আামার দেখা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
১
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের কোন একদিন পরন্ত বেলায় বর্তমান জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপ-জেলার ৮ নং আওলাই ইউ:পি:’র হিন্দু বসতি ছোট এক গ্রাম তেলকুড়িতে আমি ও আমার বন্ধু শাহাজাহানসহ ঘুরতে ঘুরতে উপস্থিত। বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফুটন্ত সন্ধ্যা মালতি ফুলের সুবাস ও মালিক হারা একটি বিড়াল মেউঁ মেউঁ করে আমাদেরকে স¦াগতম জানালো। সমস্ত গ্রামে কেহ কোথাও নাই, বসতবাড়ী ঘর সমস্ত ভেংগে পরে আছে, বড় বড় বিভিন্ন গাছ ও বাঁশঝাড় রাজাকারেরা কেটে নিয়ে গেছে। চারি দিকে শুধু হাহাকার। ১৯৭১ সালে পরাধীন বাংলার ১০টা গ্রামের মত এই গ্রামেরও একই দৃশ্য।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে ঘোড়াঘাটের করোতোয়া নদীর পূর্ব পার্শ্বে আম বাগানে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন ব্যাক্তিদের নিয়ে একদল মুক্তি বাহিনী অবস্থান করতেছিল। তাঁদের অস্ত্রের প্রয়োজন হেতু তাঁদের একজন ব্যাক্তিকে জয়পুরহাটের ড: মফিজ উদ্দিন চৌধুরী এমপি’র নিকট অস্ত্রের জন্য সংবাদ পাঠায়। ড: মফিজ উদ্দিন চৌধুরী জীপ নিয়ে মাঝপথে আমাকে তুলে নিয়ে ঘোড়াঘাটের উক্ত আম বাগানের মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে আসেন। ইতি মধ্যে পলাশবাড়ীর আজিজার বিএসসি এমপি ও ঘোড়াঘাটের ইউ:পি:’র চেয়্যারম্যান মজিবর রহমানসহ উপস্থিত। মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পের ইনচার্জের সংগে কি কি অস্ত্রের দরকার, তার লিষ্ট করে আমাদেরকে অথাৎ মুক্তিবাহিনীর একজন, আজিজার বিএসসি এমপি, মজিবর রহমান চেয়ারম্যান ও আমিসহ এক জীপে প্রথমে হিলি পরে **ুরঘাটের মিত্র বাহিনীর নিকট থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে ঘোড়াঘাট মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে তা পৌছে দেওয়া হলো।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের আমাদের গ্রামের বেশ কিছু যুবক মুক্তি বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ইতি মধ্যে আমাদের গ্রামের দুইটি ছেলে ভারত থেকে ফিরে এসে অপ্রপ্রচার চালায় যে, ভারতের জয় বাংলার ছেলেদেরকে ধরে বন্দি করে, পরে তাদেরকে হত্যা করে। এটা তাদের ডাহা মিথ্যা প্রচার ছিল। পরে সত্য বের হয়, তারা ছিল জয় বাংলার বিরুদ্ধের লোকের ছেলেদ্বয়, এলাকার শ্বরনার্থীরা ভারতে তাদের চিনতে পেরে তাদেক বন্দি করে হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা পলাইয়া প্রাণ বাঁচায় এবং তারা মিথ্যা অপপ্রচারে মেতে উঠে। যাহা হউক, আমাদের গ্রাম থেকে কোন যুবক ভারতে যেয়ে মুক্তি বাহিনীতে আর যোগ দেওয়া হয় নাই। আমরা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে আত্বীয় ও বন্ধুদের বাড়ীতে যাযাবরের ন্যায় পালাইয়া দিন যাপন করতেছিলাম। গোপনে বাড়ী ও বন্ধুদের সংগে যোগাযোগ রক্ষা করে দিন কাটতেছিল এবং শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার
২
