সম্মিলিত নাম হয় কৃষ্টি, যা কর্ষণ শব্দ থেকে জাত। আর এই কর্ষণ থেকে সংস্কৃতির সুত্রপাত। মানুষের সৃষ্টিশক্তির পরিচয় তার সংস্কৃতিতে। এই সৃষ্টিশক্তির জন্যই মানুষ। মানুষ অন্যজীব থেকে স্বতন্ত্র। অন্যজীব প্রকৃতির বশ;কিন্তু মানুষ প্রকৃতিকেও বশে আনতে পারে,সৃষ্টি করতে পারে। সে কৃতি বা সৃষ্টির দ্বারা মানুষ। মানুষ তাই সংস্কৃতি। আর মানুষেরা সে সব রীতিনীতি,কলা-কৌশল মেনে চলে সংস্কৃতিকে ধারণ করে। তাই ঊ.ই ঃধরষড়ৎ এর মতে বলা যায়-  ঈঁষঃঁৎব রং ঃযধঃ পড়সঢ়ষবী যিড়ষব যিরপয রহপষড়ঁফবং শহড়ধিষবফমবং নবষধরবভং, ধৎঃং, সড়ৎধষং ষধ,ি পঁংঃড়স ধহু ড়ঃযবৎ পধঢ়ধনরষরঃরবং ধহফ যধনরঃং ধপয়ঁরৎবফ নু সধহ ধং ধ সবসনবৎ ড়ভ ংড়পরবঃু''(জ্ঞান, বিশ্বাস, কলা, নীতি, আইন, প্রথা এবং সমাজের সভ্য হিসেবে আহরিত অনন্য যোগ্যতা ও অভ্যাসের সমষ্টিকে সংস্কৃতি বলে)। এই বিচারে আর্ট বা শিল্পকলাও সংস্কৃতির অংশ। শিল্পকলা হলো সাহিত্য, চিত্রকলা, নৃত্য, সংগীত (যন্ত্র ও কণ্ঠ), ভাস্কর্য ও স্থাপত্য। আমি বক্ষমান নিবন্ধে কক্সবাজারের নাট্যচর্চা বিষয়ে আলোচনার প্রয়াসি হচ্ছি।
সমুদ্রতীরবর্তী কক্সবাজারের নান্দনিক সাংস্কৃতিক চর্চায় ভুমিকাও কম নয়। যদিও আমি কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক চর্চার পুর্ণাঙ্গ ধারণা দিতে পারবনা তথাপি কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক চর্চার ধারাবাহিকতার ইতিহাস প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক আলোচনা করার চেষ্টা করা গেল-সাংস্কৃতিক চর্চার বিভিন্ন অংশের মধ্যে নাট্য, সংগীত চিত্রকলা প্রভৃতি শাখার মধ্যে নাটক একটি সমৃদ্ধ শাখা। কক্সবাজারে কখন কোথায় নাট্যচর্চার শুরু হয় তা সঠিকভাবে বলা না গেলেও বৃটিশ আমলে এখানে নাট্যচর্চা শুরু হয় বলে জানা যায়। ১৯২৩ সালের জানুয়ারীতে চকরিয়ায় সর্বপ্রথম নাটক মঞ্চস্থ হয়। সেক্সপিয়রের “হ্যামলেট” নাটক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের নাট্যচর্চা শুরু হয়। এরপর ১৯২৭ সালে চকরিয়া এম.ই স্কুলে মঞ্চায়িত হয় ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ নাটকটি।
ত্রিশের দশকে ‘রামু ক্লাব’ নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান রামু থানার উত্তরদিকে উমেশ ধূপীর ভিটায় দানবীর খিজারী দালালের আর্থিক সহায়তায় ক্লাবঘরসহ স্থায়ী মঞ্চ সম্বলিত বৃহদাকার একটি মিলনায়তন নির্মিত হয়। উক্ত মিলনায়তনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নাট্যকর্মী এনে নাটক মঞ্চায়ন করা হতো। এ সময় মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে সিরাজ উদ্দৌলা, টিপু সুলতান, আমিনা সুন্দরী প্রভৃতি উল্লেখ যোগ্য।
