আমি ঘরে বসে ল্যাপিতে চ্যাট করতেছি, তখন শুনতে পাইলাম পাশের রুম থেকে কে যেন ফিসফিসিয়ে কথা বলতেছে। গিয়ে দেখি সারিম ভাই বিছানার ওপর ফেডোরার লোগোর আকৃতি ধারণ করিয়া বিশেষ ভঙ্গিমায় ও গলায় স্বরে অন্তরের সমস্ত লুকানো আবেগ নিয়ে কার সাথে কথা বলতেছে। তখন হঠাৎ করে কয়েকদিন পূর্বে দেয়া সারিম ভাইর স্ট্যাটাসের কথা মনে পড়ল! আহা, এই শীতে ভাইয়ের হৃদয়ে ডাকিতেছে বসন্তের কোকিল!
সারিম ভাইয়ের দোষ দেয়া যায় না, বেচারা এতকাল একা থেকে একটু দোকা হওয়ার চিন্তা করতেই পারে! হাজার হোক এটি মানুষের মৌলিক অধিকার। আমাকে দেখে হঠাৎ করে সোজা হয়ে মুখ দিয়ে বিদ্ঘুটে এক আওয়াজ করে ফোনটা রেখে ভাই কইল, "কিরে?" তখন আমি প্রাণ খুইলা হাসতেছি! সারিম ভাই রাইগা কয়, "হইছে, আচ্ছা জিনডিয়ান রেস্টোরেন্ট টা কোথায় রে?" "ক্যান, ভাবিরে নিয়া যাইবেন? উনিও ঢাকা আইছে!" সারিম ভাই মনে হয় একটু লজ্জা পাইল...
কিছুক্ষণ পরে দেখি ভাইজান docs.python.org এর বদলে ডেটিং টিপস সাইটে ঘোরাঘুরি করতেছে। আহারে, আমরা কি তাহলে একজন সেরা প্রোগ্রামার হারিয়ে ফেললাম?
আমিঃ ভাইজান, পাইথন ডকুমেন্টেশনের বদলে ডেটিং টিপস...
সারিমঃ দেখ, জীবন তো একটাই, সবকিছুর ফ্লেভার নেয়া চাই।
আমিঃ তা ঠিক আছে, তবে এই জিনিসের ফ্লেভার কেমন?
সারিমঃ দেখ মিয়া, এইডা আমার প্রাইভেট AES-Blowfish-DES এনক্রিপ্টেড ব্যাপার।
আমিঃ আচ্ছা, ঠিক আছে। জিগাইলাম না।
সারিমঃ ভালো কথা, ধানমন্ডি লেকটা কোনদিকে?
আমিঃ ভাবিরে নিয়া জিনডিয়ানে যাইবেন না, ওইখানেই আশেপাশে...
সারিমঃ ওহ। আচ্ছা। আমি একটু বাইর হইতেছি
[কিছুক্ষণ পর]
আমিঃ সারিম ভাই, ওইটা বাথরুমের দরজা, বাইরে যাওয়ার দরজা সামনে...।
কাহিনী বুইঝা আমিও সারিম ভাইর পিছু নিলাম, উনি রিক্সা ডাইকা জিনডিয়ানে গেল, আমিও ফলো করতেছি। জিনডিয়ানে নাইমা দেখি সারিম ভাই ভুলে আবার মাস্টারকার্ড দিছে। পরে অবশ্য ভুল বুঝতে পাইরা জিভ কেটে ১০ টাকার কড়কড়ে নোট রিক্সা-ওয়ালার হাতে তুলে দিছে। এর পরপরই মুখটা কাচুমাচু কইর্যা সারিম ভাই এক আপার সামনে গিয়া দাড়াইল, বুঝলাম, এই আমাগো ভাবি! বুকের বামপাশে কেমন একটা ব্যাথার মত অনুভব করলাম!