আসুন আমরা কে কোন খেলায় কোন দলকে সমর্থন করি এবং কেন করি তা আলোচনা করি।
আমি-
ক্রিকেটে- ভারত (বাংলাদেশের কথা বলবনা, কারণ আমার নিজের দেশের সাথে পৃথিবীর যে দেশের খেলা-ই হোক না কেন আমার বাংলাদেশ সবার উর্দ্ধে)
কেনঃ আমি ভারতীয় বংশোদ্ভুত কিন্তু আমার আম্মু বাংলাদেশী, আমার জন্ম বাংলাদেশে, আমার বেড়ে ওঠা, পড়াশুনা, বসবাস এদেশে। ছোটবেলা থেকেই ভারতে যাওয়া, থাকার ফলে আলাদা একটা ভালো লাগা আছে।
যখন ক্রিকেট বুঝতে শিখি তখন ভাললাগে আজহার উদ্দীন, জাভাগাল শ্রীনাথ ও রবিন সিংকে। ক্রিকেট যখন অস্থি-মজ্জায় ততদিনে শচীন-সৌরভ ক্রিকেট বিশ্বে ঝড় তুলেছে।
তবে প্রিয় বোলার হিসাবে এখনও একবাক্যে যৌথভাবে ওয়াকার ইউনুস ও ওয়াসিম আকরামই আছেন। আকিব জাভেদের বোলিং অ্যাকশানটা আজো মিস করি। চামিন্ডা ভাসের কথাও বলতে হবে।
ফুটবলে- আর্জেন্টিনা
কেনঃ যখন ফুটবল বুঝি তখন ম্যারাডোনার স্বর্নযুগ। বাবা ম্যারাডোনার ভক্ত। সংক্রমণটা সেখান থেকেও হতে পারে। অবশ্য বাবা জন্মসূত্রে ভারতীয় (যদিও ছোটবেলা থেকেই বাংলাদেশে বাস করেন) হওয়া স্বত্ত্বেও ক্রিকেটে তিনি পাকিস্তানের সমর্থক।
প্রিয় ফুটবলারঃ মেসি, ম্যারাডোনা, ফিগো, জিদান, বাতিস্তুতা, টট্টি, রিভালদো, দ্রগবাক্লাব ফুটবলঃ বার্সা
কারণঃ মেসি, জাভি।
খেলাধূলায় সমর্থকদের স্ব স্ব দলকে সমর্থন করার কারণ বিশ্লেষন প্রায়ই আমাদের দৃষ্টি কাড়ে। সেখানে যৌক্তিক, অযৌক্তিক আলোচনা, সস্তা আবেগ, গুরুগম্ভীর আলোচনা সবই থাকে।
উচ্চ শিক্ষিত/শিক্ষিতা, সমাজে প্রতষ্ঠিত, গন্যমান্য পাকিস্তানী সমর্থকদের মুখে হরহামেশাই শোনা যায়- ওরা আমাদের জাতি ভাই, ওরা আমাদের ধর্মের লোক, অতীতে আমরাতো একই সাথে ছিলাম আমরা তাদের সমর্থন না করে কেন ঐ বিধর্মী (বিশেষ করে হিন্দুদের দল) দলকে সমর্থন করবো কেন?
অপরদিকে উচ্চ মার্গের ভারতীয় সমর্থকদের মুখে শুনি- পাকিস্তানীরা আমাদের এই ক্ষতি করেছে, সেই ক্ষতি করেছে, বহু বাংলাদেশীকে খুন, ধর্ষন করেছে ওদের আমরা সমর্থন করবো কেন? ভারত আমাদের সাহায্য করেছে, তারা আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র তাই ভারতের সমর্থন করা উচিত।
আমার মনেহয় আমাদের উভয়েরই এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।
খেলাকে ধর্ম আর রাজনীতির সাথে মেশাতে দেখলে গা গুলিয়ে ওঠে। খেলা একটি বিনোদন মাত্র। হ্যাঁ, বিনোদন অবশ্যই আপত্তিকর বা অসামাজিক না হোক তা খুব বেশি করে চাই।
আমার মনেহয় খেলাধূলাকে যদি ধর্ম আর রাজনীতির নিরিখে বিচার বিশ্লেষন করে কোন দলকে সমর্থন বা বর্জন করতে হয়, তাহলে আধুনিক প্রযুক্তির অনেক কিছুই বর্জন করতে হবে যা আধুনিক বিশ্বের সাথে নিজেকে আপটুডেট রাখতে হলে বর্জন করা সম্ভব না।
আমার প্রশ্ন হলো আমরা কি অন্ধ বিশ্বাস/অসার যুক্তি আঁকড়ে ধরে আঁতুড় ঘরে বন্দী থাকবো, নাকি বিবেকবোধ কাজে লাগিয়ে নৈতিকতার সাথে বিশ্বায়নে অংশ নেবো?