একটা মেয়ে ২৫-৩০ পর্যন্ত বাবা মায়ের বাড়িতে থেকে বড় হয় । যতটুকু আদর যত্ন, মায়া সব ওইখান থেকেই সংগৃহীত । সব মায়া কাটিয়ে সে যখন সম্পূর্ণ অচেনা একটা পরিবেশে এসে ঠাঁই নেয় স্বভাবতই সেখানে খাপ খাওয়াতে একটু কষ্ট হবে বৈকি । তথাপিও মেয়েরা মায়ের জাত খুব সহজেই তারা পারে সম্পূর্ণ অচেনা একটি পরিবারকে আপন করে নেয় ...... । যৌথ ফ্যামিলীতে হয়তো একটু বেশীই কষ্ট হয় খাপ খাওয়াতে । সবার মন মানসিকতা সমান হয় না । তারপরও স্বামীর সংসার আঁকড়ে পড়ে থাকেন ।
কিন্তু অনেক ফ্যামিলীতে দেখা যায় মা বাবা থাকেন গ্রামের বাড়িতে । তার পাঁচ ছয়টি ছেলে ঢাকায় বড় চাকুরী করার সুবাদে ঢাকা থাকেন তাদের ফ্যামিলী নিয়ে । আর মা বাবা পূর্ব পুরুষের ভিটা মাটি আঁকড়ে কষ্টেসৃষ্টে গ্রামের বাড়ি পড়ে থাকেন অবহেলায় ।
আর এদিকে ছেলের বউরা থাকেন তার স্ট্যাটাস সমাজ, ছেলেমেয়ের পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত ।
...... মা বাবা তার আদরের ছেলে সন্তানদের কষ্ট করে মানুষ করেন তার ছেলের উজ্জল ভবিষ্যতের আশায় । আর আশা শুধুই গুরে বালিতে পরিণত হয় । সবাই উচ্চ শিক্ষা নিয়ে শহরে চলে আসে চাকুরী নিয়ে । আর মা বাবা পড়ে থাকেন অবহেলায় । এই হল আমাদের ছেলে সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত ।
যাই হোক লেখা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে । যাক ব্যপার না .........
এলোমেলো ভাবনা থেকেই লেখার সৃষ্টি...
**************
গ্রামের বাড়ি থেকে মা আসছেন শহরে ডাক্তার দেখাতে । তার আদরের বউমা তার শ্বাশুড়ি বলতেছেন... মা আপনি আসলেন আর দেখেন ঘরে বাজার টাজার কিছুই নাই । কি যে রান্না করব বুঝতেছি না ।
-ফ্রিজে দেখলাম মাংস আছে আর মাছও আছে । যা হয় একটা রেধে নাও
-না মা, এগুলো সব পাশের বাসার ওরা রেখে গেছে আমাদের ফ্রিজে ।
-আচ্ছা তোমার যা ইচ্ছা কর মা...... আমার একটা হলেই হবে
পাশে থাকা নাতি তার দাদুকে বলছে দাদু, মা মিথ্যা বলছে আমাদের ফ্রিজে কেউ কোনদিন কিছুই রাখে না । এসবই আমাদের ।
*************
মা আসছেন কয়দিন ঢাকা থাকবেন বলে । বয়স ৬০/৬৫ । তার বউমা পাতে তুলে দিচ্ছেন এক টুকরা হাড় ।
-আমার তো দাত নাই মা, খেতে পারবো না
-চিবিয়ে খেতে হবে না চুষে খান ।
কয়দিন থাকতে না থাকতেই বিরক্তি চরম পর্যায়ে । বাচ্চাদের পড়াশুনা নষ্ট হচ্ছে । ঘরে থাকার জায়গা নাই । হেন তেন আরো কত কিছু ।
**********
এক মা গ্রাম থেকে এসেছেন ছেলের বাসায় । ছেলের বউ বাসায় রান্না করছে পোলাও আর সাথে বেগুন দিয়ে মাংস ।
খেতে বসে তার ছেলেই মুখে ভাত তুলছে না । কারণ কি জানতে চাইলে বলে আমাদের বাসায় তো কখনো পোলাওর সাথে বেগুন মাংস খাওয়া হয়নি এরকম খাবার খাব কিভাবে?
