ছোটবেলায় মায়ের কাছে শোনা, এবং ছোট বেলা থেকেই দেখে আসা, বাচ্চাদের আয়োজন করে চুল কামানোর। কোন বাচ্চার চুল পাতলা (বিশেষত মেয়েদের) মনে হলে, রীতিমত নাপিত ডাকিয়ে চুল কামিয়ে নেয়া, যাতে চুল ঘন হয়ে উঠে। আর কিশোর বয়সে তো কথাই নেই, বন্ধুদের কারো কারো দাঁড়ি শক্ত হয়ে গেছে, অথচ নিজের মুখে ভাল করে গোঁফের রেখাই উঠেনি। সমাধান?? বাবার রেজর দিয়ে ঘষে ঘষে ছাল বাকল তুলে ফেলা, যদি দাঁড়ির দেখা পাওয়া যায়.। অল্প বয়সে মাথার চুল পড়ে যাচ্ছে, দমাদম মাথার চুল কামিয়ে ফেলতে দেখি অনেককে, যেন কামালেই মাথা ভর্তি করে আসবে নতুন এক ব্যাচ চুল।
কাজের কাজ কি কিছু হয় আসলে?? না, হয়না।
চুলের বা দাঁড়ির বড় হওয়া নিয়ন্ত্রন করে হেয়ার ফলিকল নামক এক ধরনের বস্তু, যা চামড়ার খানিক নিচে থাকে। সারাদিন যতই জিলেট দিয়ে দাঁড়ি কামানো হোক না কেন, এই ফলিকলের উপর এর কোন প্রভাব পড়েনা। চামড়ার উপর উঠে আসা চুলের/ দাঁড়ির অংশ, যা বাস্তবে চুলের মৃত অংশ, সেটাই শুধু কাটা পড়ে।
এই বিশ্বাস তৈরি হবার পিছনে কারন সম্ভবত কাটবার পর যখন নতুন চুল দাঁড়ি গজায়, সেটা ফিল করতে গেলে বেশ শক্ত মনে হয়, বেশ ঘনও মনে হতে পারে। যে সারফেসে একদম চুল/ দাঁড়ি নেই, সেখানে অল্প কিছু চুল গজালেই সেটাকে ঘন মনে হওয়া স্বাভাবিক, এবং সেটা নজরে পড়ে বেশি। এবং শেইভ করবার পর যখন নতুন দাঁড়ি উঠে, সেটার মাথা হয় ভোঁতা, যা হাত দিলে অনেক শক্ত মনে হয়। দুটো মিলে ঘন/ কাল চুলের এক ধরনের ইলিউশন তৈরী হয়। আরেকটা কারন হতে পারে, ছেলেদের যখন প্রথম দাঁড়ি উঠে তখন গ্রোথ টা কম থাকে কিন্তু পরবর্তিতে এই রেট টা বাড়ে, কাজেই এমন মনে হতে পারে, যে বছরের পর বছর শেইভ এর কারনেই এই গ্রোথ টা বাড়ছে।
কাজেই, মাথার চুল পড়ে যেতে থাকলে ডাক্তারের কাছে যেতে পারেন, নাপিতের কাছে নয়। বাচ্চার চুল যদি ঘন হবার থাকে তা এম্নিতেই হবে, মাথা নিয়ম করে কামালেই হবে, বারবার কামানোর দরকার নেই।