অন্য গ্রহের ফুটবল খেলে কোন লাভ হচ্ছে না বার্সেলোনার
সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে ২-২ গোলে রুখে দিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছে চেলসি। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে চেলসি ১-০ গোলে জিতেছিলো।
চেলসির গোল দুটো করেন রামিরেস ও বদলি ফার্নান্দো তরেস। বার্সার দুই গোলদাতা সার্জিও বুস্কেটস ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
ন্যু ক্যাম্পে তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। অ্যালেক্সিস সানচেজের সঙ্গে বল দেয়া-নেয়া করে, চেলসির বক্সের ডান দিক থেকে শট নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। কিন্তু বল বাইরের জালে জড়িয়ে যায়।
১৯ মিনিটে আবার স্বাগতিকদের জন্য হতাশা। সেস ফ্যাব্রেগাসের চমৎকার ব্যাকহিল ধরে গড়ানো শট নেন মেসি। তবে দারুণ দক্ষতায় পা দিয়ে সেই শট ফিরিয়ে দেন চেলসির গোলরক্ষক পিওতর চেক।
পরের মিনিটেই ফ্যাব্রেগাসের জোরালো ভলি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তার দুই মিনিট পর হাভিয়ের মাসচেরানোর দূর থেকে নেয়া শট চেলসির ক্রসবারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
তবে ৩৫ মিনিটে আর হতাশায় পুড়তে হয়নি বার্সাকে। বাঁ দিক থেকে আসা আইজাক কুয়েনকার নিচু ক্রস ঠান্ডা মাথায় জালে জড়িয়ে দেন বুস্কেটস।
তার দুই মিনিট পর অতিথিদের জন্য আরেকটি ধাক্কা। সানচেজকে মারাত্মক ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন চেলসির অধিনায়ক জন টেরি।
৪৩ মিনিটে মেসির থ্রু ধরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইনিয়েস্তা।
তবে বিরতির ঠিক আগে ২-১ করে ফেলে চেলসি। ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দারুণ পাস ধরে, নিখুঁত চিপে বল স্বাগতিকদের জালে জড়িয়ে দেন রামিরেস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পেনাল্টি পেয়ে যায় বার্সা। ৪৮ মিনিটে বক্সের মধ্যে দিদিয়ের দ্রগবা ফ্যাব্রেগাসকে ফাউল করলে বেজে ওঠে রেফারির পেনাল্টির বাঁশি।
কিন্তু সুবর্ণ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি চ্যাম্পিয়নস লিগে এ মৌসুমে রেকর্ড ১৪টি গোল করা মেসি। গত তিন বারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
৫৪ মিনিটে আবার হতাশ হতে হয় স্বাগতিকদের। দানি আলভেসের ক্রস থেকে সানচেজের হেড সাইড বারের সামান্য বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
৬২ মিনিটে কুয়েনকার শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে বার্সাকে আবার হতাশ করেন চেক।
যেহেতু ২-১ গোলে জিতলেও কোনো লাভ নেই, তাই আরেকটি গোলের জন্য একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে গেছে বার্সা। কিন্তু জাভি-ইনিয়েস্তা-বুস্কেটসদের প্রচেষ্টা কোনো-না-কোনো ভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
চেলসির দশ জনই নিচে নেমে কোনো রকমে বিপদমুক্ত করেছে দলকে।
৮২ মিনিটে অবশ্য বল জালে জড়িয়ে দিয়েছিলেন আলভেস। তবে তার আগেই অফসাইডের বাঁশি বেজে ওঠায় বাতিল হয়ে যায় গোলটি।
তবে পরের মিনিটে স্রেফ ভাগ্যদোষে গোল পায়নি স্পেনের গত তিন বারের চ্যাম্পিয়নরা। মেসির শট সাইড বারে লেগে ফিরে এলে আবার বেঁচে যায় চেলসি।
এরপর মাসচেরানো-পুয়োল-আলভেসরা যেমন সুযোগ নষ্ট করেছেন তেমনি চেকও বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন অতিথিদের।
যখন মনে হচ্ছিলো গোল আর হবেই না ঠিক তখনই গোল! তবে স্বাগতিক-সমর্থকদের বুক ভেঙ্গে দিয়ে তাদেরই জালে।
গোলের জন্য মরিয়া বার্সার গোলরক্ষক ছাড়া প্রত্যেকেই তখন চেলসির সীমানায়। প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ ব্যর্থ হওয়ার সুবাদে বল পেয়ে যান ৮০ মিনিটে দ্রগবার বদলে মাঠে নামা তরেস। বল পায়ে লম্বা দৌড়ে বার্সার বক্সে ঢুকে ভালদেসকে বোকা বানিয়ে ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করেন স্পেনের এই স্ট্রাইকার।
আর চেলসিও মেতে ওঠে ফাইনালে ওঠার আনন্দে।
http://www.bdnews24.com/bangla/details. ;id=192278