1.
স্বনামধন্য এক পরিসংখ্যানবিদ কন্ডি, কখনো প্লেনে চড়েন না, কারণ সারা বিশ্বের উড্ডয়ন পরিসংখ্যান ঘেঁটে তিনি দেখেছেন যেকোনো বিমানে একটি বোমা থাকার সম্ভাব্যতা ১/১০০,০০০। সম্ভাব্যতাটি তার কাছে বেশি মনে হয়, ফলে এর উপর ভিত্তি করে জীবনের ঝুঁকি নিতে তিনি রাজী নন।
একদিন দূরের এক কনফারেন্সে যোগদানের আমন্ত্রণ পান কন্ডি। সেখানে দেখা হয় বান্ধবীর সাথে।
"হাই কন্ডি, ট্রেন ভ্রমণ কেমন হলো? বন পাহাড়ের ভেতর দিয়ে নিশ্চয়ই চমৎকার সময় কেটেছে।" বান্ধবী জানতে চান।
"আমি আসলে প্লেনে করে এসেছি এবার।" মুচকি হেসে জবাব দেন কন্ডি।
"আরে, তাই নাকি!" অবাক হন বান্ধবী। "তা, তুমি না সব সময় প্লেনে একটা বোমার কথা বলতে?"
"হ্যাঁ, আমি হিসেব করে দেখলাম কোনো প্লেনে ১টি বোমা থাকার সম্ভাবনা যদি ১/১০০,০০০ হয়, তাহলে ২টি বোমা থাকার সম্ভাবনা—তুমি তো স্বাধীন সম্ভাব্যতার সূত্র জানো—(১/১০০,০০০) × (১/১০০,০০০) বা ০.০০০০০০০০০১। এটি এত ক্ষুদ্র সম্ভাবনা যে এর উপর ভিত্তি করে ঝুঁকি নেয়া যায়।"
"কিন্তু ২টি বোমার কথা আসছে কেন?"
"কতই না বোকা ছিলাম আমি, এত দিন ব্যাপারটি আগে মাথায় আসেনি!" জবাব দেন কন্ডি, "শোনো প্রিয় বান্ধবী, এবারে প্লেনে আসার সময় ঝুঁকি কমানোর জন্য আমি সাথে করে একটা বোমা নিয়ে এসেছি।"
2.
মাটিতে পোঁতা পতাকাদণ্ডের উচ্চতা নির্ধারণ করতে বসেছে একদল শ্রমিক। তাদের কাছে রয়েছে শুধু মাত্র গজ ফিতা, কিন্তু দণ্ডের আগায় কীভাবে ফিতাটি পৌঁছানো যেতে পারে, তারা বুঝতে পারছে না।
গণিতবিদ আসলেন তাদের সাহায্যে, বললেন, "জ্যামিতির সূত্র প্রয়োগ করে সহজেই এর উচ্চতা নির্ণয় করা যাবে।" দণ্ডের ছায়া দেখে গণিতবিদ যখন সদৃশকোণী ত্রিভুজ গঠন করার চেষ্টা করছিলেন, আসলেন ইংরেজির শিক্ষক। সব শুনে মুচকি হেসে দণ্ডটি মাটি থেকে তুলে ভূমির উপর শুইয়ে দিলেন শিক্ষক। তারপর গজ ফিতা দিয়ে মেপে বললেন, "পুরোপুরি ১৫ গজ।"
ভাব নিয়ে চলে যাচ্ছেন ইংরেজির শিক্ষক, পেছন থেকে উষ্মাভরে গণিতবিদ বললেন, "ইংরেজির শিক্ষক, হু! আমরা বের করতে চাচ্ছি উচ্চতা, আর উনি বের করলেন দৈর্ঘ্য।"
3.
তিন ব্লন্ড রেস্টুরেন্টে গেল তাদের সাফল্য উদযাপন করতে। খুশিতে ঝলমল করছে তাদের চেহারা, পান-ভোজনের সাথে সাথে খুব হাসাহাসি করছে সবাই।
"সম্মানিত ভদ্র মহিলাগণ, কী নিয়ে আপনারা এত হাসাহাসি করছেন, জানতে খুব ইচ্ছে করছে আমার। " স্মিত হেসে তাদের কাছে এসে দাঁড়ায় বারটেন্ডার।
"ওহ, অবশ্যই!" উত্তর দেয় এক ব্লন্ড।" এই মাত্র গাণিতিক এই পাজলটার সমাধান করলাম আমরা। এটা করতে আমাদের সময় লেগেছে মাত্র এক মাস, যদিও পাজল বক্সের গায়ে লেখা ছিল '৬ থেকে ৯ বছর!"
4.
ছোট্ট কৌতুক বা কথন
i. গণিতবিদরা কখনো মরেন না, তারা তাদের কিছু ফাংশান (f) হারান মাত্র।
ii. একজন গণিতবিদ কখন সবচেয়ে বেশি অপমান বোধ করে?