চল্লিশের দশকের প্রথম দিকে জীবন খাস নবিশ নামে একজন সংস্কৃতিবান এস.আই রামু থানায় বদলী হয়ে আসেন। তাঁর উৎসাহ ও উদ্দীপনায় রামুর নাট্যচর্চা আরো গতিশীল হয়। এ সময় জাকের আহমদ চৌধূরীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘রামু বাজার ড্রামাটিক এসোসিয়েশন’। এখানে উল্লেখ করার দরকার যে, জাকের আহমদ চৌধূরী সম্ভবত রামুর প্রথম মুসলিম নাট্যকর্মী। তাঁর সাথে রামুর নাট্যাঙ্গনে যারা অবদান রাখেন তাদের মধ্যে রয়েছে - রাজ কিশোর চক্রবর্তী, রেবতী মোহন বড়–য়া, শ্রীধন বড়–য়া, রাস বিহারী চৌধূরী, শচীন বড়–য়া, জীবন খাসনবীশ, রমনী গাঙ্গুলী, দীনেশ বড়–য়া মহাজন। পর্যায়ক্রমে ১৯৪৭ সনে দেশবিভাগের পর কক্সবাজারে নাট্যচর্চার প্রাণ সঞ্চারিত হয়। যথেষ্ট সমস্যা বিদ্যমান সত্ত্বেও সুধীজন, ছাত্র, যুবা, চাকুরীজীবীসহ অনেকে নাট্যচর্চা করে যাচ্ছেন। ১৯৪৭ সালে এডভোকেট জ্যোতিশ্বর চক্রবর্তী কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর সম্পাদক থাকাকালে তৎকালীন মহকুমা হাকিম আবুল খায়েরের পৃষ্ঠপোষকতায় কাছারী পাহাড়ে (বর্তমান কোর্ট বিল্ডিং) ‘মহারাজ নন্দকুমার’ নাটকটি মঞ্চায়নের মাধ্যমে কক্সবাজার শহরে নাট্যচর্চা শুরু হয়। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে যারা দর্শকদের দৃষ্টি কেড়েছিল তাদের মধ্যে দেবপ্রসাদ ভট্রাচার্য, ওবাইদুল হাকিম, নজিবুর রহমান, নলিনী দত্ত, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, নিরোদ চক্রবর্তী, অমরেন্দ্র নাথ মজুমদার, মনমোহন সেন, বজল আহমদ প্রমূখ। এ সময়ে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘কংক্যবতীর ঘাট’, ‘মেঘে ঢাকা’, ‘মোহমুক্তি’, ‘জীবন ষ্ট্যাচ’ু, ‘নাটক নয় ফাঁস’, ‘ক্ষুধা’,‘পথের শেষে’, ‘মনিকান্চল’, ‘আলোড়ন’, ‘সম্রাট শাহজাহান’, ‘সিরাজদৌল্লাহ’, ‘আরঙ্গজেব’ প্রভৃতি।
১৯৪৯ সালে কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম পুরোধা ওস্তাদ আবু বকর সিদ্দিকী শরীক হলে সাংস্কৃতিক অঙ্গন আরো বিকশিত হয়। অতঃপর ১৯৫৬ সালে একে এম জাকারিয়া মহকুমা হাকিম হিসাবে যোগদানের পর তাঁর ব্যক্তিগত পৃষ্টপোষকতায় পাবলিক লাইব্রেরীর ‘জর্জ ও মেরী’ হলে ‘টিপু সুলতান’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অংশগ্রহণ করেন- মৌলভী ফরিদ আহমদ, দেব প্রসাদ ভট্টাচার্য, ওবাইদুল হক, বজল আহমদ, নিরোদ বরণ চক্রবর্তী, মকবুল আহমেদ, আব্দুল হাকিম, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, মনতোষ কুমার চৌধূরী, এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরী, আব্দুর রহিম চৌধূরী, এড. মোহাম্মদ আলী, সাইমুম শমশের, অমরেন্দ্রনাথ মজুমদার, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, দুলাল পাল, বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্য প্রমুখ।
১৯৫০ সালে নুনিয়াছড়া আবুল কাসেমের প্রযোজনায় ‘সিরাজদৌল্লাহ’ নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে যারা দর্শকদের দৃষ্টি কাঁেড়ন তাদের মধ্যে রয়েছে- এড.ছালামত উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন, আলতাজুর রহমান, মোহাম্মদ আজিজ, মুহম্মদ নাসির উদ্দীন, লিয়াকত আলী,বদিউল আলম প্রমুখ।
