Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

ধমীয় ফ্যানাটিসিজম

$
0
0

ধমীয় ফ্যানাটিসিজম
ধমীয় ফ্যানাটিসিজমের সাধারণ অর্থ হ’ল- ধর্মচর্চায় ও জীবনযাপনে অবাস্তব, স্বপ্নপ্রাপ্ত, অলীক, অন্ধবিশ্বাস ও অলৌকিকতার ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা ।
সুদূর অতীতে যুগ যুগ ধরে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা যখন প্রকৃতি ও মানব-সৃষ্ট দুর্বিপাক-দুর্যোগের মধ্যে পতিত হয়ে আশু ধ্বংস ও বিপর্যয়ের মধ্যে পতিত হয়েছে এবং সংকট উত্তরণের পথ খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন তারা মনস্তাত্ত্বিকভাবে স্বপ্নপ্রাপ্ত উপদেশ-নির্দেশ এবং অলৌকিক শক্তির আশ্রয় গ্ৰহণ করেছে।
সেমিটিক ধমীয় ‘মীথ” বা রূপক কাহিনীগুলোতে দেখা যায়— প্ৰিহিস্টোরিক যুগে ‘কাফেরদের” (অত্যাচারীদের) দ্বারা আক্রান্ত, বিপদাপন্ন, নির্যাতিত ধৰ্মপ্রাণ মানুষেরা আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে, কোন না। কোন অলৌকিক শক্তির বলে তারা বিপদ থেকে রক্ষা পেতেন ।
মধ্যপ্রাচ্যের সেমিটিক সমাজে চার-পাচ হাজার বছর আগে একেশ্বরবাদী বনী-ইছরাইল জাতি ও তাদের নবী-রসুল-আম্বিয়াগণ- কাফের অত্যাচারী শাসক ফেরাউন ও নমরূদের নিষ্ঠুর অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ারজন্য এবং “কাফেরদের ধ্বংস করার জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করলে,স্বয়ং আল্লাহ ফেরাউন-নমরুদদের ধবংস করে দিয়েছেন।
নবী মুসা (আঃ) এর লাঠির আঘাতের কেরামতে সমুদ্রের উপর কয়েকশ মাইল রাস্তা তৈরী হয়ে, সেই রাস্তা দিয়ে সমুদ্র পার হয়ে বনী-ইছারাইলীরা ফেরাউন বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন এবং একই সাথে ফেরাউন বাহিনীকে সমুদ্রে ডুবিয়ে ধ্বংস করেছিলেন।
আরবের (ইয়েমেনের) খৃষ্টান রাজা আবরাহা তার বিশাল হস্তিবাহিনী দিয়ে মক্কার পবিত্র কাবাগুহ ধ্বংস করতে উদ্যত হ’লে, তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহপ্রেরিত অলৌকিক আবাবীল পাখী পাথর ছুড়ে হস্তিবাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই ঘটনার কাল ছিল ৪১০ খৃষ্টাব্দে (নবী মুহাম্মদ সঃ জন্মের ষাট বছর আগে)। কিন্তু এসব তো প্রি-হিস্টোরিক যুগের ঘটনা, যা “মীথ’ বা রূপক কাহিনী হিসেবে সেমিটিক ধৰ্মগ্রন্থগুলোতে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
তবে বর্তমান যুগে এই ধরনের অলৌকিক ঘটনা ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই। আজকের দিনে কোন ধর্মপ্রাণ ও বিশ্বাসী জাতি— আধুনিক কাফেরদের (অত্যাচারীদের) দ্বারা, যেমন- সাম্রাজ্যবাদী, ইহুদিবাদী, ব্ৰাহ্মণ্যবাদী শক্তি দ্বারা আক্রান্ত হলে, তাদের রক্ষার জন্য কোন অলৌকিক শক্তি এগিয়ে আসে। না। বরং সর্বশেষ সেমিটিক ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনে বলা হচ্ছে— ‘আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটান না, যতক্ষণ সে জাতি নিজেরা পরিবর্তন না ঘটায়” ।
এ কারণেই তো আজ দেখা যায়— ইরাক, আফগানিস্তান, লেবানন, ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদী-ইহুদিবাদী আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য ধর্মপ্রান মানুষেরা সত্তর হাজার ফেরেশতা বাহিনী বা হাজার হাজার অলৌকিক আবাবীল পাখীর অলীক স্বপ্ন না দেখে, হাতে রকেট ল্যান্সার ও বুকে বোমা-মাইন বেঁধে আগ্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করছেন।
প্রি-হিস্টোরিক যুগের ধমীয় ফ্যানাটিসিজম আজ ‘রাজনৈতিক ধর্মে’ রূপান্তরিত হয়েছে। পাশ্চাত্য শক্তি আজ এরই নাম দিয়েছে ‘রাজনৈতিক ইসলাম”।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>