যখন বলা হয়, “তোমার ব্রেন এপসাইলনের চেয়েও ছোট।”
iii. ০ যখন ৪ কে দেখে, তখন কী বলে?
আরে, আরে তোমার বেল্টটা তো খুব সুন্দর!
iv. পৃথিবীতে ১০ রকমের মানুষ রয়েছেঃ যারা বাইনারী বুঝে এবং যারা বাইনারী বুঝে না।
v. “আজকালকার শিক্ষার্থীরা গণিত এত কম জানে, খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার।” দুঃখ প্রকাশ করে বলেন এক প্রফেসর, “এই তো সেদিন, এক ছাত্র এসে জানতে চাইল, স্যার, জেনারেল ক্যালকুলাস (General Calculus) কি রোমান বীর ছিলেন?”
vi. ছোট বুশ যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, তখন হোয়াইট হাউসের এক প্রেস কনফারেন্সে গণিতবিদ এবং কম্পিউটার প্রকৌশলীদের তুলোধুনা করে বলেন, “এরা ক্লাসরুমে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে ডেমোক্রেটদের এজেন্ডার পক্ষে কাজ করে। দেশের প্রতিটি গণিত বা কম্পিউটার প্রকৌশল ডিপার্টমেন্ট অ্যালগোরিদম (AlGore-ithm)-এর কোর্স পড়ায়, কিন্তু কেউ কখনো জর্জ-বুশিদম (GeorgeBush-ithm) পড়ায় না।”
vii. ছোট বুশ বিদেশ সফরে আলজেরিয়াতে (Algeria) গেছেন। সফরসূচীর অংশ হিসেবে আলজেরীয়বাসীর সামনে এক ভাষণ দিলেন: “আপনারা জানেন, আমার খুব খারাপ লাগছে ইংরেজিতে কথা বলতে। খুব ভালো লাগত আপনাদের মাতৃভাষায় ভাষণটি দিতে পারলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ অ্যালজেব্রা আমি ভালো বুঝি না।”
5.
কম্পিউটার সায়েন্সের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কমন প্রশ্ন দেয়া হলো: 2 টু দ্য পাওয়ার 2 সমান কতো?"
লেভেল ১, টার্ম ১-এর ছাত্র কোনো চিন্তা-ভাবনা না করেই বলে বসে, "4"।
লেভেল ২, টার্ম ১-এর ছাত্র উইন্ডোজের স্টার্টমেনু থেকে "রান" বাটন প্রেস করে calc লিখে উইন্ডোজের ক্যালকুলেটর অ্যাপ্লিকেশনটি বের করে হিসেব করে, তারপর বলে, "ঠিক 4"।
লেভেল ৩, টার্ম ১-এর ছাত্র ভিজ্যুয়াল বেসিকে একটি ক্যালকুলেটর বানায়, তারপর তাতে ইনপুট দিয়ে আউটপুট হিসেবে বলে, "4.00"।
লেভেল ৪, টার্ম ১-এর ছাত্র সি প্রোগ্রামিং-এ ১০০ লাইনের একটি প্রোগ্রাম লিখে, এটিডিবাগ করে, তারপর রান করে বলে, "4.0e+00"।
লেভেল ৪, টার্ম ২-এর ছাত্র এ ধরণের গাণিতিক হিসেব করার উপযোগী একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বানায়, সেটি ইনস্টল করে, তার উপর একটি প্রোগ্রম লিখে, এবং উত্তর দেয়, "এখানে তো ফলাফল আসছে 4, কিন্তু গতরাতে কুৎসিত বাগটা দূর হয়েছি কিনা সন্দেহ হচ্ছে।"
থিসিস ডিফেন্ড করতে যাওয়া ছাত্র বলে, "কী কুক্ষণেই না কম্পিউটারে পড়তে এসেছিলাম! পাগল স্যারদের পাল্লায় পড়ে কনস্ট্যান্ট মুখস্ত মুখস্ত করতে আর মাথার চুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে জীবন শেষ হয়ে গেল, কোনো আনন্দ-ফুর্তিই হলো না!"
6.