১৯৫০ সালে ১৬ ডিসেম্বর দেব প্রসাদ ভট্টাচার্য’র পরিচালনায় ‘সিরাজের স্বপ্ন’ নাটকটি কক্সবাজার হাই স্কুলে মঞ্চায়িত হয়। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- সলিমুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ (তৎসময়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ও বর্তমান সিনিয়র আইনজীবী), আবুল মঞ্জুর (বর্তমান কানাডা প্রবাসী), ইউ সুয়ে জান, সেলিম রাহগীর, ছালামত উল্লাহ (বর্তমান সিনিয়র আইনজীবী), জয়নাল আবেদীন প্রমুখ। কক্সবাজার হাইস্কুলে এ নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে স্কুলে নাট্যচর্চার ইতিহাস শুরু হয়। তাছাড়া ১৯৫৬ সালের শুরুর দিকে দেব প্রসাদ ভট্টচার্য কক্সবাজার হাইস্কুলে শিক্ষকতার করার সময়ে ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। এ নাটকে সক্রিয়ভবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এড. ছালামত উল্লাহ, কবি সেলিম রাহগীর, অধ্যাপক নূর আহমদ এডভোকেট, লিয়াকত আলী, মুহাম্মদ নাসির উদ্দিনসহ স্কুলের কয়েকজন ছাত্র। এ সময়ে ‘সিরাজদ্দৌলা’, ‘ঝিলিমিলি’ (স্কুল), ‘মার্চেন্ট-অব-ভেনিস’, ‘মীর কাসেম’,  ‘জাহাঙ্গীর’, ‘সাহজাহান’, ‘বিশ বছর আগে’, ‘মহুয়া’, ‘শিরি-ফরহাদ’, ‘উদয়নালা’, ‘সিরাজের স্বপ্ন’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়। আর এসব নাটকে পরিচালনায় ও নাট্য অভিনয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন- ওবাইদুল হাকিম, ডাঃ কবীর আহমদ, অধ্যাপক শাহ জাহান মনির, অধ্যাপক নূর আহমদ, পেটান আলী, সেলিম রাহগীর, মোহাম্মদ আলী, নেজামুল হক, এড.আবুল কালাম আজাদ, শওকত, কাসেম, কালু, বদিউল আলম, মকবুল আহমদ, আব্দুল হাকিম, গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ। তখনও নাট্যাভিনয়ে মেয়েরা এগিয়ে না আসায় স্ত্রী চরিত্রে ওবাইদুল হক, নুরুল হুদা চৌধূরী, দুলাল পাল, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, অমূল্য চক্রবর্তী, আতিকুল্লাহ প্রমুখ অভিনেতারা অভিনয় করে দর্শক মাতিয়ে তুলতেন।
১৯৫৬ সালের ২৬ মার্চে কক্সবাজার ইনষ্টিটিউট ও পাবলিক লাইব্রেরীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘সঙ্গীত সমিতি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এ কে.এম জাকারিয়া এবং এস.ডি.এম সি.ও এন রহমান প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক ছিলেন। এ সময় পৌর এলাকা টেকপাড়ায় নাট্যানুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ধুম পড়ে যায়। ১৯৫৬-১৯৫৭ সময়ে ‘লায়লী-মজনু’, ‘টিপু সুলতান’, ‘সিরাজদৌল্লাহ’, ‘মহুয়া’, ‘সিন্ধু বিজয়’, ‘সোহরাব-রুস্তম’, ‘উল্কা’, ‘গ্রামের দাঙ্গা’, ‘পলাতক বই’, ‘জীবন সংগ্রাম’, ‘আড্ডা’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চস্থ হয়। আর এসব নাটকে অভিনয় করেন- ওবাইদুল হাকিম, দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য, মো. হাসান, জয়নাল আবেদিন, এড.