নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য মিডওয়াইফারি সেবা অপরিহার্য। এই সেবা মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। মিডওয়াইফারি সেবার ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এখন দরকার এ বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান বাড়ানো এবং কাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে জাতিসংঘে এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। প্রত্যন্ত এলাকায় অনেকে মিডওয়াইফারি সেবা দিচ্ছেন। এঁদের ব্যাপারে গণমাধ্যমে ইতিবাচক সংবাদ আসা দরকার। এর ফলে অনেকে এ পেশায় আসতে উদ্বুদ্ধ হবেন, পাশাপাশি যাঁরা এ পেশায় আছেন তাঁরাও উৎসাহিত হবে। মিডওয়াইফারি সেবা বাড়লে সন্তান প্রসবে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার কমবে। মিডওয়াইফারি সেবা আর নার্সদের সেবা এক নয়। তাই এই সেবা হচ্ছে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশে এখন ১ হাজার ৬০০ জনের মিডওয়াইফারি সনদ রয়েছে। দেশে ১২ থেকে ১৪ হাজার মিডওয়াইফ দরকার। সরকার চাকরি দিয়ে পদায়ন করতে পেরেছে ১ হাজার ২০০ জনকে। মিডওয়াইফদের পদ বাড়ানো যেমন দরকার, তেমনি দরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবাসন সমস্যা দূর করার। দেশে এই পেশার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। মিডওয়াইফরা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থাকার পাশাপাশি নিজেরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। মিডওয়াইফারি মহৎ পেশা। এই পেশার প্রসার ঘটলে নারীর কর্মসংস্থান বাড়বে। এই খাতকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করতে পারে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সরকারি বৃত্তির ব্যবস্থা করা জরুরী। গর্ভধারণকালে মা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ থাকে। অনেক বিষয়ে বিরক্তও থাকে। এই সময় বন্ধু হয়ে, কাছের মানুষ হয়ে সেবা দিতে পারেন মিডওয়াইফ। এই সেবা অন্য পেশাজীবীদের কাছ থেকে আশা করা যায় না। এই পেশার প্রসার ঘটলে মাতৃত্ব সহজ হবে। দেশে প্রতিবছর ৫ হাজার ৩০০ মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। মৃত্যুর কারণ জানা এবং এসব কারণ প্রতিরোধযোগ্য। ঠিকভাবে মিডওয়াইফ গড়ে তুলতে পারলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। যাঁরা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হচ্ছেন, তাঁদের কাজের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারটি ও ইউনিয়ন উপকেন্দ্রে একটি করে মিডওয়াইফের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পদ সৃষ্টি করা দরকার। এতে মাতৃমৃত্যুর হার কমবে বলে আশা করা যায়।
↧