Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

ঈদ মার্কেটে জাল টাকার ছড়াছড়ি

$
0
0

ঈদ মার্কেটে জাল টাকার ছড়াছড়ি। জাল নোট তৈরির একটি সংঘবদ্ধ চক্র ঈদ সামনে রেখে ৫০ কোটি টাকার জালটাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। গত সোমবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে জালনোট তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৩ লাখ টাকার জালনোটসহ প্রায় দেড় কোটি টাকার জালনোট তৈরির সরঞ্জাম। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ ইব্রাহীম, নার্গিস আক্তার ও শারমিন আক্তার নামে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
গতকাল মিডিয়া সেলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত সোমবার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাজধানীর পল্টন ও মিরপুর থানার কল্যাণপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে জালনোট তৈরির হোতা ইব্রাহিমসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে জাল ২৩ লাখ টাকা ও দেড় কোটি জালটাকা বানানোর উপযোগী জলছাপ, নিরাপত্তা সুতা, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামসংবলিত বিশেষ কাগজ, একটি ডেস্কটপ, একটি মনিটর, চারটি প্রিন্টার, ইপসন রঙের বিভিন্ন ধরনের তিন হাজার কার্টিজ, বিভিন্ন বোর্ড পাঁচটি, স্ক্রিন প্রিন্টের রং, টানার রাবার তিনটি, জালটাকা ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত নেগেটিভ, কার্টার, কার্টার ব্লেড, তরল রিডিউচার ৩ বোতল, স্টিলের স্কেল পাঁচটি, বঙ্গবন্ধু/শাপলা/বাংলাদেশ ব্যাংক/১০০/৫০০ টাকার জলছাপসংবলিত কাগজ ৫ প্যাকেট, হাতুড়ি, প্লাস, ২টি নিরাপত্তা সুতার বান্ডিল এবং নগদ ১২ হাজার (আসল) টাকা উদ্ধার করা হয়।
মনিরুল ইসলাম আরও জানান, ডিবি টিম প্রথমে পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই লাখ টাকার জালনোটসহ ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে। পরে ইব্রাহিমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তার কাছে প্রাপ্ত জালটাকার কারখানাটি কল্যাণপুর আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কল্যাণপুরের একটি বাড়ির চতুর্থ তলায় অভিযান পরিচালনা করে নার্গিস আক্তার ও শারমিন আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। এই সময় আরও ২৩ লাখ জালটাকা এবং আরও দেড় কোটি টাকার জালনোট তৈরির বিশেষ কাগজ, কালি, কম্পিউটার প্রিন্টার ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে জালটাকার ছাপিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। গত ঈদুল আজহার সময় ডিবি পুলিশ জালটাকার ছয়টি কারখানার সন্ধান পায় এবং অনেক মূলহোতা ধরা পড়ার প্রেক্ষাপটে জাকির মাস্টার ও কাওছার দীর্ঘদিন ধরে গা-ঢাকা দিয়েছিল। রোজা শুরু হওয়ার পরপরই জাকির এবং কাওছার পলাশ নামে জালটাকার পাইকারি ব্যবসায়ীর কল্যাণপুরের বাসায় মেশিন স্থাপন করে—সোহেল, সাগর, নুরুল হক, বাশার, মামুন, রাব্বি, রোজিনা, নার্গিস আক্তার, শারমিন আক্তার ও ইব্রাহিমদের মাধ্যমে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় পাইকারিভাবে জালটাকা সরবরাহ করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত ইব্রাহিম ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে এবং পলাশ ১০-১২ বছর ধরে জাকির ও কাওছার মাস্টারের কাছ থেকে জালটাকা ক্রয় করে বাজারে সরবরাহ করত। এই কাজে সহায়তা করত পলাশের দুই স্ত্রী। পরবর্তী সময়ে তারা দ্রুত বেশি পরিমাণে জালটাকা তৈরি করে বাজারজাত করার লোভে কল্যাণপুরের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে জাকির ও কাওছার মাস্টারে মাধ্যমে কারখানা স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও লোকচক্ষুর আড়ালে জালটাকার ব্যবসা শুরু করে।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এই চক্র বাজারে আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল বলে ধৃত আসামিরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত ইব্রাহিমের আগে আরও ২ বার মাদক ও জালটাকার ব্যবসা করার কারণে হাজত বাস করেছিল। গ্রেফতার করা নার্গিস আক্তার, শারমিন আক্তার পলাতক আসামি পলাশের স্ত্রী। পলাশ অন্য আসামিদের সঙ্গে ৫২ লাখ জালটাকাসহ ২০১১ সালে ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল।
অপরদিকে পলাতক আসামি কাওছার ২০১১ সালে ধরা পড়া জালটাকার অন্যতম আবিষ্কারক হুমায়ুনের ছোট ভাই। ২০১২ সালে ডেমরা থানাধীন বাঁশেরপুল এলাকায় জালটাকার গডফাদার জাকিরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ, তার স্ত্রী, শ্যালক ও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করে জালটাকা তৈরির বিপুল পরিমাণ সামগ্রী ও ৬৮ লাখ টাকা উদ্ধার করেছিল।
গ্রেফতারকৃতরা জানায়, এক লাখ জালটাকা তৈরি করতে তাদের আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হলেও তারা তাদের শিষ্যদের কাছে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় তা বিক্রি করত, যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন হাত হয়ে ২০-২২ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। তাদের অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ। newspaper


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>