Quantcast
Channel: প্রজন্ম ফোরাম
Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

আলী ইবনে আবু তালিব - আল্লাহর সিংহ

$
0
0

http://farm3.static.flickr.com/2709/4539575023_3e43c737a0_m.jpg

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ) হলেন সুন্নী মুসলিম মতে ইসলামের শেষ খলিফা ও শিয়া মুসলিম মতে ইসলামের একমাত্র বৈধ খলিফা। হযরত আলীর পিতার নাম আবু তালিব ও মাতার নাম ফাতেমা বিনতে আসাদ (রাঃ)। আলী হলেন মহানবী (সাঃ) এর চাচাতো ভাই ও সর্বকনিষ্ট কন্যা ফাতেমা জোহরার (রাঃ) স্বামী। শিশু বয়স থেকেই তিনি রাসূলের সাথেই থাকতেন। দারিদ্রের কারনে চাচা আবু তালিবের পক্ষে যখন সন্তানদের ভরন পোষন করা সম্ভব হচ্ছিলো না তখন রাসূল চাচাতো ভাইদের মধ্যে আলীর দায়িত্ব নেন। ১০ বছর বয়সে আলী ইসলাম গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী যোদ্ধা। অসাধারন শোর্য্য বির্যের অধিকারী ছিলেন তিনি। হযরত আলীকে মহানবী আসাদুল্লাহ (আল্লাহর সিংহ) উপাধি দেন উনার বীরত্বের জন্য। ইসলামে অন্যতম তাৎপর্যপূর্ন এক তলোয়ারের নাম জুলফিকার। এই তলোয়ার একসময় ছিলো এক কাফেরের কাছে। লোকটার নাম মুনাবা বিন হাজাজ। বদর যুদ্ধে এই কাফেরকে মুসলমানেরা হত্যা করে। তখন জুলফিকার নামের এই তলোয়ারটি মুসলিম সেনাদের নিয়ন্ত্রনে আসে। এই তলোয়ার রাসূল নিজের কাছে রাখেন। আলী নিজেই বদর যুদ্ধে ৩৬ জন কাফেরকে হত্যা করেন। এই বিশেষ তলোয়ারটি তিনি আলীকে বিশেষ বীরত্বের জন্য উপহার হিসেবে দেন।

এক যুদ্ধ শেষে আলী নিজের জন্য রাসূলের মেয়ে ফাতেমাকে চান। ফাতেমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন আবু বকর ও উমর কিন্তু রাসূল রাজি ছিলেন না। আলী প্রস্তাব দিলে তিনি ফাতেমা জানান এবং ফাতেমা আলীকে পছন্দ করলে তাদের মধ্যে বিয়ে হয়। আলী ছিলেন অনেক সুদর্শন যুবক। তৎকালীন সময়ে সন্ধি স্থাপনের জন্য মেয়েদের উপহার হিসেবে দেয়া হতো। একবার রাসূল খ্রিষ্টান এক রাজার কাছ থেকে উপহার হিসেবে মারিয়া কিবতিয়াকে নিজের দাসী হিসেবে পেয়েছিলেন। একবার আলীর সাথে সন্ধি করতে কাফেরদের এক প্রতিনিধি নিজের মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেন। ফাতেমা এটা জানতে পেরে নিজের বাবার কাছে নালিশ দেন তখন ফাতেমার পিতা মানে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেন আলী যদি আমার শত্রুর মেয়েকে বিয়ে করে তবে সে যেনো মনে রাখে যে আমার মেয়েকে কষ্ট দিবে সে আমাকে কষ্ট দিবে। আলী রাসূলের নির্দেশে আর সেই মেয়েটিকে বিয়ে করেন নি।


হযরত আলীর মাজার ও মসজিদ

http://t1.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcS4EcSL_RjHIsXarYCSNIeOw_Gk8rx2jhHKzqn4YaYgzl7rZj7f5g