সুরেশ চন্দ্র সেন, এড,জ্ঞানেন্দ্র লাল চৌধুরী (একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ), হরি চৌধুরী, মকবুল নাজির, নিরোধ চক্রবর্তী, গোপাল ভট্টাচার্য, শিশির নন্দী, প্রফূল্ল রক্ষিত, ফিরোজ আহমদ চৌধুরী, অহিদুল আলম,শামশুল হুদা, কবি সেলিম রাহগীর, ডাঃ কবীর আহমদ, ড.শাহজাহান মনির, মফিজ, গোলাম নবী, পেটান আলী, জাফর আলম, গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ আলী, আব্বাছ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। এসব নাটক পরিচালনা ও প্রযোজনায় যাদের হাত বেশী তাদের মধ্যে এড. মমতাজুল হক, এড. বঙ্গিম রক্ষিত, এড. বোধেন্দু ভট্টচার্য, এড. এখলাছুর প্রবীর প্রমুখ।
মহকুমা প্রশাসক এ.কে.এম জাকারিয়া একজন সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কক্সবাজারের মহকুমা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন আমেজ ফিরে পায়। ঘন ঘন নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদিতে মুখরিত হয়ে উঠে লাইব্রেরীর শিলনায়তন। এই সময় মঞ্চস্থ হয়‘ টিপু সুলতান’, ‘সিরাজের স্বপ্ন’, ‘মীর কাসেম’, ‘জাহাঙ্গীর’, বিশ বছর আগে’ প্রভৃতি নাটক। তাঁর তত্ত্বাবধানেই পাবলিক লাইব্রেরীতে কবি জসিমউদ্দীনসহ নামকরা শিল্পীদের সংব^র্ধনা দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক বদিউল আলম বলেন- ‘ মহকুমা অফিসার জনাব একেএম জাকারিয়ার আমন্ত্রনে কক্সাবাজার সফরে এসেছিলেন পল্লীকবি জসিমউদ্দীন ও প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সোহরাব হোসেন। তাদের সম্মানে লাইব্রেরীতে আয়োজন করা হয় সম্বর্ধনা সভার। সেই সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও সঙ্গীতজ্ঞ বাবু জগনানন্দ বড়–য়া।’(বদিউল আলম ১৯৮৭ঃ ১০)
১৯৫৮ সালে এম জে আর খান কক্সবাজার মহকুমা প্রশাসক হয়ে আসেন। তিনিও একজন সঙ্গীত প্রিয় মানুষ ছিলেন। তাঁর সার্বিক প্রচেষ্টায় কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর উদ্যোগে আয়োজন করা হয় রবীন্দ্র-নজরুল জয় ন্তী। তাঁর আমন্ত্রনে অতিথি শিল্পী হিসেবে অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিটিভির প্রথম কন্ঠশিল্পী ফেরদৌসি রহমান ও  মোস্তফা জামান আব্বাসী।
১৯৫৮ সালে আবুল কালাম আজাদ ও দুলাল পাল’র পরিচালনায় মঞ্চায়িত হই। ‘আড্ডা’, ‘কুঁয়াশা’ প্রভুতি নাটক। এসব নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- কবীর আহমদ, আবুল কালাম, খুরশেদ আলম (প্রয়াত এডভোকেট), গোলাম নবী, অমুল্য চক্রবর্তী, নেজাম, বক্তিয়ার আহমদ, সিরাজুল মোস্তফা, বকর, ফখরুদ্দিন, লালু, গোলাম হাসান প্রমুখ।
