Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

কিছু ধর্মীয় শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তির অবসান হোক

$
0
0

ধর্মীয় কিছু শব্দ আছে যেগুলো নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তিতে পড়েন। যেমনঃ কাফের, মুশরিক, মুরতাদ, মালাউন ইত্যাদি শব্দ।

অনেক মুসলমানও জানে না এইসব শব্দের অর্থ কি।

কাফের

ইসলাম মতে সকল মুসলিম হচ্ছে মুমিন আর সকল অমুসলিম কাফের। মুমিন শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে বিশ্বাসী আর অবিশ্বাসী বা অমুসলিম শব্দের আরবী হচ্ছে কাফের। অনেকে ভুল করে মনে করে কাফের একটা গালি। এটা কোনো গালি নয়। তবে এই শব্দ শুধু তখন গালি হিসেবে গন্য হবে যখন একজন মুসলমান আরেক মুসলমানের উপর এই শব্দ প্রয়োগ করবে। তাই যতক্ষন পর্যন্ত একজন মুমিন (বিশ্বাসী) আল্লাহ, রাসূলে বিশ্বাস রাখবে তাকে কোনো অবস্থাতেই কাফের বলা যাবে না।

আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে কাফেরদের উদ্দেশ্যে সূরা আল কাফেরুন নাজিল করেছেন।

এই সূরার শেষ আয়াতে বলা আছে  لَکُمۡ دِیۡنُکُمۡ وَلِیَ دِیۡنِ (তোমার দ্বীন তোমার কাছে, আমার দ্বীন আমার কাছে)

যার অর্থ দাঁড়ায় কাফেরদের ধর্ম কাফেরদের কাছে আর মুমিনদের ধর্ম মুমিনদের কাছে।

সাধারন কাফের হচ্ছে যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে না ও ইসলাম ব্যাতীত অন্য ধর্ম পালন করে তারা আর বড় কাফের হচ্ছে যারা সৃষ্টিকর্তাতেই বিশ্বাস করে না তারা। নাস্তিকরা হচ্ছে বড় কাফের কারন তারা সৃষ্টিকর্তাতেই বিশ্বাস করে না।

ইহুদী ও খ্রিষ্টানেরা কাফের হলেও তাদের আহলে কিতাব হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আহলে কিতাব মানে আল্লাহর কিতাবধারী জাতি। কাফেরদের মধ্যে একমাত্র ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের সাথে মুসলমানদের বিয়ে শাদি করা জায়েজ আছে। তাদের ধর্ম পাল্টানোর দরকার নেই। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) খ্রিষ্টানদের সাথে মুসলমানদের এক চুক্তিতে বলেছেন কোনো মুসলমান তার খ্রিষ্টান স্ত্রীকে চার্চে যেতে বাধা দেবে না। তবে কাফেরদের মধ্যে কোনো অবস্থাতেই মুশরিক বা পৌত্তলিকদের সাথে বিয়ে করা জায়েজ নয়। এই বিয়ের আগে মুশরিককে অবশ্যই ইসলাম গ্রহন করতে হবে। তা না হলে এই বিয়ে হবে সম্পূর্ন হারাম এবং সন্তানরা হবে নাজায়েজ।


মুশরিক

ইসলামে মূর্তিপূজা অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। তওবা না করলে এ পাপ থেকে পরিত্রানের উপায় নেই। যারা মূর্তিপূজা করে তাদের বাংলায় বলে পৌত্তলিক। আরবীতে বলা হয় মুশরিক। ইংরেজীতে বলা হয় প্যাগান। আরবে একসময় মুশরিক ছিলো প্রচুর। তারা হাজার হাজার দেব দেবীর মূর্তি বানিয়ে পূজা করতো। ইসলাম প্রচারের পর বহু মুশরিক ইসলাম গ্রহন করে। বর্তমানে মুশরিক কারা? বর্তমানে মুশরিক হচ্ছে হিন্দু,বৌদ্ধ,জৈন ও কিছু প্যাগান গোষ্ঠী। দেব-দেবীতে বিশ্বাস ও মূর্তি বানিয়ে পূজা করলেই সে মুশরিক।

ইসলামে মূর্তি বানানো পাপ হিসেবে ধরা হয় তবে ভাষ্কর্য বানানো জায়েজ আছে। মূর্তি হচ্ছে যেটা পূজার জন্য বানানো হয় আর ভাষ্কর্য হচ্ছে যেটা শিল্প নিদর্শন হিসেবে বানানো হয়।


এখন মুশরিক যারা তাদের মন্দিরে গিয়ে কি সব মূর্তি ভেঙ্গে দিতে হবে? না। কারন সূরা কাফেরুনে বলা আছে যার যার দ্বীন তার তার কাছে। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই অন্য ধর্মের লোকদের মন্দিরে গিয়ে মূর্তি ভাঙ্গা যাবে না। শধু নিজেকে কোনো অবস্থাতেই মূর্তিপূজায় জড়ানো যাবে না।


মুরতাদ

মুরতাদ হচ্ছে সেই লোক যে প্রথমে ইসলাম গ্রহন করেছিলো কিন্তু পরে ইসলাম ত্যাগ করে। মুরতাদ শব্দ এসেছে আরবী ইরতিদাদ শব্দ থেকে। যার অর্থ হচ্ছে পিছনের দিকে ফিরে যাওয়া। আল কোরআনে মুরতাদের জন্য দুনিয়ায় কোনো শাস্তির কথা উল্লেখ নেই তবে হাদীস অনুসারে মুরতাদের শাস্তি হচ্ছে তাকে হত্যা করা। তবে শুধু মুরতাদ হলেই তাকে হত্যার নির্দেশ নেই। যদি কোনো মুরতাদ সমাজে ফিতনা সৃষ্টি করে তবে তখনই কেবল তাকে হত্যার নির্দেশ আছে। মুসলিম থেকে অমুসলিম হয়ে গেলেই তাকে হত্যার নির্দেশ নেই। যদি কেউ এমন নির্দেশ দেয় তবে সেটা স্পষ্টতই শরীয়ত বিরোধী।


মালাউন

ইসলামী শরীয়তে কোথাও এই শব্দের প্রয়োগ নেই কিন্তু কিছু গোঁড়া মানুষ আছে যারা অন্যকে মালাউন বলে গালি দেয়। মালাউন শব্দের অর্থ লানত প্রাপ্ত বা অভিশাপ প্রাপ্ত। কোন অবস্থাতেই কোন মুসলমান মালাউন শব্দ ব্যবহার করতে পারে না। কারন এটা স্পষ্টতই একটা গালি। আপনাকে যদি বলা হয় আপনি লানত প্রাপ্ত তাহলে নিশ্চয়ই আপনি সেটা গালি হিসেবেই ধরে নিবেন। মালাউন শব্দ ব্যবহার করে কাউকে গালি দেয়া নাজায়েজ কারন কাউকে গালি দেয়া ইসলামে হারাম। গালি দেয়া থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।


একমাত্র মালাউন ছাড়া অন্য শব্দগুলো কোনো গালি না। তবে কাফের শব্দ যদি কোনো মুসলমানকে উদ্দেশ্য করে বলা হয় তবে শুধু সেক্ষেত্রে এটাকে গালি হিসেবে ধরে নিতে হবে। ইহুদীরা ইহুদী ছাড়া বাকি সবাইকে জেন্টাইল বলে। ঠিক তেমনি মুসলমানরা অমুসলিমদের অবিশ্বাসী বা কাফের বলে।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles