Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ (কাহিনী সংক্ষেপ)

$
0
0

তিতাস একটি নদীর নাম
লেখক : অদ্বৈত মল্লবর্মণ
https://previews.pdf-archive.com/2014/09/13/titash-ekti-nadir-naam/preview-titash-ekti-nadir-naam-1.jpg
তিতাস একটি নদীর নাম অদ্বৈত মল্লবর্মণ রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। এই একটি উপন্যাস লিখে লেখক খ্যাতি অর্জন করেন। এই একটি উপন্যাসই অদ্বৈত মল্লবর্মণকে বাংলা সাহিত্যা অমর করে রেখেছে। এই উপন্যাসে গ্রামের দরিদ্র মালো শ্রেণীর লোকজনের দুঃখ-দুর্দশার কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছেন। পরবর্তীকালে এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।

আজ এই থ্রেডে আমি অদ্বৈত মল্লবর্মণের তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপ উপস্থাপন করব। তবে পাঠকদের মনে রাখতে হবে আমার লেখা অন্যসব কাহিনী সংক্ষেপের মতো এই কাহিনী সংক্ষেপটিও স্পয়লার দোষে দুষ্ট। এই কাহিনী সংক্ষেপে সম্পূর্ণ উপন্যাসের মূল কাহিনীর ধারাবাহিক বর্ননা থাকবে। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই এখানে উল্লেখ থাকবে। তাহলে শুরু করা যাক।

==================================================================================

তিতাস মাঝারি আকারের একটি নদী, মেঘনা থেকে শাখা বেরিয়ে এসে অনেকটা পথ একা একা চলে গিয়ে আবার মেঘনাতেই মিশেছে তিতাস। তিতাস কখনো শুকিয়ে যায় না আবার বর্ষায় দুই পাড় উপচিয়ে বন্যাও সৃষ্টি করে না। তিতাসের পরে এক গ্রাম মালো বা জেলের বাস। সেখানেই আছে কিশোর আর সুবল নামের দুই দুরন্ত বালক। দু’জনের মধ্যে খুবই দোস্তি। কিশোররা বেশ সচ্ছল, জেলে নৌকো আছে, জাল আছে, সুবলদের অবস্থা ততোটা ভাল না, নৌকা নেই। ওদের খেলার সাথী বাসন্তী।  বাসন্তীর মার ইচ্ছে কিশোর বা সুবল দুই জনের যেকোনো একজনের কাছে কন্যা দানের।

সময় কাটে কিশোর আর সুবল যৌবনে পা দেয়। বাসন্তী মনে মনে পছন্দ করে কিশোরকে। এদিকে ততো দিনে কিশোর আর সুবল পাকা জেলে হয়ে গেছে। কিশোরের নৌকাতেই সুবল কাজ করে। একদিন বড় গাঙ্গের ভিতর দিয়ে অনেক দূর দেশে গিয়ে মাছ ধরার জন্য কিশোর ও সুবল রওনা হয়। সাথে আছে আরেক জন বুড়ো অভিজ্ঞ জেলে। বেশ কয়েকদিন নৌকা বেয়ে মেঘনার আরো গহীনে গিয়ে দূর এক গ্রামে গিয়ে গ্রামের মোড়লের অনুমতি নিয়ে মাছ ধরা শুরু করে।

দূরদেশে এসে ঘটনা চক্রে একটি মেয়েকে পছন্দ হয়ে যায় কিশোরের। দ্রুতই মালাবদল করে বিয়ে করে ফেলে কিশোর। এবার দেশে ফিরার পালা, তারা নতুন বউ নিয়ে দেশের পথে রওনা হয়। ফেরার পথে এক রাতে ঘুমন্ত নৌকায় ডাকাত পরে। নতুন বউ আর মাছ বেচা টাকা পয়সা ঘুমন্ত মাঝি ও জেলেদের অলক্ষ্যে চুরি করে নিয়ে যায় তারা। ডাকাতের নৌকা থেকে জলে ঝাপ দেয় নতুন বউ। অনেকটা পথ সাঁতরে একসময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তীরে ভেসে আসে।

তিতাস থেকে কিছুটা দূরে আরেকটি ছোট্ট নদী আছে বিজয় নামে। সেই নদী এতোই ছোট যে চৈত্র মাসে একেবারে শুকিয়ে যায়, সামান্য জলও থাকে না। তখন সেখানকার জেলেরা বড়ই বিপদে পরে। তেমনি বিপদে পড়া বুড়ো দুই ভাই জেলে হচ্ছে গৌরাঙ্গ ও তার ভাই নিত্যানন্দ। তারাই নতুন বৌকে উদ্ধার করে নিজেদের কাছে লালন পালন করে। নতুন বউয়ের একটি ছেলে হয় নাম রাখে অনন্ত। মা বেটা দুই বুড়োর কাছেই লালন পালন হতে থাকে।

অন্যদিকে নতুন বউ আর টাকা করি হারিয়ে কিশোর পাগল হয়ে দেশে ফিরে। সুবল বিয়ে করে বাসন্তীকে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস বিয়ের পরপরই ঝড়ের রাতে নৌকায় কাজ করতে গিয়ে মারা যায় সুবল, বিধবা হয় সুবলের বৌ বাসন্তী।

পাঁচ সাত বছর পরে অনন্ত আর তা মা আসে তিতাস পারে কিশোরদের গ্রামে নতুন বাড়ি করে বাস করতে। কিন্তু পাগল কিশোর অনন্তর মাকে চিনতে পারে না। দিন কাটে বড়ই কষ্টে। অনন্তর মার পরিচয় হয় সুবলের বউ বাসন্তীর সাথে। সময় কাটতে থাকে বছর দুইয়েক পরে এক হলির দিনে পাগল কিশোর ঝাপটে ধরে অন্তর মাকে। অনন্তর মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আর লোকজন ছুটে এসে পাগল কিশোরকে বেদম পিটনি দেয়। পরদিন কিশোর মারা যায়। আর তার দিন চারেক পরে মারা যায় অনন্তের মা।

এতিম অনন্ত আশ্রয় পায় বিধবা বাসন্তীর কাছে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাসন্তীর নিজেদের সংসারই চলে না অভাব অনটনে। এক মাত্র উপার্জন ক্ষম বৃদ্ধ পিতা মাছ ধরে যা আয় করে তা দিয়ে দুই বুড়া বুড়ি আর বাসন্তীর পেটই চলে না, তার উপরে অনন্তের ঝামেলা বুড়া বুড়ি নিতে রাজি না। কিছুদিন অনেক কষ্টে বাসন্তী অনন্তকে লালন করলেও শেষে আর পেরে না উঠে তাকে তাড়িয়ে দেয় বাড়ি থেকে।

আশ্রয়হীন বালক অনন্তের আশ্রয় হয় নিঃসন্তান উদয়তারার কাছে। উদয়তারার সাথে তার ভাইয়ের বাড়ি বেড়াতে যায় অনন্ত। সেখানে পরিচয় হয় ছোট্ট খেলার সাথী অনন্তবালার সাথে। সেখানেই অনন্ত ঝুঁকে পরে লেখা পড়ার দিকে। অক্ষর জ্ঞান আর রিডিং পড়তে পারার পরেই অনন্ত কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যায় দূরের কুমিল্লা শহরে আরো পড়বে বলে। এদিকে অনন্তবালা অপেক্ষা করে থাকে অনন্তের ফেরার আশায়।

একের পর এক অনেক দিন মাস বছর কেটে যায়। হঠাত করেই তিতাসের বুক জুড়ে জেগে উঠে বিশাল চর, দেখতে দেখতে তিতাসের দুই তীরে সামান্য জলের নালা ছাড়া বাকি সবটাই চর পরে যায়। সেই চর দখল হয়ে জায় ধনী কৃষকদের হাতে। সেখানে ধান চাষ হয়। আর জেলেরা অসহায় হয়ে চেয়ে থাকে। জল না থাকায় অসহায় জেলেরা কেউ কেউ অন্য কোন বড় নদীর ধারে চলে যেতে শুরু করে। কেউ কেউ কুলির কাজ করে। শেষে গ্রামের প্রায় সবাই চলে যায়, অনাহারে হার জিরজিরে হয়ে মারা পরে অনেকে, অনেকেই শেষে ভিক্ষা করতে বেরিয়ে পরে দূরের কোন গ্রামে।

যুবক অনন্ত ততো দিনে পড়া লেখা করে বেশ দাঁড়িয়ে গেছে, বাবুদের সাথে তার চলা ফেরা। একদিন উদয়তারার ভাইয়ের সাথে তার দেখা হয়। জেলেদের কষ্টের কথা শুনে অনন্ত বাবুদের নিয়ে সাহায্য করতে আসে গ্রামে, কিন্তু ততো দিনে গ্রামে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। অনন্তবালাকে সে চিনতে পারে না, চিনতে পারে না বাসন্তীকেও।
----------------------------------------- -------------------- সমাপ্ত ---------------------------------- ---------------------------


আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

আট কুঠুরি নয় দরজা – সমরেশ মজুমদার

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাস হার্ডি

কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরীর

মর্নিং স্টার - হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড
ক্লিওপেট্রা - হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড

১৯৭১ – হুমায়ূন আহমেদ
গৌরীপুর জংশন – হুমায়ূন আহমেদ
হরতন ইশকাপন – হুমায়ূন আহমেদ
আজ আমি কোথাও যাব না – হুমায়ূন আহমেদ
আজ চিত্রার বিয়ে – হুমায়ূন আহমেদ
আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ – হুমায়ূন আহমেদ


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>