১৯৬০ সালের প্রথম দিকে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর ‘জর্জ এন্ড মেরী’ (বর্তমান শহীদ সুভাষ) হলে দু’দিনব্যাপী ‘বন্ধুর চরিত্র’ নাটকটি কক্সবাজার হাই স্কুলের উদ্যোগে মঞ্চায়িত হয়। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নুর আহমদ, সেলিম রাহগীর, সুভাষ দাশ, লিয়াকত আলী, শামসুল আলম, বদিউর রহমান প্রমুখ। ষাটের দশকে পুরাতনদের সঙ্গে আরো অনেক নতুন মঞ্চাভিনেতা এসে যোগ দেয়। এদের মধ্যে নুরুল হুদা চৌধুরী, অনিল বরণ চৌধুরী, এ.বি ধর, আবুল মনজুর, মোশতাক আহমদ, নেপাল ভট্টাচার্য, ইব্রাহিম খলিল, অজিত ্েদ এবং নুরুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ। এই সময়ে ঐতিহাসিক নাটক মঞ্চায়নের পাশাপাশি সামাজিক নাটক ও মঞ্চায়িত হয়েছিল। এ সময় নাট্যাভিনয় ও নির্দেশনা-পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন দুলাল পাল। তাঁর পরিচালনায় ‘নাটক নয় ফাঁস’, ‘ক্ষুধা, পথের শেষে, ‘বাদশা’, ‘বিশ বছর আগে’, ‘এরাও মানুষ’,‘মানময়ী গালর্স স্কুল’, প্রভৃতি নাটক সাফল্যজনকভাবে মঞ্চায়িত হয়। এ সময়ে মঞ্চায়িত অন্যান্য নাটকের মধ্যে ‘কেরানীর জীবন’,‘কালো অধ্যায়’,‘রক্তাক্ত গোলাপ’, ‘মাটির মায়া’,‘নিস্কৃতি’, ‘বারো ঘন্টা’, ‘টিপু সুলতান’, ‘সম্রাট শাহা জাহান’, ‘উদয়নালা’, ‘মহারাজ প্রতাপাদিত্য’,‘পলাশীর পরে’ প্রভৃতি উল্লেখ যোগ্য ।
১৯৬৪ সালে কক্সবাজার মডেল হাই স্কুল (বর্তমান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়) এর বার্ষিক নাটক নাট্যকার নুরুল মোমেন রচিত ‘যদি এমন হতো’ তৎকালীন ইংরেজী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আহমদ জাহাঙ্গীর (বর্তমান সিনিয়র আইনজীবী)’র পরিচালনায় মঞ্চায়িত হয়। আর এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- সুভাষ দাশ (একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ), নুরুল আজিজ চৌধুরী, ফয়েজুল আজিম জেকব (বর্তমান চবি চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী), বদর উদ্দিন, সিরাজুল মোস্তফা, রাখাল মিত্র, একেএম নুর আহমদ প্রমুখ।
১৯৬৪ সনের দিকে পেশাদার মঞ্চাভিনেত্রিদের এনে নারী চরিত্রে অভিনয়ের সুচনা করা হয়। যথাযথ সম্মানীর বিনিময়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিশেষত পূর্ণিমা সেন (চট্টগ্রাম), আলো পালা (চট্টগ্রাম), কুমিল্লা থেকে গীতাশ্রী, জয়শ্রী, চিত্রনায়িকা চন্দনা, চলচিচত্র নায়িকা শাবানা, জহুরী, সুবর্র্ণা মোস্তাফা, তন্দ্রা ভট্টাচার্য, চিত্রনায়িকা কবরী (বর্তমান এম পি) ও বাণী সরকারসহ আরো কয়েকজন কক্সবাজারের বহু নাটকে অভিনয় করে সুনাম কুড়িয়ে গেছেন ।
