ওহুদের ময়দানে সত্য ও মিথ্যার লড়াই যখন চরম পর্যায়ে, তখন রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় তরবারী কোষমুক্ত করে বললেন, আজ কে এর হক আদায় করবে ? সকল সাহাবীই অত্যন্ত আগ্রহের সাথে নিজ নিজ হাত বাড়ালেন। যুবাইর (রা) ও তিনবার নিজের হাত বাড়ালেন; কিন্ত শেষ পর্যন্ত তা লাভের গৌরব অর্জণ করেন হযরত আবু দুজানা আনসারী (রা)। ওহুদের যুদ্ধে তীরন্দাজ সৈনিকদের অসর্তকতার ফলে যখন যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল এবং মুসলিমদের সুনিশ্চিত বিজয় পরাজয়ের রুপ নিল তখন যে চৌদ্দজন সাহাবী নিজেদের জীবনের বিনিময়ে রাসুলে পাককে কেন্দ্র করে ব্যুহ রচনা করেন যুবাইর (রা) ছিলেন তাদের অন্যতম।
খন্দকের যুদ্ধে মুসলিম নারীরা যেদিকে অবস্থান করেছিলেন, সে দিকটির প্রতিরক্ষার দায়িত্বভার লাভ করেন হযরত যুবাইর (রা)। এ যুদ্ধের সময় মদীনার ইয়াহুদি গোত্র বনু কোরাইজা মসুলিমদের সাথে সম্পাদিত মৈত্রি চুক্তি ভঙ্গ করে। রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের অবস্থা জানার জন্য কাউকে তাদের কাছে পাঠাতে চাইলেন। তিনবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে তাদের খবর নিয়ে আসতে পার ? প্রত্যেকবারই হযরত যুবাইর উত্তর দিলে আমি। রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর আগ্রহে সন্তুষ্ট হয়ে বললেন, প্রত্যেক নবীরই থাকে হাওয়ারী, আমার হাওয়ারী যুবাইর।
খন্দকের বনু কুরাইজার যুদ্ধ এবং বাইয়াতে রিদওয়ানেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। খাইবারের যুদ্ধে তিনি অসম সাহসিকতার পরিচয় দেন। খাইবাবেরর ইয়াহুদি নেতা মুরাহহিব নিহত হলে বিশাল দেহ ও বিপুল শক্তির অধিকারী তার ভাই ইয়াসির ময়দানে অবতীর্ণ হয়ে হুন্কার ছেরে দ্বন্ধ যুদ্ধের আহবান জানায়। হযরত যুবাইর লাফিয়ে পড়লেন। তখন তাঁর মা হযরত সাফিয়াহ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, নিশ্চয় আজ আমার কলিজার টুকরা শহীদ হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, না, যুবাইরই তাকে হত্যা করবে। সত্যি সত্যিই অল্পক্ষনের মধ্যেই যুবাইর তাকে দ্বন্ধ যুদ্ধে পরাজিত করে হত্যা করেন।
খাইবার বিজয়ের পর মক্কা বিজয়ের প্রস্তুতি চলছে। মানবীয় কিছু দুর্বলতাকার কারণে প্রখ্যাত সাহাবী হাতিব বিন আবী বালতায়া (রা) সব খবর জানিয়ে মক্কার কুরাইশদের কাছে একটি চিঠি লিখলেন। চিঠিসহ একজন মহিলাকে তিনি গোপনে মক্কা পাঠান। এদিকে ওহীর মাধ্যমে সব খবর রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবগত হলেন। তিনি চিঠিসহ মহিলাটিকে গ্রেফতারের জন্য যে দলটি পাঠান, হযরত যুবাইরও ছিলেন সে দলের একজন। চিঠিসহ মহিলাকে গ্রেফতার করে মদীনায় নিয়ে আসা হলো। হাতিব বিন বালতায়া লজ্জিত হয়ে তওবা করলেন। রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ক্ষমা করে দিলেন।
