Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

মিলাদুন নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم

$
0
0

বসন্তের প্রভাত

মাহে রবিউন্ নূর তথা রবিউল আউয়াল শরীফে কি আসে চতুর্দিকে বসন্তকাল আগমন করে। মক্কী মাদানী মোস্তফা, হযরত মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّمএর দিওয়ানা ভাইদের অন্তরে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। বৃদ্ধ হোক কিংবা যুবক হোক, প্রতিটি প্রকৃত মুসলিম যেন অন্তরের মুখ দিয়ে অন্তরের ভাষায় গেয়ে উঠে।

নিছার তেরী চেহেল পেহেল পর হাজার ঈদে রবিউল আউয়াল,
সিওয়ায়ে ইবলিস কে জাহা মে সবহি তো খুশিয়া মানা রহে হে।

যখন সমগ্র বিশ্ব কুফরী, শিরক, পশুত্ব, বর্বরতার ঘোর অন্ধকারে ছেয়ে গিয়েছিল ঠিক তখনি ১২ই রবিউন নুর এর রাতে মক্কায়ে মোকাররমায় হযরত সায়্যিদাতুনা মা আমিনা আলোকিত করে দিল। ভুলুণ্ঠিত মানবতা যার আগমনের প্রতীক্ষায় ব্যকুল ছিল, তাজেদারে মাদীনা, আল্লাহর মাহবুব, প্রিয় নবী, হযরতমুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم সমগ্র বিশ্ব জগতের জন্য রহমত হয়ে এই পৃথিবীতে শুভাগমন করলেন।

মুবারক হো কেহ খাতামুল মুরসালিন তাশরিফ লে আয়ে,
জনাবে রাহমাতুলি−ল আলামিন তাশরিফ লে আয়ে।”

খাতামুল মুরছালীন, রহমতুলি−ল আলামীন, প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم প্রতিটি অশান্ত আত্মার শান্তির প্রলেপ হয়ে ১২ রবিউল আউয়াল শরীফের সুবহে ছাদিকের সময় জগতে শুভাগমন করেছেন এবং এসেই নিরাশ্রয়, পেরেশান, দুঃখী, আঘাতে ক্ষতবিক্ষত, স্থানে স্থানে আঘাত প্রাপ্ত বেচারা গরীবদের অন্ধকার সন্ধ্যাকে বসন্তের সকাল বানিয়েদিয়েছেন।

মুসলমানো সুবহে বাহারা মুবারক,
ওহ বরসাতে আনওয়ার সরকার আয়ে।”
(ওয়াসায়েলে বখশিশ, পৃ-৪৭৯)

মুজিযা বা অলৌকিক ঘটনাবলী

১২ই রবিউন্ নূর শরীফে আল্লাহর নূর, প্রিয় صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم দুনিয়াতে শুভাগমন করার সাথে সাথে কুফরী ও শিরিকের মেঘ কেটে গেল। ইরান সম্রাট “কিসরার” প্রাসাদে ভূকম্পন হল তাতে ১৪টি গম্বুজ ধ্বংস হলো। ইরানের যে অগ্নিকুন্ড শত বছর ধরে জলছিল হঠাৎ করে মুহূর্তে নিভে গেল। নদী শুকিয়ে গেল। কাবা শরীফ উল−সিত হলো।আর মাথা নিচু করে মূর্তিগুলো উল্টে পড়ে গেল।
তেরী আমদ থি কেহ বাইতুল্লাহ মুজরি কো ঝোকা,
তেরী হায়বত থি কেহ হার ভুত থর থরা কর গীর গেয়া।”

তাজদারে রিসালত প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم পৃথিবীতে অনুগ্রহ ও রহমত হয়ে তাশরীফ আনলেন। আর অবশ্যই আল্লাহ্ তা’আলার রহমত অবতীর্ণ হওয়ার দিনই তো আনন্দ ও উৎসবের দিন হয়।
যেহেতেু আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদঃ আপনি বলুন- আল্লাহরই অনুগ্রহ তারই দয়া এবং সেটার উপর তাদের আনন্দ প্রকাশ করা উচিৎ। তা তাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা উত্তম। (পারা-১১, সুরা ইউনুচ-আয়াত-৫৮)
আল্লাহু আকবর! আল্লাহর রহমতের উপর আনন্দ উদযাপনের জন্য কোরআনুল করীমে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর আমাদের আকা হযরত صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم নবী করীম এর চেয়ে বড় আল্লাহর কোন রহমত আর কিছু কি আছে? দেখুন কোরআন মজিদ’র অন্য আর এক জায়গায় এ ব্যাপারে পরিস্কার ঘোষণা দিচ্ছে।
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ [٢١:١٠٧ ]
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদঃ এবং আমি আপনাকে প্রেরণ করিনি কিন্তু রহমত করে সমগ্র বিশ্ব জগতের জন্য। (পারা-১৭, সুরা আম্বিয়া, আয়াত নং-১০৭