বেলুনে ভ্রমণরত এক লোক হঠাৎ আবিষ্কার করল সে পথ হারিয়ে ফেলেছে। বেলুনকে একটু নিচে নামিয়ে সে চিৎকার দিল, "হাই, আমাকে একটু সাহায্য করতে পার? এক ঘন্টা আগে এক বন্ধুর সাথে দেখা করার কথা ছিল আমার, কিন্তু পথ হারিয়ে ফেলায় আমি বুঝতে পারছি না কোথায় এসেছি।"
নিচের লোকটি জবাব দিল, "তুমি রয়েছে উষ্ণ এক বেলুনে, ভূমি থেকে ৩৫ ফুট উঁচুতে, ৫৫ থেকে ৫৬ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ২৯ থেকে ৩০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্যে।"
“তুমি নিশ্চয়ই একজন গণিতবিদ।" বেলুনচারী বলে উঠে।
“হ্যাঁ, ঠিক ধরেছ তো! কিন্তু কীভাবে বুঝতে পারলে?" পথিক অবাক হয়ে উত্তর দেয়।
“হুম,” বেলুনচারী জবাব দেয়, "তোমার উত্তর গাণিতিকভাবে সঠিক, কিন্তু এসব তথ্য আমার কী কাজে লাগবে বুঝতে পারছি না। আসল ব্যাপার হল আমি এখনও আগের মতো পথ হারানো অবস্থায়ই রয়েছি। খোলাখুলি বললে, এখন পর্যন্ত তুমি খুব একটা উপকারে আসনি আমার।"
পথিক উত্তর দেয়, "তুমি নিশ্চয়ই এমবিএ পাশ করা ম্যানেজার।"
“হ্যাঁ, আমি তাই।" এবার বেলুনচারীর অবাক হবার পালা, "কিন্তু তুমি কীভাবে বুঝলে!"
পথিক উত্তর করে, "তুমি জান না তুমি কোথায় রয়েছ বা কোথায় যাচ্ছ। বন্ধুর কাছে তুমি এমন প্রতিজ্ঞা করেছ যা রক্ষা করার উপায়ও তোমার জানা নেই, কিন্তু আশা করছ তোমার সমস্যা আমি সমাধান করে দেব। আসল ব্যাপার হলো আমার সাথে সাক্ষাতের পূর্বে তুমি যেখানে ছিলে, সেখানেই রয়ে গেছ, কিন্তু কোনো ভাবে এটি এখন আমার দোষ হয়ে গেছে।"
7.
দৃশ্য ১: বনের মধ্যে চমৎকার রৌদ্রোজ্জ্বল এক দিন। খরগোশটি তার নিজের গর্ত থেকে বের হয়ে কম্পিউটার চালু করে, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওপেন করে, টাইপ করতে লাগল। হাঁটতে বেরিয়ে খরগোশকে দেখে পা টিপে টিপে তার কাছে আসল এক শেয়াল।
শেয়াল: [থাবা বের করে ধূর্ত হাসি দিয়ে] কী করছিস তুই?
খরগোশ: থিসিস লিখছি আমার, আগামী পরশু জমা দিতে হবে।
শেয়াল: [তাচ্ছিল্যভরে] অ! তা কীসের থিসিস?
খরগোশ: ওহ, আমার থিসিসের বিষয় হচ্ছে "খরগোশরা কীভাবে শেয়ালদের খায়!"
[বিশাল নিরবতা নেমে আসে কথোপকথনে]
শেয়াল: লিখলেই হলো! গুলতানির আর জায়গা পাস না। যেকোনো গাধাও জানে খরগোশরা কখনো শেয়াল খায় না।
খরগোশ: অবশ্যই খায়। আমি প্রমাণ দেখাচ্ছি, এসো আমার সাথে ।
খরগোশ ও শেয়াল খরগোশের গুহায় ঢুকে যায়। কয়েক মিনিট পর শুধু খরগোশ ফিরে আসে, তারপর আগের মতো ওয়ার্ডে লিখতে থাকে।
দৃশ্য ২: একটু পর গুহার কাছে আসে নেকড়ে। খরগোশের লেখা দেখে খুব কৌতূহল জাগে তার।
নেকড়ে: কী লিখছিস রে?
খরগোশ: "খরগোশরা কীভাবে নেকড়ে খায়", তার উপর একটা থিসিস করছি।
নেকড়ে: [অট্টহাসিতে ফেটে পড়তে পড়তে] এ রকম রাবিশ একটা জিনিস নিশ্চয়ই পাবলিশ করার চিন্তা করছিস না তুই! নাকি চিন্তা করছিস?
খরগোশ: রাবিশ না, আমার সাথে এসে দেখে যাও।
দুজনে ঢুকে পড়ে খরগোশের গর্তে, এবং আগের মতোই শুধু খরগোশ ফিরে আসে খানিক পর, মন দেয় থিসিস লেখায়।
দৃশ্য ৩: খরগোশের গুহা। এক কোণায় দেখা যায় শেয়ালের হাড়ের স্তুপ পড়ে আছে, অন্য কোণায় নেকড়ের হাড়ের স্তুপ। আরেক কোণায় বিশালদেহী এক সিংহ বসে বসে দাঁত খিলাচ্ছে।
নৈতিক শিক্ষা: থিসিসের বিষয়বস্তু হিসেব তুমি কী নির্ধারণ করেছ, তা কোনো ব্যাপার নয়। তথ্য-উপাত্তের জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেছ, তাও কোনো ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপার হলো,তোমার থিসিস সুপারভাইজর কে?। B-)