দরবারে নিয়মিত বৈঠকে হাজির রাজামশাই। সাথে মন্ত্রীবর্গ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। খুব কড়া দৃষ্টিতে একবার চারদিকে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে রাজা শুরু করলেন -
রাজা: তোমরা যারা মন্ত্রী, তোমরা যারা মেনেছো পোষ, তোমাদের কাজে আমি বড়ই নাখোশ!
ও হে মন্ত্রী সাহারা... কি ড্যাশের দেও পাহারা... ইলিয়াস আলী না কাকে যেন পায়না খুঁজে... বলি চোখ-কান সব আছো নাকি বুঁজে?স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: সে তো বিরোধীদের কাজ, আপনিই তো কহিলেন আজ। তবে কেন অর্থহীন প্রশ্ন রাজামশাই, আপনার কথায় কি খুঁটির জোর নাই?
রাজা: আহা! সে তো কথার কথা, বোঝ না কিছু ছাতার মাথা! কি হাল বলতো সাগর-রুনির, খোঁজ পায়নি তো কেউ তাদের খুনির?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: মহারাজ, ধামাচাপার চেষ্টা চলছে প্রাণপণ...রাজা: উফফ এখনও চেষ্টা? Come on...
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: জাঁহাপনা, প্রদীপের তলার অন্ধকারে লুকিয়ে সব খুনে... সাধ্য কার বাপের যে বের করে আনে! লেবু চা খেয়ে মিডিয়া এঁটেছে কুলুপ... সংবাদ পরিবেশনে এসেছে ভিন্ন রূপ! ঘটনার কেটেছে রেশ... মানুষের মাথাব্যথাও এখন প্রায় শেষ...
রাজা: বেশ! বেশ! তোমার কাজে আমি বড়ই খুশি বাপু! এবার একটু মুখখানা দেখাও তো ডাক্তার দীপু!
পররাষ্ট্রমন্ত্রী: এইতো রাজাধিরাজ, এইতো আমি... মমতা-মনমোহন যত নামী দামী... সামলেছি সব সিদ্ধ হাতে... মহারাজ দেশ ভেসেছে আজ সমুদ্রজয়ের স্রোতে...রাজা: আহা! কি সুখ! কি ভাবনা... বলি বর্ডার নিয়ে কোন সুখবর কি পাবো না? সমুদ্র ধুয়ে কি লবণ খাবো? দীপু, সীমান্ত রক্ষায় কি কিছু ভাবো?
পররাষ্ট্রমন্ত্রী: আপনিতো সবই জানেন মহারাজ, তবে কেন আপনার এই মিছে সাজ? আপনার অভিনয়ে কেউ দেবে না অস্কার। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি? ইয়ে মানে... সে তো আপনারই আবিস্কার।
রাজা: চোপরাও বেয়াদব, তর্ক মুখে-মুখে? বোঝ তো না কিছু, আছো অনেক সুখে। বছর-বছর ডিগ্রি আর সম্মাননা এতো... কোত্থেকে আসে সে সব টের পাও না তো! শাড়ি-চুড়ি-গহনা, গরু, চাল, মোটা পিঁয়াজ... এ সবের মূলেই ভারতের তোয়াজ। ধুর দীপু! তোমার সাথে কথা বলাই পণ্ডশ্রম... কই রে? কোথায় আমার দপ্তরবিহীন মন্ত্রী-আশ্রম?
সুরঞ্জিত: এইতো আমরা মহারাজ! আমি সুরঞ্জিত... আর ও সোহেল তাজ।
রাজা: তাজ নিয়ে কোন কথা নয়, তার ভাব হয়েছে মনে... উফফ! মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলাম যে কি কুক্ষণে! আমি বলি বাপ, এটা বঙ্গদেশের রাজনীতি... ঘুরবি-ফিরবি-খাবি, জীবনে আসবে উন্নতি। কোথায় কি? এই যুগে এসে কি-না বোনে সততার বীজ... ধুর ছাই! সুরঞ্জিত, কাহিনী শোনাও নিজ।
সুরঞ্জিত: রাজামশাই! অভিযোগ আছে, আছে অনুরোধ ভুরি ভুরি... কিন্তু সবার আগে এক কথা, আমি করি নাই চুরি!
রাজা: খামোশ! সব চোর এই একই কথা বলে... জানি কি করে সবাই তলে তলে। বসে থাকো ক’দিন, খাও-দাও... সুযোগ বুঝে পরে ঢুকায় দেবো কোথাও।
ভালো কথা! আবুলরে দেখি না, বনবাসে নাকি? তার কাছেতো অনেকের অনেক পেমেন্ট বাকি!তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী: ধারে কাছেই আছি রাজামশাই... আপনার কাছে তো আর কিছু লুকানোর নাই। দুর্নীতি-ধান্দা করিয়াছি যতো... হয়েছিলো লজ্জায় মাথা নত... শেষ পর্যন্ত মিললো পরিত্রাণ... মহারাজ, এ সব তো আপনারই দান!
রাজা: বটে! তোমাকে বাঁচাতে কত ঝড়েছে ঘাম, গিয়েছে মাল-পানি... আর কেউ না জানুক, শুধু আমি জানি! মালের কথায় মনে পড়লো, কোথায় মাল মুহিত... ডেসটিনি-শেয়ারবাজার কে করবে বিহিত?
অর্থমন্ত্রী: মহারাজ, ডেসটিনি’র পেমেন্ট বন্ধ এখন, পাই না কমিশন... তাই তো মিডিয়ায় লিখিয়ে সোজা কোর্টের এ্যাকশন। শেয়ারবাজার থাকা-যাওয়ায় কি-বা এসে যায়... খেলোয়াড়রা সব পালিয়েছে গুটি-গুটি পায়।
রাজা: গুড গুড! কিন্তু সে কোথায়। শেয়ারবাজার আর ক্রিকেট যে একসাথে সামলায়... যার জন্য ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর এতো হায় হায়... কোন শালা বলে বিশ্বসেরা ‘সাকিব আল’? মন্ত্রী না হয়েও আসল অলরাউন্ডার আমার লোটা কামাল!
লোটাস কামাল: লুটেছি ক্রিকেট বোর্ড, লুটেছি শেয়ার বাজার... বিপিএল আয়োজনে হয়েছি মালদার। বিশ্বকাপে মেরেছি কয়েক কোটি... তাই দিয়ে স্টকে নেড়েছি গুটি... মন্ত্রীত্ব পাইনি তো কি হয়েছে জাঁহাপন... আপনার রাজত্বের আমিই যোগ্য আইকন!
এটি আমার লেখা নয়। আমি লেখকের অনুমতি নিয়েই শেয়ার করলাম।
লেখাটি আগে এখানে প্রকাশিত হয়েছে
আমি আগেও এনার এক্টি লেখা শেয়ার করেছি