সদস্যদের ভয়ে গোপনে আমরা জয় বাংলার অনুষ্ঠান, বিবিসির বাংলা ভাষার অনুষ্ঠান ও কলকাতার বাংলার অনুষ্ঠান নিয়মিত ভাবে শুনতাম। সবচেয়ে প্রিয় অনুষ্ঠান ছিল, এম আর আকতারের জয় বাংলার মুক্তি বাহিনীর চিঠি।
১৯৭১ সালের ্্এপ্রিল ও মে মাসে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও অন্যন্যা অঞ্চল থেকে শিশু, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, তরুণ তরুনিসহ এক কথায় সব বয়সী শ্বরনার্থীরা আমাদের গ্রাম ও আশপাশ দিয়ে দলে দলে হিলি বর্ডার দিয়ে ভারতে যাচ্ছিল। রাজাকারেরা হিলি থেকে পূর্ব-দক্ষিনে বেড়াখাই চার মাথা মোড়ে শ্বরনার্থীদেক আটক করে সব কিছু ছিনে নিয়ে ছেড়ে দেয়। আমি ওখানকার হত্যার সংবাদ পাইনি।
১৯৭১ সালের ্্্্্্্্্্্এপ্রিল মাসের কোন একদিন বর্তমান জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপ-জেলার ৮ নং আওলাই ইউ:পি:’র আওলাই গ্রামের ২২ জন বিধবার বিলাপে আওলাই গ্রামের আকাশের বাতাস ভাড়ী হয়ে উঠে ছিল। তারা ঐ গ্রামের অলি গলিতে গড়াগড়ি দিয়েছিল। সেই করুণ দৃশ্য আজীবন ভুলবার নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হওয়ার পর আজও তাদের বিলাপ থামে নাই। তারা আজ পর্যন্ত কোনো সরকার হতে একটি টাকাও অনুদান হিসাবে পায়নি বা কোনো সরকার বা কেহ তাদের খোঁজ খবর নেয় নাই।
২২ বিধবার করুন কাহিনী জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ১৯৭১ সালের ্্্্্্্্্্্এপ্রিল মাসের কোন একদিন। ঐ গ্রামের শ্বরনার্থীদের জিনিষপত্র ভারতে দিয়ে, ফিরে আসার সময় কুখ্যাত জয়পুরহাটের রাজাকারের নেতা আ: আলীমের ডান হাত আটাপুরের শান্তি বাহিনীর সভাপতি ও ইউ:পি: চেয়ারম্যান ডা: রোস্তম আলীর লোকেরা (রাজাকার) দাবড়াইয়া ২৩ জনকে ধরে। ২৩ জনরে মধ্যে ১ জন ভাগ্যক্রমে পালায় এবং গ্রামে ফিরে আসে। তাদেক এক গ্রামে একটা ঘরে কয়েকদিন বন্দী করে রাখে। উক্ত ধৃত ২২ জনের আতœীয় স্বজনেরা জয়পুরহাটের আ: আলীম, ডা:রোস্তম আলী ও ৮নং আওলাই ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সভাপতি ও ইউ:পি: চেয়ারম্যানের নিকট ২২জনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ ও তদবির করে ব্যর্থ হয়। পরিশেষে হতভাগ্য ২২ জনকে পাক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাক বাহিনীরা পাঁচবিবি রেল ষ্টেশন থেকে উত্তর দিকে কিছু দূরে রেল লাইনের ধারে এক পুকুর পাড়ে, ধৃত লোকের হাতে গর্ত করায় এবং গতের্র নিকট লাইন করে তাদেক ব্রাশ ফায়ার করে মেরে মাটি চাাঁপা দেয়।
১৯৭১ সালে এপ্রিল মাসে ২য় সপ্তাহে আমাকে ইউ:পি:’র সচিব পদ থেকে জোর করে বের করে দেয়। পাঁচবিবি থানার শান্তি কমিটির সেক্রেটারী আয়ুব বিহারীর কথা আজও আমার কানে ভীষন
৩
ভাবে আঘাত করে। মোহাম্মদকে আজও ধরে এনে পাক বাহিনীর হাতে কেন তুলে দেওয়া হলো না? ততদিনে আমি পলাতক। আমার অপরাধ আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের লোক। শান্তি বাহিনী ও রাজাকারদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষের কার্য্যােকলাপ গুলি স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনের নিকট ফাঁস করে দেই, এই ভয়ে আমাকে উক্ত পদ থেকে তাড়ায়। আমার পদে নিয়োগের নিয়ম কানুনের