১৯৬৩-১৯৬৪ সালে সেলিম রাহগীর, ডাঃ কবীর আহমদ ও শামশুল হুদার পৃষ্টপোষকতায় মঞ্চায়িত হয় ‘বাগদত্তা’, ‘দেবী সুলতানা’, ‘বাঁশের বাশী’, ‘এক মুঠি অন্ন চাই’, ‘রুপবান’ প্রভৃতি নাটক। আর এ সব নাটকে অভিনয় করেন- নেপাল ভট্টাচার্য, ডাঃ কবীর আহমদ, সেলিম রাহগীর, এডঃ নুর আহমেদ প্রমূখ। ১৯৬৭ সালে কক্সবাজার শহরে টেকপাড়ায় পৃথক নাট্যচর্চা শুরু হয়। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘টেকপাড়া যুব সংঘ’ সংগঠন থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চা করা হত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতি বছর দুই ঈদে টেকপাড়া প্রাইমারী স্কুলে মঞ্চ তৈরী করে নাটক মঞ্চায়ন করেন। এ সংঘ থেকে যে সব নাটক মঞ্চায়িত হয়েছিল তার মধ্যে ‘শাহাজান’, ‘পানিপথ’, ‘ইরান দুহিতা’, ‘আনার কলি’, ‘ঈশা খাঁন’, ‘গায়ের ছবি’, ‘বোবা কান্না’, ‘পরিণতি’, ‘হারানো মানিক’, ‘জীবন সংগ্রাম’, ‘আড্ডা’, ‘ভারাটে চাই’, ‘মুক্তাহার’, ‘সিরাজউদ্দৌলা’ প্রভৃতি নাটক সফলভাবে মঞ্চায়িত হয়েছিল। টেকপাড়ায় মঞ্চায়িত নাটকে যারা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা,আবুল কালাম আজাদ, নেজামুল হক, গোলাম কিবরিয়া, ওসমান গণি, খোরশেদ আলম, কবীর আহমদ, জাফর আলম, আবদুল হাকিম, সেলিম বাহগীর, মোহাম্মদ আলী, আবু হায়দার ওসমানী, সানাউল্লাহ প্রমূখ। একালের জনপ্রিয় ‘মা’ চরিত্রে সফল অভিনেত্রী খালেদা আকতার কল্পনা টেকপাড়া মঞ্চে অভিনয় করে তাঁর নাট্য ও অভিনয় জীবন শুরু করেন। এ সময় কল্পনার বাবা সরকারী কর্মচারী হিসেবে কক্সবাজারে বসবাস করতেন।
১৯৬৭ সালে উস্তাদ গোলাম মুত্তাদিরের পরিচালনায় শিশু কিশোর নাটক মঞ্চায়নের সূচনা হয়। তাঁর রচিত ‘শপথ’ ও ‘আশার মানিক’ নামক দুটো তিনি নিজস্ব পরিচালনায় কক্সবাজার হাইস্কুলে মঞ্চায়িত করেন। এ দুটো নাটকে অভিনয়কারীদের মধ্যে- রঞ্জন পাল, আবদুল মতিন আজাদ, স্বপ্না ভট্টাচার্য, মাহবুবুর রহমান, রাখাল মিত্র, খোকা, মাফরোহা সুলতানা মেরী, মাহরুফা সুলতানা বেলী প্রমূখ। গোলাম মোক্তাদিরের মাধ্যমে কক্সবাজারের এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয় যা সকলকে নাড়া দেয়। তিনি প্রথম মহিলা দিয়ে নারী চরিত্রে চিত্রায়ণ করে সফল মঞ্চায়িত করিয়েছিলেন। এর আগে নাটকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে পুরুষরা পালন করত নারীর দায়িত্ব অর্থাৎ পুরুষরাই নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন।
স্বাধীনতা উত্তরকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক অঙ্গন তরুণদের উদ্যম প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত হয়ে উঠে। পাবলিক লাইব্রেরী হয়ে উঠে প্রাণব ন্ত। আর এ সময়ে ঢাকা ও চট্রগ্রামের নাট্যচর্চার ঢেউ কক্সবাজারের নাট্যাঙ্গনকে আলোড়িত করে। এ সময় নাটক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তথা নাটকের নান্দনিক চি ন্তা চেতনা তরুণ মানসে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। বিশেষ করে গণনাট্য আন্দোলন এবং গ্রুপথিয়েটার