মক্কা বিজয়ের দিন রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম সেনাবাহিনিকে কয়েকটি দলে বিভক্ত করেন। সর্বশেষ ও ক্ষুদ্রতম দলটিতে ছিলেন রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে। আর এ দলটির পতাকাবহী ছিলেন যুবাইর (রা) রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় প্রবেশ করলেন। চারিদিকে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে এলে হযরত মিকদাদ ও হযরত যুবাইর (রা) নিজ নিজ ঘোড়ার উপর সওয়ার হয়ে রাসুলে পাকের নিকপ হাজির হলেন। রাসুলে কারিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উঠে দাঁড়িয়ে নিজ হাতে তাদের উভয়ের মুখ মন্ডলি হতে ধুলোবালি ঝেড়ে দেন।
হুনাইন যুদ্ধের সময় হযরত যুবাইর কাফিরদের একটি গোপন ঘাঁটির নিকট পৌঁছলে তারা তাঁকে অতর্কিতে আক্রমণ করে। অত্যন্ত সাহসের সাথে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ঘাটিটি সাফ করে ফেলেন। তায়িফ ও তাবুকের যুদ্ধেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। দশম হিজরীতে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিদায় ভাষনেও তিনি সফরসঙ্গী ছিলেন।
দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমরের (রা) খিলাফতকালে সিরিয়ার ইয়ারমুক প্রান্তরে বিশাল রোমান বাহিনির সাথে মুসলিম বাহিনীর ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এটা ছিল সিরিয়ার ভাগ্য নির্ধারণী যুদ্ধ। হযরত যুবাইর এ যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের আএক চরম পর্যায়ে মুসলিম সৈনিকদের একদল সিদ্ধান্ত নিল, হযরত যুবাইর রোমান বাহিনির মধ্যভাগে প্রচন্ড আক্রমণ চালাবেন এবং অন্যরা তার সমর্থনে পাশে পাশে থাকবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হযরত যুবাইর (রা) ক্ষিপ্রতার সাথে প্রচন্ডভাবে আক্রমণ চালিয়ে রোমান বাহিনির ব্যুহ ভেদ করে অপরপ্রান্তে চলে যান কিন্ত অন্যরা তাঁকে অনুসরন করতে সক্ষম হলেন না। একাকী আবার রোমান বাহিনি ভেদ করে ফিরে আসার সময় প্রচন্ডভাবে আক্রান্ত হয়ে ঘাড়ে দারুনভাবে আঘাত পান। হযরত উরাওয়া বলেন, বদরের পর এটা ছিল দ্বিতীয় যখম যার মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে ছেলেবেলায় আমরা খেলা করতাম। তাঁর এ দু:সাহসী আক্রমণের ফলে রোমান বাবিহনি ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
হযরত আমর ইবনুল আ’স মিসরে আক্রমণ চালিয়ে ফুসতাতের কিল্লা অবরোধ করে রেখেছেন। আমীরুল মোমেনীন তাঁর সাহায্যে দশ হাজার সিপাহী ও চার হাজার অফিসার পাঠালেন। আর চিঠিতে লিখলেন, এসব অফিসার এক একজন এক হাজার অশ্বারোহীর সমান। হযরত যুবাইর ছিলেন এ চার হাজার অফিসারদের একজন। মুসলিম সৈন্যরা সাত মাস ধরে কিল্লা অবরোধ করে আছে। জয়-পরাজয়ের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বিরক্ত হয়ে হযরত যুবাইর একদিন বললেন, আজ আমি মুসলিমদের জন্য আমার জীবন কোরবানী করব। এ কথা বলে উম্মুক্ত তরবারী হাতে সিঁড়ি লাগিয়ে কিল্লা প্রাচিরের মাথার উপর উঠে পড়লেন। আরো কিছু সাহাবীও তাঁর সঙ্গী হলেন। প্রাচীরে উপর থেকে অবস্মাৎ তাঁরা আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিতে শুরু করেন। এ দিকে নিচ থেকে সকল মুসলিম সৈনিক একযোগে আল্লাহু আকবর ধ্বনিআতে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তোলেন। খ্রীষ্টান