কোন নীতিমালা না মেনে জৈনক এক রাজাকার কমান্ডারের ছেলেকে ইউ:পি:’র সচিব পদে কাজ করার হুকুম দেওয়া হয়। আর সারা বাংলাদেশ তো পাক বাহিনী, রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর অবৈধ্য দখলে, আমি তো কোন ছার। অবশ্য বাংলাদেশ স্বাধীনতার পরই আমি আমার ইউ:পি:’র সচিবের পদ ফিরে পাই। কিন্তু কোন ক্ষতি পুরন বা আমার বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করার জন্য কোন পক্ষ থেকে কোন মূল্যায়ন পাইনি। উপরন্ত আমাকে আগুন থেকে কড়াইতে তপ্ত গরম তেলে ফেলে দেওয়া হয়। কারন আমার ইউ:পি:’র বস হিসাবে পাক বাহিনীর ১নং দোসর শিরট্রীর তহশিলদারকে আমার ঘাড়ে চাপাইয়া দেওয়া হয়। উক্ত তহশিলদার শ্বরনার্থীদের সমস্ত জমি জমা, গরু, ছাগল, গাছ, বাঁশঝাড় ও পুকুরের মাছ রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সংগ্রহ করে তার মাত্র ২০% থানায় অবস্থিত পাক বাহিনীর নিকট পৌছে দিত, আর বাঁকী মোটা অংকের অর্থ নিজে এবং ইউ:পি:’র রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর সদস্যগনের মধ্যে বন্টন করে নিত। এইভাবে উক্ত তহশিলদার ও পাক বাহিনীর দোসর হাজার হাজার টাকা অবৈধ্য ভাবে আয় করে ছিল।
জৈনক রাজাকারের কমন্ডার ও কয়েকজন রাজাকার শ্বরণার্থীদের হালের বলদ ও জমি-জমা অবৈধ্য ভাবে জোর পূর্বক দখল করে। কেহ কেহ ২/৩টি হাল করে ৫/৬ একর জমি চাষ করে ধান আবাদ করেছিল, তাদের চাল চলন উর্দ্ধত্যপূর্ন ছিল। ধরাকে সরা মনে করতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তাদের কোন প্রকার বিচার হয় নাই।
স্বাধীনতার পর পরই আমি বিভিন্ন সূত্রে সে তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে ছিলাম। এরই মধ্যে উক্ত তহশিলদার এই সংবাদ গুলি জানতে পেরে জয়পুরহাট মহকুমার এসডিও’র নিকট আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করে। আমি আমার সাক্ষ্য প্রমানসহ তার অভিযোগের উত্তর এসডিও’র অফিসে দাখিল করি। ইতি মধ্যে আমি ঢাকায় প্রধান মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট মন্ত্রীর বরাবর সমস্ত বিবরন দিয়ে আবেদন করি। জয়পুরহাট এসডিও’র অফিসে আমার আবেদনের কপি আসে। এর ফলে আমার ঘাড় থেকে উক্ত তহশিলদারকে নেমে দিয়ে বিএসকে দায়ীত্ব দেয়। উক্ত পাক বাহিনীর দোসর তহশিলদারের আকাম-কুকামের বিচার পাইনি। সেই সময়ের পাকি:পন্থী জয়পুরহাটের এসডিও’র
৪
আচরন রহস্যজনক ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই ৮নং আওলাই ইউনিয়নের প্রাক্তন শান্তি কমিটির সেক্রেটারীকে (করে খাবার জন্য)ষ্ট্যাম্প উত্তোলনের জন্য সেই জয়পুরহাটের এসডিও তাকে লাই: দেন। ফলে ৫/=টাকার ষ্ট্যাম্প কালোবাজারে ১২৫/=টাকা বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ্য ভাবে কামাই করেছে। সে থানা শহরে বিরাট বাড়ী করেছে। ষ্ট্যাম্প ক্্রয়-বিক্রয় করে সে আগুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। সে সাথে ছেলে- মেয়েদেক লেখাপড়া শিখে ভালো পজিশনে উঠে। হায়রে আমার দেখা স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ! এই কি স্বাধীন বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম?