চেতনায় যুব সমাজ সংগঠিত হয়ে উঠে। তখন থেকেই পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে দর্শনীয় বিনিময়ে নাট্যচর্চা শুরু হয় এবং ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও নাট্যচর্চায় এগিয়ে আসে। ১৯৭২ সালের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত হয় পিনাক শিল্পী গোষ্ঠী। পিনাক শিল্পী গোষ্ঠী প্রযোজিত নাটকের মধ্যে ‘নির্বাসনে’, চোরাগলি মন, ‘শুভব্বিাহ’, ‘এখন দুঃসময়’, ‘সূর্য মহল’, ‘বারো ঘন্টা’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়ন সূধী সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়। কিন্তু সংগঠনটি বর্তমানে বিলুপ্ত।
পিনাক শিল্পী গোষ্ঠীর পরেই কক্সবাজারে প্রথমবারের মত গ্রুপথিয়েটার ভিত্তিক সংগঠন ‘ব্যতিক্রম নাট্য সংস্থা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যতিক্রমী প্রত্যয়ে ব্যতিক্রমই প্রথম নাটককে যৌথ শিল্প কর্ম হিসেবে গ্রহণ করে কক্সবাজারের নাটকে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অবর্তীণ হয়। ব্যতিক্রম নাট্যসংস্থা প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক মুফীদুল আলম, অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা, এড.আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী প্রমূখ। এদের প্রযোজিত নাটক- অধ্যাপক মুফীদুল আলম রচিত নাটকত্রয় যথাক্রমে ‘কবন্ধ’, ‘পাষাণ’ এবং ‘লাবনী পয়েন্ট’, ‘সমাপ্তি অন্যরকম’, ‘জননীর মৃত্যু চাই’, ‘ছায়াছবির অঙ্গনে’, ‘হৃদয় ঘটিত ব্যাপার স্যাপার’, ‘হরিন চিতা পাল’, ‘এবার ধরা দাও’, প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়ে নাটকের ক্ষেত্রে প্রত্যয়ের প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়।
অতীত এবং বর্তমান দর্শকের চি ন্তা-চেতনাকে ধারণ করে ১৯৭২ প্রতিষ্ঠিত হয় নবারুণ নাট্য সংস্থা। এ সংগঠনের উদ্যোগে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘প্রদীপ শিখা’, ‘শুভ বিবাহ’, ‘সূর্য মহল’, ‘সাগর সেঁচা মানিক’ প্রভৃতি। তবে অবশ্য এর পূর্বে ১৯৭০ সালে মোস্তাফা মিয়ার তত্ত্বাবধানে সম্পাদন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে ‘নব আর্য অপেরা’ নামে যাত্রাদল গঠন হয়েছিল। এ যাত্রাদল ১৯৮০ পর্য ন্ত কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ‘টিপু সুলতান’  সম্রাট আকবর, ‘আলোমতি প্রেম কুমার’, ‘রহিম বাদশা’, ‘রুপবান কন্যা’, ‘গরীব কেন মরে’, ‘লায়লী মজ্নু’, ‘সিদুঁর দিয়ো-না মুছে’, ‘কে দেবে কবর’ প্রভৃতি যাত্রাপালা প্রদর্শন করা হয়েছিল। এ যাত্রাপালায় নাট্যাভিনয় করেন এডঃ মন্জুরুল ইসলাম, শামশুল আলম, হায়দার আলী, আবদুল মালেক আজাদ, শামসুল আলম, নুরু চৌকিদার, ডা. আনছার আলী, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, জাফর আলম প্রমূখ।
