ডেডলক ভাইয়ের সাথে আমার যেদিন দেখা হয়েছিলো- তখন ছিলো চৈত্রমাস। হুলুস্থুল রকমের গরম। এই গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বাঘ মহিষে এক ঘাটে পানি খাওয়ার প্রবাদ বাক্য চালু আছে গ্রাম বাংলায়। যেহেতু এখন বনে বাদারে বাঘ মহিষের সংখ্যা কমে গিয়েছে, তেমন একটা বাঘ-মহিষ ও নাই তার সাথে পাল্লা দিয়ে খাল-বিলও নাই। সব খালবিল পূর্ণ হয়ে আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিং উঠছে। এই আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিং এর যুগে চৈত্র মাসের গরমের সাথে বাঘ-মহিষের প্রবাদ বাক্য দেওয়াটা মনে হয় না মানানসই হবে। প্রবাদ বাক্যটা হওয়া উচিত ছিলো- "“চৈত্র মাসের গরমে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একই পথে একই দোকান থেকে সবাই তরমুজ খায়"।
আমার মাথায় এমন সুন্দর উক্তি আসলেও তা আদো প্রবাদ বাক্য হিসাবে প্রচলিত হবে কিনা তা নিয়ে আমার ব্যাপক সন্দেহ আছে। এই পৃথিবীতে দুই শ্রেণীর লোকদের মুখের কথা মানুষ প্রবাদ বাক্য হিসাবে বহুদিন মনে রাখে। এক নম্বরে হচ্ছে অতি বুদ্ধিমান লোক এবং অন্যটি হচ্ছে অতি নির্বোধ টাইপের লোক। এই দুই লোকের মাঝখানে যারা মাঝারি সাইজের বুদ্ধি নিয়ে ঘুর ঘুর করছে তাদের কথার তেমন একটা মূল্যায়ন নাই। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- বর্তমানে সর্ব উৎকৃষ্ট মানের উক্তি এবং সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ হচ্ছে- “"দয়া করে বিল্ডিং ধরে ঝাঁকাবেন না”"।
অনেক সমাজ সচেতন লোক আমাদের মন্ত্রী সাহেবের এহেন বিল্ডিং ঝাঁকানো উক্তি শুনে গম্ভীর হয়ে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলেছেন- “ "আমাদের মন্ত্রী সাহেবের এ রকম গবেট টাইটের উক্তি করা মোটেও উচিত হয় নি"”।
আমি বরাবরই গম্ভীর টাইপের লোকদের গুরুগম্ভীর সমাজ সচেতন কথাবার্তার বিরোধিতা করে এসেছি। আজও এর ব্যতিক্রম করছি না। গম্ভীর টাইপের উক্তি দেওয়া লোকদের বলছি- "“ভাই শোনেন, বাংলার এমন কষ্টকর, নির্মম মূহুর্তেও এমন নির্মল আনন্দ দেওয়াটা কিন্তু চারটে খানি কথা নয়। উনার এক উক্তিতে বাংলার মানুষ প্লাস বৈদেশিক মানুষের মুখেও মুচকি হাসি ফুটে উঠেছিলো। অনেকে-তো বৈজ্ঞানিক পন্থা অবলম্বর করে বিল্ডিং ধরে ঝাঁকা ঝাঁকি করেও ট্রাই করেছেন। এ রকম উক্তি দেওয়া যার তার পক্ষে সম্ভব নয়। আপনি আমি শত চেষ্টা করলেও এমন উক্তি দিতে পারবো না”"।
যাই হোক, কথা বলতে বলতে কোথায় চলে এসেছি। ছিলাম চৈত্র মাসে, আবারো চৈত্র মাসের তরমুজে ফিরে যাই।
{চলবে}