গৃহে প্রত্যাবর্তন – ভাসিলি গ্রিগোরিয়েভ
============================
‘এসেছে! অবশেষে উদয় হয়েছে তার!… সারা গায়ে ধুলোমাখা?…
দেরি হলো কেন?
কোথায় ছিলে?
অফিসে?
কাল ফোন করে জেনে নেব।…
এখানে পা দিয়ো না, একটু আগেই পরিষ্কার করেছি।
ওখানে যেয়ো না, ওখানে নোংরা। জুতা খুলে স্যান্ডেল পরে নাও।
…বলছ, অফিসে ছিলে এতক্ষণ?
…বেতন এনেছ?
তাহলে বাসায় এসেছ কেন?
ঠিক বলেছ, টাকা ছাড়া তোমাকে প্রয়োজন নেই কারও। ব্যতিক্রম শুধু বউ। সে তোমাকে এখনো সহ্য করে যাচ্ছে। কারণ সে বোকা। …বসো।
ওখানে না। কিসের ওপরে বসেছ, সেটা লক্ষ করেছ?
দাঁড়িয়ে রইলে কেন?
মনে হচ্ছে, যেন কারও বাসায় বেড়াতে গেছ!
…চুপ করে আছো কেন? তোমার সঙ্গে তোমার বউ কথা বলছে বলে মনে তো হয়।
তুমি কোনো কাজের কথা কি বলতে পারো না?
পত্রিকা রাখো! মেঝেতে ফেললে কেন! তোলো! আমি তোমার চাকরানি নই।
বইয়ে হাত দিয়ো না। আমি একেবারে সিরিয়াল করে সাজিয়ে রেখেছি।
…টেলিভিশনের সামনে থেকে সরে এসো! ওতে কিছুই দেখার নেই।
কুকুরের গায়ে হাত দিয়ো না। ও তো তোমাকে জ্বালাতন করছে না!
আবার দাঁড়ালে কেন! হায়! ঈশ্বরের অশুভ সৃষ্টি!
…কার্পেটের ওপরে ওঠো না।
…আমার চোখের সামনে এদিক-ওদিক হেঁটো না। অসহ্য একেবারে!
…কোনো একটা কাজ খুঁজে নাও।
ব্যালকনিতে যেয়ো না! কে জানে, হয়তো পড়ে যাবে ওখান থেকে। তিনতলায় তো!
…এই দ্যাখো, বলেছিলাম না! ঠিকই পড়ে গেছে! মনে হচ্ছে, বেঁচে আছে। ভাগ্যিস! আর শুয়ে থেকে ভান করতে হবে না। ওঠো। আর তুমি যেহেতু নিচেই এখন, রুটি কিনে নিয়ে এসো দোকান থেকে।
…হায়, এ কী কপাল আমার! …বাসায় ফিরে দরজার সামনের পাপোশে পা ভালো করে ঘষে নেবে!’
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৮, ২০১২