http://media.lonelyplanet.com/lpi/19615/19615-3/681x454.jpg


হযরত আলী (রাঃ) সুন্নীদের কাছে যতটা না গুরুত্ব বহন করেন শিয়াদের কাছে তার চেয়ে বহুগুন বেশি গুরুত্ব বহন করে। মূলত শিয়া মতবাদই গড়ে উঠেছে আলীকে কেন্দ্র করে। তিনি শিয়া মুসলিমদের ১২ ইমামদের মধ্যে প্রথম ইমাম। গুরুত্বের দিক থেকে শিয়াদের কাছে রাসূলের পরেই স্থান হচ্ছে আলীর এবং অনেক শিয়া মুসলিম এটাও মনে করে গুরুত্বের দিক থেকে ইমাম আলীর স্থান মহানবী (সাঃ) বাদে অন্যান্য নবীদের চেয়ে উপরে। বহুকাল আগে শিয়াদের মধ্যে এক চরমপন্থী মাঝহাব ছিলো। এই মাজহাবের নাম ছিলো গুরাব্বিয়া। এদের মতবাদ ছিলো আল্লাহ চেয়েছিলেন আলী ইবনে আবু তালিবকে উনার শেষ নবী বানাবেন কিন্তু জিব্রাইল ভুল করে ওহী দিয়ে দেন মোহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহকে। (নাউজুবিল্লাহ) এই কারনে ঐ শিয়ারা জিব্রাইলের সমালোচনা করতো। এই মাঝহাব এখন আর নেই। শিয়ারা নিজেরাই  এই মাজহাবকে কুফরী মাজহাব ও বাতিল ফিকরা হিসেবে মনে করে যেমন সুন্নীরা কাদিয়ানী আহমাদিয়াকে কুফরী মাজহাব ও বাতিল ফিকরা মনে করে। শিয়ারা আবু বকর , উমর ও উসমানকে মোটেই গুরত্ব দেয় না। তাদের সবকিছু রাসূল (সাঃ), আলী (রাঃ) ও বাকি ১১ ইমাম কেন্দ্রিক। তাদের প্রথম ইমাম আলী ও শেষ ইমাম মাহদী।


হযরত আলীর মোট ১১ সন্তান ছিলো। এদের মধ্যে হাসান ও হুসেইন ছিলো অন্যতম। হযরত আলীর খুবই ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলো উমর ও উসমান। উনারা এত ঘনিষ্ট ছিলেন যে উনার দুই সন্তানের নাম রেখে দেন উমর ও উসমান।

মহানবীর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার সাথে মেয়ের জামাই আলীর সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিলো। খোলাফায়ে রাশেদুনের ৩য় খলিফা উসমানকে কোরআন পাঠরত অবস্থায় হত্যা করা হয়। উসমানের স্থানে খলিফা হিসেবে বসা আলীর কাছে আয়েশা উসমান হত্যার বিচার চান। আলী বলেন বিচার করা হবে কিন্তু আয়েশার আলীর প্রতি সন্দেহ হয়। আয়েশা উয়ানার দুই ভাইকে নিয়ে আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দেন কিন্তু আয়েশা সেই যুদ্ধে পরাজিত হন এবং প্রায় ১০ হাজার সাহাবী শহীদ হয় সেই যুদ্ধে। এই যুদ্ধ মুসলিমদের প্রথম গৃহযুদ্ধ এবং ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।


হযরত আলীর (রাঃ) বানী -

‘আল্লাহর শপথ! যদি ষড়যন্ত্র অপছন্দনীয় ব্যাপার না হতো,তাহলে আমি হতাম বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ চতুর লোক ৷ কিন্তু প্রত্যেক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করাই পাপ ৷ আর প্রতিটি পাপই হলো অকৃতজ্ঞতা ৷ আর প্রতিটি হঠকারিতা বা চাতুর্য এমন এক পতাকার মতো যেই পতাকার মাধ্যমে কেয়ামতে তা চিনতে পারা যাবে৷ খোদার শপথ ! আমি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নতজানু হবো না, কিংবা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অক্ষম হবো না ৷"


পাপের কাজ করে লজ্জিত হলে পাপ কমে যায়, আর পুণ্য কাজ করে গর্ববোধ করলে পুণ্য বরবাদ হয়ে যায়।


সৎ কাজ অল্প বলে চিন্তা করো না, বরং অল্পটুকুই কবুল হওয়ার চিন্তা কর।

হযরত আলী (রাঃ) হলেন ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠ যিনি সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহন করেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন এক সাহসী যোদ্ধা। তাঁর বীরত্বের জন্য তাকে আসাদুল্লাহ নামে ডাকা হয়। তাকে আমেরুন মুমেনীন নামেও ডাকা হয়।

আল্লাহ পাক আমেরুন মুমেনীন হযরত আলী (রাঃ) সহ খোলাফায়ে রাশেদুনের সকল খলিফাদের জান্নাতুল ফিরাদাউস দান করুক এবং উনাদের আদর্শে আমাদের সকলকে উজ্জীবিত করুক।

(আমিন)


Viewing all articles
Browse latest Browse all 15150

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>