শবে কদরের চেয়েও উত্তম রাত

হযরত সায়্যিদুনা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالى عَلَيْه বর্ণনা করেছেন, “নিঃসন্দেহে প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم শুভাগমনের রাত লাইলাতুল কদরের চেয়েও উত্তম। কেননা বিলাদতের রাত সরকারে মদীনা صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّمَএর এই দুনিয়াতে শুভাগমনের রাত। যেহেতু ‘লায়লাতুল কদর’ সরকারে মাদীনা প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم কে প্রদত্ত (নেয়ামতরাজীর) একটি মাত্র রাত (নেয়ামত)। আর যে রাত সরকারে মদীনা صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم এর ‘জাতে মুকাদ্দাছ’ প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে সম্মানিত তা ঐ রাতের চেয়েও বেশী উত্তম যে রাত ফিরিস্তা অবতীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে সম্মানিত হয়েছে। অর্থাৎ- শবে কদর (মা-ছাবাতা বিস্সুন্নাহ্, পৃ-১০০)

সকল ঈদের সেরা ঈদ

১২ই রবিউন নূর মুসলমানদের জন্য সকল ঈদের সেরাঈদ। নিঃসন্দেহে আমাদের প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم এই পৃথিবীতে জল-স্থলের মহান সম্রাট হিসেবে যদি না আসতেন তবে কোন ঈদ ঈদই হত না, কোন রাত ‘শবে বরাত’ হত না। বরং আসমান জমিনের যাবতীয় সৌন্দর্য্য ও শান শওকত তিনি জানে জাহান, আল্লাহর মাহবুব, প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم এর কদম শরীফের ধূলোর ছদকা।

“ওহ জু না থেহ তো কুছ ন থাহ ওহ জু না হো তো কুছ না হো।
জান হো ওহ জাহান কি জান হে তো জাহান হে।”
(হাদায়েকে বখশিশ, পৃ-১২৬)

আবু লাহাব ও মিলাদুন্নবী

আবু লাহাব মারা যাওয়ার পর একদিন তার পরিবারের কিছু লোক তাকে স্বপ্নে খুবই খারাপ অবস্থায় দেখতে পেল। জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি অবস্থায় সময় কাটাচ্ছ? সে বলল, “তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে আসার পর আমার ভাগ্যে ভাল কিছু নসীব হয়নি। হ্যাঁ, তবে আমার এই (শাহাদাত) আঙ্গুল হতে পানি পাওয়া যায়। কেননা, (এর দ্বারা ইশারা করে) আমি আমার দাসী সুয়াইবাকে আযাদ করে দিয়েছিলাম।” (মুসান্নিফে আবদুর রাজ্জাক, খন্ড-৯, পৃ-৯, হাদীস-১৬৬৬১,
উমদাতুল কারী, খন্ড-১৪, পৃ-৪৪, হাদীস-৫১০১) হযরত আল্লাহ-মা বদরুদ্দীন আইনী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالى عَلَيْه বলেন, এ ইশারার উদ্দেশ্য এটা যে, আমাকে সামান্য পানি দেওয়া হচ্ছে। (উমদাতুল কারী)

মুসলমান ও মিলাদুন্নবী

অত্র হাদিসের ব্যাখ্যায় সায়্যিদুনা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالى عَلَيْه বলেন, “এই ঘটনার মধ্যে মিলাদ শরীফ উদযাপনের পক্ষে মিলাদ শরীফ উদযাপনকারীদের জন্য বড় দলিল রয়েছে, যারা তাজদারে মাদীনা প্রিয় নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم এর শুভাগমনের রাতে খুশি উদযাপন করে এবং টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ খরচ করে।(অর্থাৎ আবু লাহাব যে কাফির ছিল, সে যখন মাদীনার তাজেদার, নবী করীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم এর শুভাগমনের সংবাদে খুশি হওয়াতে এবং তার দাসী (সুয়াইবা) কে দুধ পান করানোর কারণে মুক্তিদিয়েছিল আর এর প্রতিদান হিসাবে তার শাহাদাত আঙ্গুলী দিয়ে পানি প্রবাহিত করে তৃষ্ণা মিঠানোর সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে ঐমুসলমানের কি অবস্থা হবে, যার হৃদয় নবী প্রেমে ভরপুর এবং উৎফুল−চিত্তে মিলাদ শরীফে সম্পদ খরচ করছে।( কিন্তু এটা আবশ্যক মিলাদুন্নবী صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہ وَسَلَّم এর মাহফিল, গান বাজনা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের যাবতীয় প্রবণতা থেকে পবিত্র হতে হবে।) (মাদারিজুন্নবুওয়াত, খন্ড-২, পৃ-১৯)
ফয়যানে মাদীনা


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>