Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

দায়িত্ববান হোন, দায়িত্ব নিন

$
0
0

পৃথিবীর প্রতিটি শিশুই যেন সুন্দর আগামীর স্বপ্ন, সোনালি স্বপ্নিল ভবিষ্যৎ। তবে সে ভবিষ্যতের ঘুমন্ত বিবেক জাগিয়ে জ্ঞানের পরিধি বাড়ায় বই। একটি ভালো বই-ই পারে মানুষের জীবনকে বদলে দিতে, পারে শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে গড়ে তুলতে। শিশুদের জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে  ভালো বইয়ের প্রয়োজনীয় খুব বেশি। শিশুদের মেধা গঠনে সহায়ক, সময়োপযোগী, শুদ্ধ ও মানসম্মত বইয়ের মাধ্যমেই জ্ঞানার্জনের অভ্যাস করানো উচিত। একটি মানসম্মত বই-ই তাদের সুস্থ মানসিকতা ও ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বই-ই তাদের মধ্যে জ্ঞানের কৌতূহল সৃষ্টি এবং বুদ্ধিবৃত্তিক প্রজ্ঞাকে সদাজাগ্রত মনোভাবে রুপান্তরিত করে। বই জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন করে পাঠকের আত্মাকে উদ্বেলিত করে জ্ঞানপিপাসায় উদ্যমী করে। ভালো ও মানসম্মত বইই আমাদেরকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে। মানবতার দক্ষ কারিগর দেশের সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিসেবী। একটি ভালো বইই পারে তাদের তৈরি করতে। এ জন্য মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করা একান্ত জরুরি। বলা হয়ে থাকে, শিক্ষাই আলো বা জ্ঞানই আলো। জগতে যত আলো পাওয়া যায়, যত নীতি-আদর্শ, যত গতি-প্রগতি সবই বইয়ের মধ্যেই নিহিত। প্রকৃত শিক্ষার অভাবে ধর্মের মর্মকথাও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, অপব্যাখ্যা মানুষকে বিপথগামী করে। আগে দর্শনধারী, তারপর গুণবিচারী - কথাটি সর্বৈব সত্য। একজন শিক্ষিত মানুষের সর্বোত্তম বন্ধু হচ্ছে একটি ভালো মানের বই। বইই হচ্ছে আগামী প্রজন্ম তৈরির মূল হাতিয়ার। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরি হয় আজকে প্রকাশিত বই পড়েই। এখন কথা হচ্ছে, আমরা কী পড়াচ্ছি, আমাদের শিশুরা কী পড়ছে? আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় শিশুদের রঙিন আর মানসম্মত বই খুবই প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ অভিভাবকই শিশুদের শিক্ষা সম্পর্কে উদাসীন, না হয় অসচেতন। উচ্চবিত্তের একটি অংশ রাতদিন ব্যবসা বাণিজ্য বা পেশাগত অন্য ব্যস্ততায় মগ্ন। নিজ সন্তানদের ঠিকমতো সকাল-সন্ধ্যা সময় দেয়াই তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না, পড়ার খবর নেয়ার সুযোগ কই তাদের? তাদের সন্তানেরা স্কুলের শিক্ষক আর গৃহশিক্ষকের কাছ থেকেই শিক্ষার মূল পাঠটা শিখে নেয়। অন্যদিকে মধ্যবিত্ত পরিবারের মা-বাবা কখনো-সখনো একটু চেষ্টা করেন নিজেদের ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে সন্তানদের পড়াশোনায় সময় দেয়ার। তবে নিম্নবিত্ত বাবা-মায়ের বেশিরভাগই রুটি রোজগারের জোগান দিতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়ার খোঁজখবরই নিতে পারেন না। এমন পরিপ্রেক্ষিতে শিশুদের মনোযোগী আর শিক্ষা অর্জনে আগ্রহী করে তুলতে পারে আকর্ষক বই। তবে শিশুরা এখন থেকেই যদি ভুল শেখে তাহলে আজীবন তা তাদের মধ্যে থেকে যাবে। তাই পাঠ্যপুস্তকে বিদ্যমান ভুলের দায় এড়াতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বছরের গোড়াতেই দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ, জাতীয় নীতিনির্ধারক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে একটি সভায় মিলিত হতে হবে। সেখানেই নির্ধারিত হবে জাতির ভবিষ্যৎ নাগরিকদের কোন কোন বিষয়ে, কী কী শিক্ষাদান আবশ্যক। সে বিষয়গুলোই পাঠ্যবইয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পান্ডুলিপি নির্ভুল না হলে বই নির্ভুল হওয়া সম্ভব নয়, সে কারণে ছাপতে দেয়ার আগেই বিশেষজ্ঞ কর্তৃক পান্ডুলিপি মূল্যায়ন করানো আব্যশক। বানানরীতির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত বানানরীতি অনুসরণ করাই কর্তব্য। তবে শিশুদের প্রারম্ভিক পরিবেশ মানসম্মত করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে শিক্ষার সুষ্ঠু ও মানসম্মত পরিবেশ তৈরির সময়োপযোগী বহুরৈখিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন, সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা, যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদানের জন্য ডিজিটাল সিস্টেম প্রবর্তন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালুকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি, ইত্যাদি সময়োপযোগী উদ্যোগ নিয়েছে। ধর্মীয় গোঁড়ামি ও অজ্ঞতা থেকে বের করে শিশুদের জাতির ভবিষ্যৎ নাগরিক হিসেবে আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে প্রয়োজনে সরকারকে নির্মম ও নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে যে কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দায়িত্ববান হয়ে, দায়িত্ব নিয়ে, চিহ্নিত সমস্যার সমাধান সকলকে সম্মিলতভাবে এগিয়ে আসতে হবে – তাহলেই সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠবে এদেশের আগামী প্রজন্ম।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>