সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনধারায় নানা পরিবর্তন আসছে। খাদ্যাভ্যাসও বদলে যাচ্ছে ক্রমেই। নাগরিক জীবনে ব্যস্ততার চাপ সবাইকে কোণঠাসা করে তুলছে। সবাই এখন সময়ের সীমাবদ্ধতাকে কাটাতে নানা উপায় খুঁজে বের করছেন। চারদিক সামলানো একজন অফিসগামী নারীর পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। তেমন অবস্থায় হাতের কাছে হিমায়িত প্যাকেটজাত খাবার পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দোকানে, সুপারশপে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক নারী-পুরুষ এ ধরনের খাবারের প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হচ্ছেন। কর্মজীবী নারী থেকে শুরু করে গৃহিণী, শিক্ষার্থী ও ব্যাচেলরদের কাছেও হিমায়িত প্যাকেটজাত খাবারদাবারের জনপ্রিয়তা সহজেই চোখে পড়ে। সকাল-বিকালের নাশতা বা নিত্য রান্নার প্রয়োজনেই অনেকেরই ভরসা এখন হিমায়িত প্যাকেটজাত খাবার বা তৈরি খাবার। জীবনযাপনের পরিবর্তন ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমায়িত খাবারের প্রতি মানুষের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে। আগে এসব খাদ্যপণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। এখন দেশেই বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। বাজার ধরতে এসব প্রতিষ্ঠান এ খাতে বেশ বড় অঙ্কের বিনিয়োগও করছে। এ খাদ্যপণ্যের তালিকায় রয়েছে নানা মুখরোচক খাবার। রুটি, পরোটা, শিঙাড়া, ডালপুরি, আলুপুরি, সমুচা, রোলসহ মুরগির গোশত দিয়ে তৈরি নাগেটস, চিকেন সসেজ, মিটবল, স্প্রিংরোলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য চমৎকার প্যাকেটে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সুপারশপ এবং অলিগলির বড় বড় দোকানে। হিমায়িত খাদ্যপণ্যের ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আজকাল অনেক দোকানদার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হিমায়িত খাদ্য সামগ্রী রাখছেন। বিভিন্ন সুপারশপে হিমায়িত খাবার ছাড়াও প্যাকেট করা কাটা সবজি, মুরগির গোশতসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠাজাতীয় খাবারও পাওয়া যায় এখন। পুডিং, তেলে ভাজা ও নকশা করা পিঠা, মুখরোচক বিভিন্ন স্বাদের হালুয়া ও মিষ্টির চাহিদাও অনেক। এগুলো সাধারণত ঘরে তৈরি করে দোকানে দোকানে বিক্রির জন্য দিয়ে থাকে অনেক নারী উদ্যোক্তা। মূলত মানুষের ব্যস্ত জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে এখন অনেকেই তৈরি হিমায়িত খাদ্যের প্রতি ঝুঁকছেন। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে এ ধরনের হিমায়িত খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা রাজধানী ঢাকা শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে এরই মধ্যে দেশের বড় বড় শহরে সম্প্রসারণ করছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের হিমায়িত খাবার সামগ্রী বিক্রির জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিজস্ব আউটলেট খুলেছে। পাশাপাশি সুপারশপ ও সাধারণ মুদি দোকানে তাদের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান সময়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের রয়েছে সর্বাধিক সম্ভাবনা। যথাযথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এসব থেকে পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ এবং এ সেক্টরের উন্নয়ন ঘটতে পারে।
↧