দুপুরে শুয়ে অাছি হঠাৎ টিংটিং শব্দে ফোন এলো।মেয়েলি কন্ঠ।কে বুঝে না উঠতেই যেন একটা বুকভাঙা চিৎকার শুনতে পেলাম।দেখা করলাম।
ঘটনাটি যেমন বিভৎস তেমনি হিন্দুদের জন্য লজ্জাকর ও বেদনাময়।ঘটনাটি শোনার পর অামি নিজে একজন হিন্দু হিসাবে পরিচয় দিতে লজ্জা করছে।
গৌতম চন্দ্র সরকার, ফার্মেসি বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাশ করে এখন গাইবান্ধায় ড্রাগ ইন্সপেক্টর হিসাবে কর্মরত।দুহাজার ****্দ সালের কথা। উনি তখন রাবির কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পারিষদের সাধারন সম্পাদক।তিনি কোন একটা ধর্মীয় সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন।এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ই একটা মেয়ের সাথে সেই সূত্রধরে পরিচয়,প্রেম,মহব্বত,ভালবাসা,বিয়ে।মেয়েটি বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাবির কেন্দ্রীয় মন্দিরে তারই ঐ ধর্মীয় সংগঠনের কিছু ছেলেদের উপস্থিতিতে এক অানন্দঘন পরিবেশে ভগবান অগ্নিদেবকে স্বাক্ষী রেখে হিন্দু গান্ধর্বমতে সিঁদুরদানের মাধ্যমে বিয়ে হয়।বিয়ের পর দিন ভালই চলছিল।মেয়েটি বড় বেশি ধর্মভীরু।এবয়সে মানসিক বিকাশ যতটুকু ঘটার কথা ততটুকু ঘটেনি।বড় সাধাসিধে মেয়েটি।এই সরলতার সুযোগ নিয়েই তাকে হাতিয়ে নেই গৌতম।এক পর্যায়ে চাকরি পাবার অাগে দশলাখ টাকা যৌতুক নেয় মেয়ের বাবার কাছ থেকে।এদিকে বিয়ের কোন ডকুমেন্ট নাই।অার হিন্দু ছেলেদের কারনেই হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রি অাইন চালু হয়নি এখনও।চাকরিতে ঠোকার পর রুপ বদলে যায় গৌতমের।অার একটি মেয়ের সাথে পনেরলাখ টাকা যৌতুকের বিনিময়ে এফিট-এভিট হয়।সে ঘটনাও জানতে পেরে যায় গৌতমের সিঁদুর পরানো এই মেয়েটি।অনেক খুঁজে মেয়েটিকে বের করে তাকে সব জানায়।ঐ মেয়েটি বুঝতে পারে গৌতমের প্ররোচনা।মেয়েটি এফিড-এভিড ক্যানসিল করে অন্যত্র বিয়ে করে।
এবার গৌতমের সিঁদুর পরানো মেয়েটি গৌতমের দেয়া ঠিকানা অনুসারে তার বাসায় হাজির হয় পুত্রবধূর দাবি নিয়ে।এলাকার গম্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসে একটি অঙ্গিকার নামায় সই করে মেয়েটিকে পুত্রবধূ হিসাবে বাড়িতে থাকার অনুমতি দেয়।দুমাস প্রায় তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকার পর তাকে কোর্টে নিয়ে অাসা হয়।(ভাবুন কি পরিমান নির্যাতন হয়েছে তার উপর,একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট ও দেখলাম)। এদিকে যারা বিয়েটা দেখেছিল তারাও এখন তার প্রভুর কথামত চলছে।কেউ স্বীকার করছেনা বিয়েটি হয়েছিল।সবাই নির্বাকের মত তার প্রভুর কথা শুনে চলেছে।কোর্টে মেয়েটির নামে কেইস করা হয়েছে।দুটি কেইস একটি মেয়ে অপরটি মেয়ের বাবা ও দাদার নামে।কেসটি এমন একশ ধারা --মেয়েটি ছেলের বাড়িতে গিয়ে অাত্মহত্য ও অন্যান্য ভয়ভীতি দেখিয়ে পুত্রবধূ দাবি করছে।অপরটি এমন--মেয়ের বাবা-দাদা মিলে ছেলের বাসায় গিয়ে জোরপূর্বক অঙ্গীকার নামায় সই করে নিয়েছে।এটি কখনও সম্ভব! তাও হিন্দুদের দিয়ে। জয়পুরহাট থেকে রংপুর গিয়ে ক্ষমতা দেখিয়ে অঙ্গীকারনামায় সই করে নেওয়া! যত ক্ষমতাধর ব্যক্তিই হোক সম্ভব কখনও???
মেয়েটির বাবা অায়ুর্বেদি চিকিৎসক, দাদা মৎসব্যবসায়ী।এখন মেয়েটি পড়েছে ফাঁদে। কোর্টে যাওয়ার পর তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।অবলা জাতি কিছু করার নেই বিয়ে হয়েও ঘর সংসার করতে পারল না।কি করবে সে এখন??
হিন্দুদের বিয়ে, তাও অাবার অপারিবারিকভাবে তার উপর কোন ডকুমেন্ট নেই।এমনকি কিছু ছবি তোলা ছিল যা ছেলে ও প্রভুভক্ত ছেলেগুলোর হাতে।ওগুলো উদ্ধার করা কোনমতে সম্ভব না।অাজ দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তার সাথে ছিলাম।ছোটাছুটির উপর ছিলাম।এর কাছে ওর কাছে শুধু ছুটছিলাম।এ ঘটনা বুকে একটা দাগ এনে দিল!
অামার টাইমলাইনে কি কোন মানবতা ধারক বাহক জাজ কিনবা উকিল নেই যে তার পাশে দাঁড়াবেন। একটা লিগ্যাল এইড দিবেন।এই রকম ধর্মীয় শয়তানগুলোকে একটা শাস্তি দেয়া দরকার।কেউ অাছেন কি?
এই মেয়েটি হয়ত তার প্রাপ্য না পেয়ে দুদিন পর অাত্মহত্যা করবে। তাছাড়া কোন পথ খোলা দেখছি না।অামাদের হিন্দুদের একটা প্রব্লেম অাছে সবাই নিজ স্বার্থে স্বার্থান্ধ। কেউ কারো বাঁশ দেয়া ছাড়া অন্যের পাশে দাড়াই না।অামি নিজেও।খুব খারাপ লাগছে মেয়েটির জন্য।হায়রে হিন্দু সমাজ তোরা ধার্মিক হলি,ধর্মভীরু হলি মানুষ হলিনা।
বুকে ধুক করে চিৎকার উঠছে অামি যদি.............................!!!!!!!!!!
খুব কষ্ট হচ্ছে। এমনি কতনা মেয়ের জীবন হিন্দু সমাজে নষ্ট হচ্ছে।কেন যে হিন্দু হয়ে জন্মেছিলাম।মানুষ হতে ইচ্ছা হয় বড্ড।
হায়রে প্রভুরা ধর্ম বুঝলি, লুচ্চামি বুঝলি একটি মেয়ের অার্তচিৎকার বুঝলিনা।
অামিও দেখে নেব এসব প্রভুর দলকে।কথা দিলাম তিনবছর অপেক্ষা কর!!
↧
এভাবে মেয়েটার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে?
↧