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই কোন একদিন আমি ঘোড়াঘাটের লালদিঘীর পাড়ে শত শত জনগনের সংগে আমিও উপস্থিত। কারন স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় শত শত শহীদের লাশ তোলা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে উল্ল্যেখ যোগ্য শহীদের লাশ হইতেছে, গোবিন্দগঞ্জ থানার প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা কামদিয়া গ্রামের মো: মাছুম চৌধুরী ও ঘোড়াঘাট থানার গোপালপুর গ্রামের প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা আ: রশিদ চৌধুরী। তাঁদের লাশ অক্ষত ছিল এবং এ নিয়ে অত্র এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল।
১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম¦রের পর পরই জয়পুরহাট থেকে ড: মফিজ চৌ:এমপি আমাকে চিঠি লিখে জানান যে, ৮নংআওলাই ইউনিয়নের যে সব স্থানে পাক বাহিনীর ক্যাম্প করেছিল মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর তাড়া খেয়ে অস্ত্র ফেলে তারা পালায়ছে। তুমি তোমার লোক দিয়ে সে অস্ত্র গুলি সংগ্রহ করে তোমার ইউ:পি: অফিসে বাক্সে ভালোভাবে সংরক্ষন করে রাখবে, ইহা খুবই গুরত্ব দিবে। পরে তোমার নিকট থেকে সে অস্ত্র গুলি আনবো। আমি আমার লোকদ্বারা ৮নং আওলাই ইউনিয়নের যেসব জায়গায় পাক বাহিনীর ক্যাম্প করেছিলো, সেই সব জায়গার আশপাশ থেকে অনেক গুলি চাইনিজ রাইফেল,ষ্ট্যান গান ও গুলির ম্যাগজিনসহ ইউ:পি: ্্্্্্্্্্্্্্অফিসে এনে একটি কাঠের বাক্সে চাবি দিয়ে রাখি এবং ড:মফিজ চৌ:এমপিকে তা জ্ঞাত করাই। আশপাশ অনেক যুবক কিছু অস্ত্র ও গুলি দেওয়ার জন্য ভীষন চাপ দিচ্ছিল। তারা বলতেছিল যে, আমারা ৮নং আওলাই ইউনিয়নকে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্য মুক্ত করতে চাই। আমি আমার বন্ধু শাহাজাহান জানতাম যে, এইটা তাদের তাল বাহানা মাত্র। আসলে তারা বিভিন্ন গ্রামের নিরিহ ধনী লোকদের বাড়ীতে ডাকাতি, হত্যা ও লুটতরাজ করে অঢেল সম্পদ অর্জন করতে চায়। আমরা মাত্র দুজন সেটা মানতে পারি নাই। রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর লোকেরা শ্বরণার্থীদের সব কিছু লুট করে তাদেক পথের ফকির করেছে, আমরা রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর লোকদেরকে অর্থ দন্ড করে শ্বরণার্থীদেক পুনর্বাসন করি, এইটা আমার এবং বন্ধু শাহাজাহানের দুজনের মত ও পরিকল্পনা।
৫
রিলিফ কমিটির লোভী চেয়ারম্যান, সদস্য ও নামধারী ছাত্রলীগ সদস্যরা সরকার হতে শ্বরনার্থীদৈর জন্য যে, অর্থ ও কম্বল ও অন্যান্য কাপড় বরাদ্দ আসতো তা প্রথম থেকে লুটপাট শুরু করলো। আমরা অর্থাৎ আমি,আমার বন্ধু ও কয়েকজন খাঁটি আওয়ামীলীগ কর্মী প্রানপনে বাঁধা দিয়ে অবৈধ্য লুটপাটকারীদেক থামাতে পারি নাই। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর পরই রিলিফ কমিটির লোভী চেয়ারম্যান, ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারীর নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থ অবৈধ্য ভাবে নিয়ে, খুবই চাতুরি করে বঙ্গবন্ধু নিকট তাদেক আত্বসর্ম্পন করে ইউনিয়নে ফিরে নিয়ে আসে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর নিকট তারা শপথ করে বলে যে, তারা কাহাকেও হত্যা বা কাহারো বাড়ীতে আগুন দেয় নাই এবং ঐ লোভী রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যানও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়। তারা ইউনিয়নে ফিরে এসে সকলের সামনে বুক ফুলে চলাচল করতো।
যারা আমার নিকট থেকে অবৈধ্য ভাবে অস্ত্র, গুলি চেয়ে পাইনি ও শ্বরনার্থীদের রিলিফের টাকা, কম্বল, অন্যান্য কাপড় আত্বসাৎ করতে বাঁধা দিচ্ছিলাম, তাই আমাদেক অর্থাৎ আমাকে ও বন্ধু শাহাজাহানকে মেরে ফেলার জন্য তারা কোথায় থেকে একটা গ্রেনেড সংগ্রহ করে ৪বার হত্যা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
১ম বার ছাত্রলীগ থেকে রায়গ্রাম হাইস্কুল মাঠে এক মেলার আয়োজন করা হয়। মেলা থেকে ফিরার পথে আমাদেক হত্যা করার জন্য ৮নং আওলাই ইউনিয়নের বানিয়াপুকুর গ্রামের উত্তর দিকে ও পিয়ারা গ্রামের দক্ষিন দিকে খাড়ীর উপর ঘাতকেরা উৎপেতে থাকে। হত্যাকারীদের মধ্যেই আমাদের এক ভালো বন্ধু মেলাতেই সংবাদ দেয় যে, আপনাদেক হত্যা করার জন্য ঘাতকেরা খাড়ীতে উৎপেতে আছে। আপনারা অন্য পথে বাড়ী ফিরে যান। আমরা ঘুর পথে পানিয়াল-ছাতিনালী হয়ে নিরাপদে নিজ গ্রাম পিয়ারায় ফিরে আসি।
২য় বার আমার বন্ধু শাহাজাহানের বাহির ঘরে (বৈঠকখানা) এক রাত্রিতে আমি, শাহাজাহান ও গ্রামের এক চাচাতো ভাইসহ শুয়ে ঘুমাইতে ছিলাম। ঘাতকেরা গ্রেনেড নিয়ে এসে দেখে যে, আমাদের সংগে আরো একজন শুয়ে ঘুমাইতেছে। সে ঘাতকের একজন আপনজন, সেহেতু আল্লাহ তার ওছিলায় আমাদেক প্রাণে বাঁচায়।
৩য় বার এক রাত্রিতে আমার বাড়ীতে আমার ঘরের জানালা খোলা রেখে, আমরা স্বামী-স্ত্রী গভীর ভাবে ঘুম পারতেছি। আমার ঘরের জানালাটি ঘিড়া খলার দিকে, তাই আমরা অত সাবধান হই নাই। জানালাটি ছিল নেটের ছাউনি দেওয়া, ঘাতকেরা মনে করেছিল, তারা যদি গ্রেনেডটি চার্জ
৬
করে, তা তাদের দিকে ফিরে এসে বিস্ফোরন হবে। তারা অনেক চেষ্টা করে ভয়ে ফিরে যায়। আমরা ভোরে বিশেষ বন্ধুর মারফতে সংবাদ পেয়ে খলাতে যেয়ে দেখি, জানালার নিকট বেশ কয়েক জনের লোকের পায়ের ছাপ কাঁদায় স্পষ্ট ছিল। সে রাত্রিতে আমাদেক সর্ব শক্তিমান আল্লাহ্র রহমতে বেঁচে রাখেন।
৪র্থ বার ঘাতকেরা বার বার গোপনে আমাদেক হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায়, তারা এবার প্রকাশ্যে আমাকে হত্যা করার জন্য কিলার নিয়োগ করে। আমাকে অফিসে কিলার দ্বারা সহজেই হত্যা করতে পারতো, কিন্তু অফিসে সব সময় লোকজন উপস্থিত থাকতো এবং কিলারকে আমাকে প্রকাশ্যে পরিচয় করে দেওয়া সিনাক্তকারীদের পক্ষে কঠিন ছিল। তাই আমাকে আমার বাড়ীতেই হত্যা করার সিদ্ধান্ত হয়। কামদিয়া হাটবারে বিকালে গ্রামের লোকজনেরা প্রায় হাটে যায়, এই সময়টা ঘাতকেরা বেছে নেয়। আমাকে প্রকাশ্যে হত্যার করার জন্য কিলারকে সংগে নিয়ে আমার গ্রামের কুপরিচিত দুজন লোক হুরমুর করে