সৈন্যরা মনে করলো, মুসলিমগণ কিল্লায় ঢুকে পড়েছে। তারা ভীত-বিহবল হয়ে পড়লো। এক পর্যায়ে অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে হযরত যুবাইর কিল্লার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ফটক উম্মুক্ত করে দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম বাহিনি অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। উপায়ান্তর না দেখে মিসরের শাসক মাকুকাস সন্ধির প্রস্তাব দেয় এবং তা গৃহিত হয়। সকলকে আমান দেয়া হয়।
হিজরী ২৩ সনে দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমার (রা) এক অগ্নি উপাসকের ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে শাহাদাত বরন করেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি ছয়জন প্রখ্যাত সাহাবীর সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠন করে তাদের উপর পরবর্তী খলিফা নির্বাচনের দায়িত্ব অর্পণ করে যান। তিনি বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রাসুল (সাঃ) এদের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন। হযরত যুবাইর ছিলেন এ বোর্ডের অন্যতম সদস্য।
তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমান (রাঃ) এর খিলাফতকালে হযরত যুবাইর (রাঃ) নিরিবিলি জীবনযাপন করছিলেন। কোন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেননি। আসলে বয়সও বেড়ে গিয়েছিল। ৩৫ হিজরীতে বিদ্রোহীদের দ্বারা হযরত উসমান অবরুদ্ধ হলে তাঁর নিরাপত্তার জন্য হযরত যুবাইর স্বীয় পুত্র হযরত আব্দুল্লাহকে নিয়োগ করেন। হযরত উসমান শহীদ হলে রাতের অন্ধকারে গোপনে তিনি তাঁর জানাযার নামাজ আদায় করে দাফন করেন।
হযরত আলী’র (রা) শাসনকালে তিনি এবং হযরত তালহা মক্কায় যেয়ে হযরত আয়েশা’র (রা) সাথে মিলিত হন। সেখানে তাঁরা মুসলিম উম্মাহর তৎকালিন পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেন এবং মদীনায় না গিয়ে বসরার দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিপুল সংখ্যক লোক তাঁদের সহযোগী হয়। এদিকে হযরত আলী (রা) তাঁদেরকে প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনিসহ অগ্রসর হন এবং হিজরি ৩৬ সনের ১০ই জমাদিউল উখরা বসরার অনতিদূরে ‘যীকার’ নামক স্থানে দুই মুসলিম বাহিনি মুখোমুখি হয় । ইতিহাসে এটি উটের যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত।
ইসলামি ইতিহাসের এ দু:খজনক অধ্যায়ের বিশ্লেষন আমার এ টপিকের মুখ্য বিষয় নয়। তবে একদিন যাঁরা ছিলেন ভাই ভাই, আজ তাঁরা একে অপরের খুনের পিপাসায় কাতর। ব্যাপারটি যাইহোক না কেন, এটা যে তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে নয়, তা আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি। সত্য ও সততার আবেগ, উৎসাহ উদ্দীপনায় তাঁরা এমনটি করেছিলেন। এ কারণে আমরা দেখতে পাই, একই গোত্রের লোক তখন দু’দিকে বিভক্ত। তাছাড়া দু’পক্ষের নেতৃবৃন্দের মুল লক্ষ্যই ছিল একটি সমঝোতায় উপনীত হওয়া। আর এ কারণেই দু’পক্ষের মধ্যে দুত