১৯৭৩ সালে শহরকেন্দ্রিক নাট্যচর্চার পাশাপাশি কক্সবাজার কলেজেও নাট্যচর্চা শুরু হয়। অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী ও অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক হেলালের নির্দেশনায় ‘রুপোর কৌটা’ নাটকটি পাবলিক লাইব্রেরীর মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হয়। সূচনা হয় কক্সবাজার কলেজে (তখন সরকারী করন হয়নি) নাট্যচর্চার ইতিহাস। অধ্যাপক মঞ্জরুল হক হেলাল এবং অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা’র যৌথ নির্দশনায় কক্সবাজার সরকারী কলেজ চত্বরে ১৯৭৭ সনে সর্বপ্রথম ‘জনৈকের মহাপ্রয়াণ’ এবং পরে ‘লাশ’৭৪’ মঞ্চায়িত হয়। পরবর্তীতে অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা‘র নির্দেশনায় কক্সŸাজার কলেজ ‘ওরা কদম আলী’, ‘ওর আছে বলেই’, ‘গলাকাটা লাশ’, ‘কবর হুজুর কখন মরবে’, ‘সুঁচ’, ‘টিপু সুলতান’, ‘মহারাজ প্রতাপাদিত্য’, স্বয়ম্বরা প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়। এসব নাটকে যারা অভিনয় করেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক মুফীদুল আলম, অধ্যাপক মকবুল আহমেদ, অধ্যাপক মনজুরুল হক হেলাল, অধ্যাপক একেএম নুরুল হক চৌধুরী, প্রফেসর এম এ বারী, অধ্যাপক মনোজ সেন, নাসিমা আক্তার লিপি, যমুনা দাশ, তোফায়েল আহমদ (সাংবাদিক ও আইনজীবী), মহিবুল্লাহ, করিম উদ্দিন ইউসুফ, লূৎফেন্নছা, সত্যপ্রিয় দৌলন চৌধুরী, তৌহিদুল আলম, এস,এম আকতার চৌধুরী (অধ্যাপক আকতার চৌধুরী), মাফরোহা সুলতানা মেরী, আবু হায়দার ওসমানী, পারুল, মাসুদা মোর্শেদা আইভি, শামীম ইকবাল, এরশাদ উল্লাহ, এ কে.এম.ফারুক আহমদ রকি, অরুপ বড়–য়া তপু, মোজাম্মেল হক, প্রমূখ। এর ধারাবাহিকতা ১৯৮৬ পর্য ন্ত বজায় থাকে। ১৯৮৭ সালে প্রতিক্রিয়াশীল ছাত্র ছাত্রসংগঠন ছাত্র সংসদে প্রবেশ করলে এখনো পর্য ন্ত কোন নাটক মঞ্চায়িত হয়নি। যা একটি সরকারী কলেজের জন্য খুবই দুঃখজনক।
১৯৭৬ সালে অধ্যাপক মুফীদুল আলম রচিত প্রযোজিত ও পরিচালিত মৌলিক নাটক ‘কবন্ধ’ ও ‘লাবণী পয়েন্ট’, মাঝে বিরতি দিয়ে একই সাথে পাবলিক লাইব্রেরী মঞ্চে মঞ্চায়িত হয় এবং হিন্দি সাহিত্যের দিকপাল কৃষ্ণ চন্দ্রের গল্প অবলম্বনে রচিত ‘পাষাণ’ নাটকটি বর্তমান জেলে পার্কে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়। ‘কবন্ধ’ ও ‘লাবণী পয়েন্ট’ নাটকে সর্বপ্রথম কক্সবাজারস্থ মহিলা শিল্পী তৎকালীন সরকারী কলেজের ছাত্রী খালেদা বিলকিস (শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত ও আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সারেং বউ’ ছায়াছবিতে প্রতিনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।) ‘পাষাণ’ নাটকের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন কক্সবাজার কলেজের ছাত্রী আখতার।
চলবে


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>