আমাদের বাড়ীতে ঢুকে পড়ে। এসে পড়বি তো পর একে বারে আমার গিন্নির সামনে। আরে মালেকা তুই কেন এখানে? গিন্নির উত্তর-এইটা আমার স্বামীর বাড়ী। মোহাম্মদ তোর কে হয়? উত্তর- মোহাম্মদ আমার স্বামী। গিন্নির উত্তর শুনে কিলার চমকে উঠে। কুখ্যাত সিনাক্তকারীদের দিকে চেয়ে রেগে উঁচু স্বরে বললো, হারামিরা আমার মামাতো বোনকে তোরা আমার দ্বারা বিধাব করতে চেয়েছিলি? আমার মামাতো বোনের সংগে যদি পরিচয় না হতো, তবে আজ সে বিধাব হতো। খবরদার! তোরা কারো দ্বারা একাজ করবি না, যদি করিস তবে আমি তোদের গুষ্টিশুদ্ধ মেরে ফেলব। এই কথাগুলি কিলার জোড় গলায় আমার বাবা, মা ও গিন্নির সামনে বলেছে। আমি সেদিন কামদিয়া হাটে গিয়েছিলাম। কিলার ছিল পাঁচবিবি থানার হরেন্দা গ্রামের কুখ্যাত রোস্তম,সম্পর্কে সে আমার গিন্নির ফুফাতো ভাই। আল্লাহ্র রহমতে এবারও ঘাতকের হাত থেকে আমাকে আল্লাহ রক্ষা করেছেন। আমাদের ঘাতকেরা ছিল খবুই প্রভাবশালী, আমরা ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনের আশ্রয় নিতে পারি নাই। আমাদের অপরাধ তাদের হাতে অবৈধ্য ভাবে অস্ত্র তুলে দেই নি। এসব ঘটনা শুধু অস্ত্রের জন্য, তাই আমি গোপনে তারাতারি আমার নিকট জমাকৃত অস্ত্রগুলি নিয়ে যাবার জন্য ড: মফিজ চৌধুরী এমপিকে অনুরোধ করি। তিনি সংগে সংগে মিত্র বাহিনীর অফিসারসহ এসে জমাকৃত অস্ত্রগুলি নিতে আসলেন। আমার নিকট জমাকৃত সমস্ত অস্ত্রগুলি নিয়ে গেলেন, যাবার সময় তাঁরা আমাকে অসংখ্যবার ধন্যবাদ জানালেন। আমাদের হত্যার পরিকল্পনা ষড়যন্ত্রকারীরা আজও বুক ফুলে আমাদের সামনে ঘুরে বেড়ায়। আমরা সর্ব শক্তিমান মহান দয়ালু আল্লাহ্র নিকট বিচার প্রার্থী।
৭
১৯৭০ সালে পাকিস্থানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন আমি ৮নং আওলাই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে কর্মরত। একদিন বিকাল বেলায় ইউ:পি:’র অফিস কক্ষে চেয়ারম্যান ও অন্যান্য লোকজন সহ আমি বসে আছি। হঠাৎ জানালা দিয়ে দেখি, একটা জীপ এসে আমাদের আফিসের সামনে এসে থামলো। সকলে বলতেছে, নৌকার দলের প্রার্থী আসতেছে। আমি এর আগে ড: মফিজ চৌধুরীকে সামনা সামনি দেখি নাই। ওনারা সালাম দিয়ে কক্ষে ঢুকতেছে আর চেয়ারম্যান সাহেব সালাম না নিয়ে উনাদের পাশ কেটে বাহির হলো। আমরা তো সবাই অবাক! এ কেমন সৌজন্য বা সিষ্টাচার? সে জয়পুরহাটের কুখ্যাত পাকি পন্থী আ: আলীমের ডান হাত। আমি উঠে তাঁদেক বসার ব্যবস্থা করলাম। ইউ:পি:’র অফিসটি জনগনের,তাই সব দলের বসার সমান অধিকার। পরিচয় পর্বে জানা গেলো,সকলেই জয়পুরহাটের বাসিন্দা ও প্রায় ব্যবসায়ী। আমার পরিচয়ে জানালাম, আমি ইউ:পি:’র সচিব, বাড়ি অত্র ইউনিয়নের পিয়ারা গ্রামে। আগন্তকের মধ্যে এক জন বললেন, পিয়ারা গ্রামের খাদেম হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ীকে চিনি, তিনি আমার আমার গ্রাহক/খরিদার। আমি সংগে সংগে বললাম উনি আমার বাবা। উনি বললেন,আজ উনার সংগে দেখা করতে চাই। আমি বললাম,আপনারা পিয়ারা গ্রামে গেলে অবশ্য আজই উনার সংগে দেখা করতে পারবেন। আমি