বিণিময়ের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনা হয়েছিল। আর একই কারণে আমার দেখতে পাই, হযরত আলী (রা) একাকী ঘোড়ায় চড়ে রণাঙ্গনের মাঝখানে এসে হযরত যুবাইরকে ডেকে বলছেন, আবু আব্দুল্লাহ! তোমার কি সেই দিনটির কথা মনে আছে ? যে দিন আমরা হাত ধরাধরি করে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তুমি কি আলীকে মহব্বত কর ? বলেছিলে, হ্যাঁ ইয়া রাসুলাল্লাহ ! স্মরন কর, তখন রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, একদিন তুমি অন্যাভাবে তার সাথে লড়বে। হযরত যুবাইর জবাব দিলেন, হ্যাঁ এখন আমার স্মরন হচ্ছে।
একটি মাত্র কথা! কথাটি বলে হযরত আলী (রা) তাবুতে ফিরে গেলেন। এ দিকে যুবাইরের অন্তরে ঘটে গেল বিপ্লব। তাঁর সকল সংকল্প, দৃঢ়তা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা’র (রা) কাছে এসে বললেন, আমি সম্পুর্ণ ভুলের উপর ছিলাম। আলী আমাকের রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি বাণী স্মরন করে দিয়েছে। হযরত আয়েশা (রা) জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে এখন ইচ্ছা কি ? তিনি বললেন, আমি এ ঝগড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। তাঁর পুত্র আব্দুল্লাহ বললেন, আব্বা আপনি আমাদের গর্তে ফেলে আলীর ভয়ে এখন পালিয়ে যাচ্ছেন ? তিনি বললেন, আমি কসম করেছি, আলীর সাথে আর লড়বো না। আব্দুল্লাহ বললেন, কসমের কাফ্ফারা সম্ভব,। এই বলে তিনি স্বীয় গোলাম মাকহুলকে ডেকে আযাদ করে দেন। কিন্তু রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাওয়ারী যুবাইর বললেন, বেটা আলী আমাকে এমন কথা স্মরন করে দিয়েছে যে, আমার সকল উদ্যম-উৎসাহ স্তিমিত হয়ে পড়েছে। আমি সুনিশ্চিত যে আমরা হকের উপর নেই। এসো, তুমিও আমার অনুগামী হও। হযরত আব্দুল্লাহ অস্বীকার করলেন। হযরত যুবাইর একাকী বসরার দিকে রওয়ানা হলেন।
হযরত যুবাইরকে যেতে দেখে আহনাফ বিন কায়েস বললেন, কেউ যেনে এসতো তিনি যাচ্ছেন কেন । আমর ইবনু জারমুয বললো, আমি যাচ্ছি, এই বলে সে অস্ত্র-সজ্জিত হয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে হযরত যুবাইর (রা) এর সাথে মিলিত হল। তখন তিনি বসরা ছেড়ে একটু দুরে গিয়ে পৌঁছেছেন। কাছে এসে ইবনে জারমুয বললেন,
- আবু আব্দুল্লাহ! জাতিকে আপনি কি অবস্থায় ছেড়ে এলেন ?
- তারা সবাই একে অপরের গলা কাটছে ।
- এখন কোথায় যাচ্ছেন ?
- আমার ভুল আমি বুঝতে পেরেছি। এ কারণে এ ঝগড়া থেকে দুরে থাকার জন্য অন্য কোথাও যেতে চাই।
ইবনে জারমুয বললেন, চলুন, আমাকেও এদিকে কিছুদুর যেতে হবে। দু’জন এক সঙ্গে চললেন। জোহরের নামাযের সময় হযরত যুবাইর থামলেন। ইবনে জারমুয বললো, আমিও আপনার সাথে নামায আদায় করব। দু’জন নামাজে দাড়ালেন, হযরত যুবাইর যেই তাঁর মাবুদের উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হয়েছেন, বিশ্বাসঘাতক ইবনে জারমুয তরবারী এক আঘাতে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাওয়ারীর দেহ থেকে তাঁর শির বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন।
আসহাবে রাসুলের জীবন কথা হতে সংকলিত
{…………………..চলবে…………………..}