বসন্ত এসে গেছে- আজ পহেলা ফাল্গুন, ঋতুরাজের প্রথম দিন। ফুলের উচ্ছ্বাসে হাসছে আকাশ, কাঁপছে বাতাস, দুলছে আম্রমুকুল। অকারণের সুখে অলক্ষ্যে রঙ লাগছে অশোকে-কিংশুকে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম বয়াতির হৃদয়ের সুর আর অনুভূতি আজ প্রকাশিত হচ্ছে অভিন্ন আনন্দে। সে আনন্দ সঞ্চারিত হচ্ছে প্রত্যেক বাঙালির মনে। পলাশ-শিমুল-কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে নেমেছে আগুনঝরা উচ্ছলতার ঢল। বনের নিভৃত কোণে, মেঠোপথের ধারে কারও জন্য অপেক্ষা না করেই ফুটছে নাম না-জানা অসংখ্য সব ফুল। তরুণ মনে বিহ্বলতা ছড়িয়ে দিচ্ছে কোকিলের ডাক। প্রকৃতিতে বসন্তের রঙ লেগেছে ক'দিন ধরেই- তবে দিনপঞ্জির হিসাবে তার অভিষেক আজকের নতুন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে। প্রকৃতির অলৌকিক স্পর্শে রাধাচূড়া, নাগলিঙ্গম থেকে শুরু করে অসংখ্য বৃক্ষ এখন জেগে উঠছে। ফুলের মঞ্জুরিতে মালা গাঁথার দিন বসন্ত কেবল প্রকৃতিকেই নয়, আবহমান কাল ধরে বাঙালি তরুণ-তরুণীর প্রাণকেও রঙিন করে আসছে। এ দিনে তাই তরুণ-তরুণীদের প্রাণেও অনুরণিত হয় বাউল করিমের ভাষা, 'বসন্ত বাতাসে সই গো, বসন্ত বাতাসে/ বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে'। আজ তাই মেয়েরা খোঁপায় গাঁদা-পলাশসহ নানা রকম ফুলের মালা গুঁজে বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামা আর ফতুয়ায় শাশ্বত বাঙালির সাজে উৎসবের হাওয়ায় ভেসে বেড়াবেন শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর, চারুকলা, টিএসসি ও অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণসহ নগরীর এখানে-ওখানে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, মিন্টো রোড, জাতীয় সংসদ, চন্দ্রিমা উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বলধা গার্ডেন, ধানমণ্ডি লেক- সর্বত্রই আজ বইছে বাসন্তী হাওয়া।
↧