Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

উন্নয়নের ছোয়া কৃষি অর্থনীতিতে

$
0
0

দেশের খাদ্যভান্ডার উত্তরের চাষাবাদে ব্যাপক পরিবর্তন : ধান গম আলু ও মসলা জাতীয় আবাদের পাশাপাশি নীরব বিপ্লব নানা ফল-ফলারীতে মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে ভেতরে ভেতরে দারুণ ভাবে বদলে যাচ্ছে উত্তরের কৃষি অর্থনীতি। বাম্পার ধান চাল হবার কারণে দেশের খাদ্যভান্ডার বলে পরিচিত উত্তরের চাষাবাদে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। দেখে শেখা আর ঠেকে শেখার মধ্যদিয়ে নিজেদের প্রয়োজনে এনেছে চাষাবাদে রকম ফের। সোনালী ধান, গম, আলু আর মওসুমী শাক-সবজি কিছু মশলা জাতীয় আবাদের পাশাপাশি নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে নানা রকম ফল ফলারীতে। শীত প্রধান দেশের স্ট্রবেরী, আপেল কুল, থাই পেয়ারা, মাল্টা, কমলা, ড্রাগন কি হচ্ছে না এখানকার সোনাফলা মাটিতে। এসব আবাদে ভাগ্য বদলে গেছে অনেকের। কৃষি অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছে। আগে মূলত আমন ধান নির্ভর ছিল আবাদের একটা বড় অংশ। জমি ছিল এক ফসলা বৃষ্টিনির্ভর। সমন্বিত সেচ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কারণে এক ফসলা জমিতে এখন সারা বছর আবাদ হয়। সনাতন চাষাবাদ পদ্ধতির স্থলে যোগ হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি আর বীজ, কীটনাশক। ফলে উঁচু নিচু পরিত্যক্ত কোন জমি আর খালি থাকছে না। কিছু না কিছু হচ্ছে। ফলে উত্তরের মাঠে সবুজতা আর কৃষকের ব্যস্ততা সারা বছর ধরে। ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষি সংশ্লিষ্ট সরকারী স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের। তাদের আর ঘরে বসে থাকার জো নেই। আগে কৃষক পরামর্শের জন্য মাঠ কর্মীদের খুঁজলেও এখন দিন বদলেছে মাঠকর্মী খুঁজে ফিরছে আবাদকারীদের। উপরের চাপটাও এখন অনেক বেশী। উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান গম পাট ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ সার নিয়ে কৃষি বিভাগের লোকজন যাচ্ছে কৃষকের নাগালে। আবার ফল আর উদ্যান গবেষণা বিভাগের লোকজন যাচ্ছে নতুন প্রজাতি আর প্রযুক্তি নিয়ে। আর সব মিলিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কিছু। সরকারী প্রণোদনাও কাজে লাগছে। জৈব সার ব্যবহার ও কীটনাশকের বদলে আলোকফাঁদ, পারচিং পদ্ধতিতে পোকামাকড় দমন করছে। এই বদলে যাবার গল্পটা খুব বেশী দিনের নয়। উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে ক্রমাগত লোকসানের মুখে ঋণগ্রস্ত হয়ে ধুঁকছিল কৃষক। আর আবাদ করবে না বলে অভিমান করছিল। কিন্তু অভিমান করে বসে থাকতে পারেনি। কারণ, কৃষি যে তাদের রক্তে মিশে আছে কৃষি ধ্যান-জ্ঞান। মাটির ঘ্রাণ তাদের কাছে টানে। সেই টানের কাছে হার মেনে অভিমান ভুলে মাঠে নামে। লাঙ্গল চালায়, ঘাম ঝরিয়ে ফসল ফলায়। অনেক কষ্টের মধ্যে সদ্য ওঠা ফসল সকল মনোকষ্ট ভুলিয়ে দেয়। লাভ-লোকসান যাই হোক তাতে সাফল্য খোঁজে। রাজশাহী অঞ্চলের আমের খ্যাতি বহু প্রাচীন। চাহিদা ও দাম বেড়ে যাবার সাথে সাথে বেড়েছে বাগান। বাগানের পরিমাণ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এক সময় আমের অফ ইয়ার অন ইয়ার ধারা চালু থাকলেও এখন প্রযুক্তির কল্যাণে সেটি আর নেই। আম উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে চলছে গবেষণা। আম চাষীরা শিখে ফেলেছে নানা কৌশল। ফলে প্রতি বছর আমের মুকুল আসছে গাছ ভরে। উৎপাদনও ভাল। মাঝখানে কিছু অসৎ ব্যবসায়ীর কারণে আমে ফরমালিন কার্বাইডসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে আমকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেও সরকারী কঠোর পদক্ষেপ ও প্রচারণায় সে অবস্থা আর নেই। বরং প্রযুক্তির ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছে। ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ আম সরবরাহ করে আস্থা ও দাম দুটোই পাচ্ছে। বিদেশে রফতানীর বড় স্বপ্ন দেখছে আম চাষীরা। ধানের থেকে দাম বেশী বলে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোরের শত শত বিঘা জমিতে নতুন আম বাগান গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলে এখন প্রতি আম মওসুমে হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। এর পরিমাণ বাড়ছে। নতুন বাগানগুলোয় আম বাজারে এলে বেড়ে যাবে বাণিজ্যের পরিমাণ। বৃহত্তর রাজশাহী দিনাজপুরের আম, লিচুর পাশাপাশি আসছে রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম। দু’চার বছরের মধ্যে বনেদী হয়ে আম অর্থনীতিতে যোগ হবার ইঙ্গিত দিচ্ছে রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগানের বিস্তৃতি। আমের পাশাপাশি লিচু, বিদেশী জাতের পেয়ারা-কুলসহ নানা জাতের ফলের উৎপাদন বেড়েই চলেছে।


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>