ফটোগ্রাফি যারা শুরু করছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে কমন প্রশ্ন হচ্ছে ক্যমেরা কেনা নিয়ে। কে কোন ক্যমেরা কিনবেন সেটা নিয়ে প্রশ্নের কমতি না থাকলেও ক্যমেরার সাথে কোন লেন্স ব্যবহার করবেন সেটা নিয়ে সচরাচর কারো খুব বেশী মাথাব্যথা নেই। আবার ক্যমেরা বডি কিনতে গিয়ে দাম, ব্র্যন্ড এবং মডেল নাম্বার নিয়েও লাগে আরেক ভ্যাজাল। যাই হোক আমি সেই ভ্যাজালের দিকে আর যাচ্ছি না। আমার টপিকের পয়েন্ট হচ্ছে ফটোগ্রাফি যারা শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের ক্যমেরা কেনা সংক্রান্ত জটিলতার সহজ সমাধান দেয়া। অবশ্যই ক্যমেরা কেনা বলতে আপাতত আমজনতার কথা বিবেচনায় করে আমরা ধরে নেই যে আমাদের ক্যমেরা বডি যে কোনো ইন্টারচেইন্জএবল ডিএসএলআর সোজা বাংলায় লেন্স বদলিয়ে ব্যবহার করার উপযুক্ত ক্যমেরা বডি।
হ্যাঁ! যে কোনো ক্যমেরা বডি নিয়েই আপনি শুরু করতে পারেন। এটা নিয়ে আমরা যতটা মাথা ঘামাই এটা আসলে ততটা মাথা ঘামানোর মতো ব্যপার না। অবশ্যই এটা অনেকটাই নির্ভর করছে আপনি কি কাজে আপনার ক্যমেরা ব্যবহার করছেন। যেমন প্রদর্শনীর জন্য দেয়াল সাইজের রেজ্যুলুশন চাইলে আপনাকে ক্যমেরা বডি নিয়ে ভাবতেই হবে। এবং সাধারণত সেক্ষেত্রে আপনি মিডল ফরম্যট ক্যমেরা নিয়ে চিন্তা করবেন এবং সেটা অতিরিক্ত প্রফেশনাল লেভেলের কাহিনী। তবে সাধারণত আপনি যদি ক্রপ সেন্সর ডিএসএলআর কেনার জন্য মার্কেটে নামেন তাহলে আমার এই পোস্ট খানার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
সহজ কথায় আমি বলতে চাইছি আপনি ফুল ফ্রেম, রেইনজফাইন্ডার, hasselblad/rolleiflex ইত্যাদি এর কনস্যুমার না হলে ক্যমেরা বডির পিছনে সময় বা টাকা অপচয় না করাই ভালো। এই সময় এবং টাকা যদি আপনি লেন্সের পিছনে ব্যয় করেন তাহলে আপনি অনেক ভালো আউটপুট পাবেন। শুনে আমার কথা বিশ্বাস না করতে চাইলেও এটাই সত্যি। কেন চলুন দেখে নেই:
বর্তমান বাজারে ডিএসএলআর ব্র্যন্ডের নাম এবং মডেলের শেষ নেই। অমুক ব্র্যন্ডের এই ফাংশন তমুক ব্র্যন্ডের সেই ফাংশন, এই মডেলে ওয়াইফাই আছে ঐ মডেলে নাই এই মডেলে টাচ স্ক্রিণ আছে সেটাতে নাই, ইলেক্ট্রনিক ভিউ ফাইন্ডার, অপটিক্যল ইমেইজ স্ট্যবিলেইজশন ব্লা ব্লা ব্লা ... ফ্যন্সি ফিচারস এগুলা নিয়ে কম্পেয়ার এবং কন্ট্র্যস্ট করতে থাকলে আপনি জীবনের একটা বিশাল সময়ই ক্যমেরা বডি সিলেকশনে ব্যয় করবেন আপনার ফটোগ্রাফি আর শুরু করা হবে না। আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভালো হচ্ছে ভালো লাগা। নিজে পার্সোনালি দোকানে যান ক্যমেরা বডি হাতে নিয়ে দেখুন। একেবারে টিপিক্যল শপিং এর মত ভালো লাগলে দামে ঠিক থাকলে কিনে ফেলুন। তবে এখানে সহজ কিছু ব্যপার আছে যেগুলার জন্য এমন আহামরি কোনো রিসার্চ করা লাগে না। এই ব্যপার গুলো আপনি আগে থেকেই ঠিক করে নিতে পারেন:
যেমন মেগাপিক্সেল, এইটা হচ্ছে ক্যমেরা কোম্পানী গুলোর bait। এটা নিয়ে লিখতে গেলে আরেকটা রচনা হয়ে যাবে। শুধু এতটুক মাথায় রাখুন যে মেগাপিক্সেলের সাথে ইমেইজ কোয়ালিটির সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। উদাহরণ স্বরূপ আপনি যদি ২৪ মেগাপিক্সেলের ক্যমেরা কিনেন তাহলে সেই ক্যমেরায় তোলা ছবি অনেক বেশী যুম করতে পারবেন এবং পিক্সেল কাউন্ট বেশী হওয়ায় আপনার ছবির ডিটেইলস ঠিক থাকবে। সেই হিসেবে ১৬/১৮ মেগাপিক্সেলের ক্যমেরা কিনে আপনি যে বিশাল ধরা খেয়ে যাবেন ছবির ডিটেইলসে তা মোটেও না। সত্যি কথা বলতে এই মেগাপিক্সেল কাউন্ট বিশাল সাইজের ইমেইজ প্রিন্ট করার ক্ষেত্রেই বিবেচনায় আনার মতো বিষয়। সাধারণ কনস্যুমারদের জন্য এটা কোনো বড়ো ইস্যু না। তাই মেগাপিক্সেল নিয়ে অস্থির না হয়ে overall ক্যমেরার ergonomics এবং handling এর প্রতি মনোযোগ দিন। আপনি যদি ক্যমেরা কিনে সেটা ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধই না করেন তাহলে সবকিছুই বৃথা।
এছাড়াও ISO, শাটার স্পিড, ডায়ন্যমিক রেইনজ, নয়েজ রিডাকশন টুকিটাকি বৈশিষ্ট্য মোটামুটি সব নতুন ডিএসেলার ক্যমেরা বডিতেই স্ট্যন্ডার্ড টাই পাবেন। আর এইগুলা বাদে বাকি যা ফ্যন্সি ক্রিয়েইটিভ মোড অথবা ফাংশনস আছে সেগুলা আপনি কোনোদিন ব্যবহার করবেন কিনা সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ঠ সন্দেহ। তাই এইগুলা ঘাটিয়ে সময় নষ্ট না করে এবার চলুন দেখি আমরা লেন্স দিয়ে কি করতে পারি..
এই বকবক আরেকদিন করবো..