তাঁদের জন্য চা-নাস্তার ব্যবস্থা করলাম। উনারা বাহিরে এসে জনগনের সংগে ভোটের আলোচনা করলেন। এর পর সকলে আমাদের বাড়ীতে আসলাম, সালাম বিনিময়ের পর বাবার সংগে সকলের পরিচয় হলো। উনারা সকলেই জয়পুরহাটের মহারথী। উনারা বললেন আজ রাতে আপনার বাড়ীতে আমরা মেহমান হব, এতে আপনার আপত্তি নেই তো? বাবা বললেন আজ আপনারা আমার গরীবের বাড়ীতে মেহমান হয়ে আসলেন, এটা আমার সৌভাগ্য। এতে আমার কোন কষ্ট হবে না, আপনাদেক কষ্ট করে থাকতে হবে। উনারা আমাকে বললেন, আজ রাতে এই গ্রামে একটা জন সভা করতে চাই। তুমি সব ব্যবস্থা কর। আমি আমার লোক দিয়ে গ্রামে একটা জনসভার সব ব্যবস্থা করলাম। বাড়ীতে মা ্আমার অনেক মুরগি পালতেন, তারই একটা বড় দেখে মোরগ বাবা জবাই করে দিলেন। আমার মায়ের রান্নার হাত ছিল খবুই ভালো। মেহমানেরা রাতের খাবার খেয়ে গ্রামে একটা সফল জনসভা করলেন এবং আমাদের বাড়ীতে রাত যাপন করলেন। বাবা ও মা আমার মেহমানদারী খুবই পছন্দ করেন। এই ভাবে ড: মফিজ চৌধুরীর সংগে আমার পরিচয়ের সূচনা এবং এর পর থেকে তাঁকে আমি চাচা বলে ডাকি।
১৯৭২ সালে প্রথম দিকে বঙ্গবন্ধু, বাঙ্গালী জাতির পিতা ও মহান নেতা বগুড়ায় সফরে আসলেন। তার আগে ড: মফিজ চৌধুরী(চাচা) আমাকে সংবাদ দিলেন, জরুরী ভাবে আমার সংগে দেখা কর, কাজ আছে। আমি তারাতারি তাঁর সংগে দেখা করে জানতে পারলাম যে, বঙ্গবন্ধু বগুড়ায়
৮
আসতেছেন, তাই আমাকে তাঁর সংগে থাকতে হবে। নির্দ্দিষ্ট দিনে যথা সময়ে তাঁর সংগে আমি বগুড়ার সার্কিট হাউজে দেখা করলাম। উনি বললেন, তোমার হাতের লেখা সুন্দর, আমি বঙ্গবন্ধুকে যে মানপত্র দিব তা আমি খসড়া করে লিখে দিচ্ছি, তা তুমি ভালো করে সুন্দর ভাবে লিখে দিও। তুমি কি নাস্তা খেয়েছো? না বলায়, উনি একজনকে ডাকলেন, বল্লেন এর নাম মোহাম্মদ আলী, ্একে নাস্তা দাও। আরও বললেন, তুমি এতো লাজুক কেন? স্মার্ট হতে পার না? সার্ফম্যানকে তোমার কথা বলা আছে, তোমার যখন কোন কিছু লাগবে, তার কাছ থেকে চেয়ে নিও। একটা বড় কক্ষে এক কোনে ছোট একটা টেবিল ও একটা চেয়ার আছে আমার লিখার জন্য। চাচা আমাকে বললেন এখানে বঙ্গবন্ধু থাকবেন। তুমি আমার সংগে সংগে গাড়ীতে উঠবে, এখানে অনেক ভিআইপি আসবেন। চল এখনি পুলিশ লাইনে যেতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে আনতে। তাঁর সংগে লেগে থাকলাম। চাচা গাড়ীতে উঠতেই উনার কথা মোতাবেক আমি উনার পিছু পিছু গাড়ীতে উঠলাম। অনেক ভিআইপি উনার গাড়ীতে উঠতে পারলেন না। কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা বগুড়া পুলিশ লাইনের মাঠে উপস্থিত হলাম। অল্প সময়ের মধ্যে আকাশে কপ্টার দেখা গেল। আমি কিছুতেই চাচার পিছু ছাড়িনা। আমরা সকলেই লাইন হয়ে দাঁড়ালাম। কপ্টার ভালো ভাবে মাটিতে এসে থামলো, কিছুক্ষনের মধ্যে মহান নেতা বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্যরা কপ্টার থেকে নেমে লাইনের এক প্রান্তে আসলেন। চাচা অর্থাৎ ড: মফিজ চৌধুরী লাইনের ভিআইপিদের সংগে বঙ্গবন্ধুর পরিচয় ও শুভেচ্ছা বিনিময়ে সাহায্য করতেছিলেন। আমার সামনে যখন মহান