*************
দেশের বাড়ি থেকে বুড়ো মাকে তার ছেলেই আদর করে নিয়ে এসেছে কয়দিন থাকবে বলে । তাই বলে তার ব্যবহৃত সব জিনিসই আলাদা ? প্লেট, গ্লাস সবই আলাদা । থাকার জায়গাও স্টোর রুমে ছোট খাট ফেলে । হায়রে কষ্টে বড় করা ছেলে । সে থাকবে এসি রুমে । মা থাকবে গরমে চিপা রুমে ।
***********
দেশের বাড়ি থেকে আসা বুড়ো মা এসেছেন কয়দিন ঢাকা শহর দেখবেন বলে । তাই বলে কি তাকে বসে খেতে হবে নাকি?
ছেলের বউ তার বাচ্চাদেরকে কোচিং এ নিয়ে যাবে আর শ্বাশুড়ী ভাত তরকারী রান্না করবেন । বাহিরের কাপড় এনে ভাজ করবেন আর ঘর ঝাড় দিবেন । কাজের বুয়া দেশে গেছে । কয়দিন বাসায় কাজের মানুষ নাই । এসব আদরের ছেলের মাকে বুঝতে হবে ।
*********
ছেলের বউয়ের মা এসেছে বেড়াতে তার মেয়ের বাসায় । কি হুলস্থুল কান্ড!!!!!! বাজার করতে হবে ব্যাগ ভর্তি । রান্না ঘর বুঝাই দেয়া মাছ মাংস সবজি দিয়ে ।
তার মা কি কি পছন্দ করেন তার তালিকা ইতিমধ্যে রেডি হয়ে গেছে । অপরপক্ষে ছেলের মা আসলে ছেলের বউয়ের মুখের কথা বন্ধ তার স্বামীর সাথে । কয়দিন থাকবেন যাবেন কোনদিন? বাসায় বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে এ নিয়ে স্বামীর সাথে ঝগড়া লেগেই থাকে ।
একটা মেয়েই সব কিছু পারে...... একটা সংসারে সুখ দুখে সঙ্গী হয়ে থাকতে । সবার মাঝে আনন্দ কষ্ট ভাগাভাগি করতে ।
যে মেয়ে তার শ্বাশুড়ীর সাথে এমন ব্যবহার করছে/করে তারও কিন্তু একটা/দুইটা ছেলে আছে এবং সেও শ্বাশুড়ী হবে একদিন । সে এমন ব্যবহারই কিন্তু পাবে । দুনিয়া হচ্ছে ধার উদ্ধারের জায়গা ।
আসলে আজ লেখাটি এলোমেলো হওয়ার কারণ লিখতে বসেছি আর একটু পর পর আপারা আইস্যা কাছে বসে গল্প জুড়ে দিছে আর ডিপার্টমেন্টে ১৫২ জন এডি জয়েন করতেছে । পুরাই হযবরল অবস্থা । পুরা ডিপার্টমেন্ট গম গম করতেছে ।
অনেকগুলো পয়েন্ট মাথায় নিয়ে লিখা আর হল না । সব ভুলে গেছি । মনে হলে আবারও লিখে ফেলব ।
এতো গেলো মেয়েদের স্বার্থপরতা । এর মধ্যে অনেক শ্বাশুড়ীও আছেন যারা বউদের জ্বালিয়ে পুড়িয়ে জীবন ত্যানাত্যানা করে দিতেছেন আবার অনেক বজ্জাত জামাই আছে যারা বউকে সম্মান করে না । নিজের মারে সম্মান দেয় আর বউয়ের মারে দেখতেও পারে না । আজব আমাদের সমাজ আজব আমাদের মনমানসিকতা ।
যাই হোক ভুল ত্রুটি মার্জনীয় ।