দেশবাসী চায় সকল প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়। তাই বর্তমান মহাজোট সরকারের সময়েই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা শুরু হয়েছে
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. শফিউল আলম বুলুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে বগুড়ার রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার ধুন্দার গ্রামের মৃত কুঞ্জু বিহারী দাসের ছেলে চৈতন্যনাথ দাস বাদী হয়ে বগুড়ার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ মামলাটি করেন। আদালতের আদেশে বিষয়টি তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত শফিউল আলম বুলু বর্তমান নন্দীগ্রাম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নার পিতা।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নন্দীগ্রাম উপজেলার চৌদিঘি আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম বুলু ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাক হানাদার বাহিনী সৃষ্ট ‘পিস কমিটি’ ভাটরা ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারি মনোনীত হন।
‘পিস কমিটি’র সেক্রেটারি থাকাকালে তিনি ভাটরা ইউনিয়নে পাকিস্তানি মিলিটারি ও রাজাকারদের দোষর হিসেবে তাদের সহযোগিতায় ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২২ মে শনিবার রাত আনুমানিক তিনটার সময় শফিউল আলম বুলুর নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৩৫ জন পাকসেনা ও রাজাকার মামলার বাদীর বাড়ির গরু, মহিষ, টাকা পয়সা ও গৃহস্থলীর সামগ্রী লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে লুটপাটের দ্রব্য সামগ্রী নন্দীগ্রাম আর্মি ক্যাম্পে রাখে।
এছাড়া একই দিন সকালে উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বামনগ্রামের পূর্ণ চন্দ্র, মুনীন চন্দ্র সাহা, প্রাণবন্ধু কবিরাজ, রবী প্রামাণিক, রঘুনাথ প্রামাণিক, বলাই চন্দ্র, ছকিরাম দাশ ও রামনাথকে আটক করে। এরপর পূর্ণ চন্দ্রের বাড়ির সামনে উঠানে একত্রিত করে।
এ সময় শফিউল আলম বুলু এক রাজাকারের হাত থেকে রাইফেল নিয়ে পূর্ণ চন্দ্র সাহাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপরই পাক হানাদাররা ব্রাসফায়ার করে আটকদের হত্যা করে।
মামলায় আরো বলা হয়, বর্তমান সরকারের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধীদের তালিকাতেও শফিউল আলম বুলর নাম রয়েছে। দায়েরকৃত এ মামলায় ১৮জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।