নেতা আসলেন, তখন আমি উত্তেজনায় কাঁপতেছিলাম। হ্যান্ডশেক করলাম ও সালাম দিলাম, তখন চাচা বললেন ও আমার প্রিয়জন। অল্পক্ষনের মধ্যে পরিচয় ও শুভেচ্ছা পর্ব শেষ হলো। চাচা বঙ্গবন্ধুর সংগে নির্দ্দিষ্ট গাড়ীতে উঠলেন, আমাকে বললেন উনার গাড়ীতে আসতে। সার্কিট হাউজের সেই বড় ঘরে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুকে নেওয়া হলো। ঐ ঘরে হাতে গুনা কয়েক জন ভিআইপিদের মধ্যে আমিও ছিলাম। দর্শণাথীদের ভীড় কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করা হয়। বঙ্গবন্ধু পোশাক বদল করে শুধু হাতওয়ালা সাদা গেঞ্জী ও সাদা চেকের লুঙ্গি পড়লেন। কিছুক্ষন পর নাস্তা খেলেন। এর পর কিছুক্ষন বিশ্রাম নিলেন। চাচা অর্থাৎ ড: মফিজ চৌধুরী ঐ কক্ষের কোনায় ছোট টেবিল চেয়ারে আমাকে বসতে দিয়ে, তাঁর হাতের লিখা মানপত্রের ড্রাফ্ট ও ভালো মানের কিছু সাদা কাগজের সিট দিলেন লিখতে। আমি অত বড় নেতার সামনে লিখতে সত্যিই আমার হাত কাঁপতেছিল, কিছুক্ষনের মধ্যে তা ঠিক হয়ে গেল। মাঝে মধ্যে ভিআইপি দর্শণার্থীরা বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে, খবুই অল্প সময়ের মধ্যে কুশল বিনিময়ের পর চলে যেতেন। আমি এক মনে মানপত্র ভালভবে লিখতে ছিলাম। কক্ষে আমি আর বঙ্গবন্ধু ছাড়া কেহ নাই। হঠাৎ বঙ্গবন্ধু আমাকে লক্ষ্য করে স্বভাব সুলভ গম্ভীর শব্দে আস্তে করে বললেন, এই ছেলে
৯
তুমি ওখানে চুপচাপ বসে কি লিখতেছ? আমি উঠে সালাম দিয়ে আস্তে করে বললাম, আপনাকে যে মানপত্র দেওয়া হবে, সেইটি লিখতেছি। উনি হেসে বললেন, বসে লিখ। এরই মাঝে চাচা কিছু ভিআইপিসহ গোবিন্দগঞ্জের পালোয়ানকে নিয়ে আসলেন, পালোয়ান এসেই খটাস করে বঙ্গবন্ধুকে সেলুট দিয়ে, সংক্ষেপে তার যুদ্ধের কথা বলল, সে একাই কেমন করে ৬জন পাক সেনাকে হত্যা করেছে, সে আরও বলল জনগন তার সাহসিক কাজের জন্য ৬টি সোনার মেডেল দিয়েছে, সেগুলি বঙ্গবন্ধুকে দেখালো। বঙ্গবন্ধু খাট থেকে উঠে পালোয়ানের সামনে দাঁড়ালেন এবং পালোয়ানের বুকে থাপ্পড় মেরে জোরে বললেন,সাবাশ! আর ভিআইপিদের মধ্যে কাকে কি যেন নির্দ্দেশ দিলেন, আমি দূরে ছিলাম তাই স্পষ্ট শুনতে পাইনি। আমার জীবনে একবার মাত্র বঙ্গবন্ধুর মত মহান নেতার সংগে অল্পক্ষনের জন্য হলেও নিরিবিলি ভাবে খবুই কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হয়েছে। আমার জীবনে শেষ প্রান্তে এসেছি, উচ্চ রক্ত চাপ ও হৃদ রোগে ভুগিতেছি ,উপরন্ত দুইটি কিডনি রোগে ক্ষতিগ্রস্ত। এমন অবস্থায় “আমার দেখা বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ” লিখা আমার পক্ষে খবুই কঠিন, তবুও সত্য ঘটনা না লিখলে বিবেকের কাছে দায়ী থাকবো। অনেক তথ্যের স্মৃতি আমার মন থেকে মুছে গেছে, তাই আমার লিখা থেকে বাদ পরেছে, তার জন্য স্বহৃদয় পাঠকের কাছে ক্ষমা চাইতেছি। ইতি-
হাজী মোহাম্মদ আলী আকন্দ
(প্রাক্তন ইউ:পি:সচিব)
গ্রাম: পিয়ারা, পো: ছাতিনালী,
উপ-জেলা:পাঁচবিবি, জেলা: জয়পুরহাট।
তারিখ: ২৮-০১-১৭ইং
↧
আামার দেখা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
↧