সোজাসাপ্টা টাইটেল হলেও উত্তরটা একটু জটিলই বটে। গত পর্বে আলোচনা করেছি ক্যমেরা কেনার মৌলিক কিছু ব্যপার নিয়ে। এবার আলোচনা করবো লেন্স কেনার ব্যপারে, আশা করি এর দ্বারা আপনি বুঝতে পারবেন কেন এবং কোন ধরনের লেন্স এর পেছনে টাকা খরচ করা উচিত..
শুরুতেই আবার রিপিট করা লাগছে যে সবকিছু নির্ভর করে আপনার বাজেট এবং চাহিদার উপর। তবে এইটুক নিঃসন্দেহে বলতে পারি যে আপনার যদি ক্যমেরা বডি কেনার পর অতিরিক্ত ১০০ ডলার খরচ করারও সামর্থ্য থাকে সেটা আপনি লেন্সের পেছনে করুন.. পিরিয়ড! এখন কোন লেন্স, কি লেন্স বা কেন লেন্সের পেছনে করবেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আমি যেহেতু নিজে প্রফেশনাল না তাই আমি নিজের বিশাল লাইফ এক্সপিরিয়েন্স থেকে তেমন কিছু বলতে পারবো না। তবে টুকটাক রিসার্চ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারি। কারো কাজে লাগলে লাগতেও পারে।
শুরুতেই আমার পার্সোনাল পরামর্শ হলো 'কিট' লেন্স নাম কীট ঘরে না ঢুকানো। এই জিনিশ প্রত্যেক ক্যমেরা বডির সাথে অফার করা হয়, তবে হ্যাঁ এটা ফ্রি না। এটার জন্যও আলাদা চার্জ করা হয় সাধারণত ১০০/২০০ ডলারের মধ্যে। এটা বলতেই হয় যে এই টাকা দিয়ে এই কোয়েলিটির লেন্স কেনা আমি রেকমেন্ড করি না। প্রথম কারণ হচ্ছে লেন্স গুলোর স্পিড বা এপেরচার ভ্যলু অনেক কম থাকে। এই লেন্সে নিয়ে পড়ে থাকলে স্পিড কাকে বলে এবং এপেরচার প্রায়োরিটি মোড কত মজার কখনই টের পাবেন না। আর দ্বিতীয় কারণ হলো কিট লেন্স গুলো যুম লেন্স হওয়ায় আপনাকে অলস বানিয়ে ফেলে। আমি আজ পর্যন্ত যতো প্রফেশনালের লেখা পড়েছি বা পডক্যস্ট শুনেছি সবখানে একটাই পরামর্শ নতুনদের জন্য সেটা হলো "Use your feet" আর সেজন্য আপনার দরকার শুরুতেই একটা নরমাল প্রাইম লেন্স (যেটাতে যুম করার অপশন নেই) দিয়ে শুরু করা। তাহলে খুব সহজেই ফটোগ্রাফির বেসিক গুলো ধরতে পারবেন। কোনো প্রকার রিসার্চ বা পড়াশোনা ছাড়াই!
তবে প্রাইম লেন্স, যুম লেন্স বা ওয়াইড লেন্স যেটাই কিনুন কিছু বিষয় কেনার সময় খেয়াল রাখা উচিত। বিষয় গুলা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করছি... খুব বেশী টেকনিক্যল ডিটেইলসে না গিয়ে
একটা ছবি দেখে সবার আগে যেটা আমাদের চোখে পড়ে তা হলো ছবির ডিটেইলস এবং শার্পনেস। এই দুটি ১০০ পার্সেন্ট নির্ভর করে আপনার ক্যমেরা বডির সাথে সংযুক্ত ঐ লেন্সের উপর। ছবিতে অতিরিক্ত সফটনেস থাকলে সেটার জন্য ক্যমেরাকে গালী দিয়ে কোনো লাভ নেই। এটা আপনার লেন্সের ক্যরেক্টার। শুধু মাত্র লেন্স বদলে আপনি একই ছবি একই ক্যমেরা বডি ব্যবহার করে আকাশ-পাতাল পার্থক্য পাবেন। কেন?
কারণ প্রত্যেক লেন্সের একটা সুইট স্পট থাকে। যেটা ছবির মাঝামাঝি এরিয়ার মধ্যেই হয় সাধারণত। বেশীর ভাগ লেন্সই সুইট স্পটে রেইজর শার্প সেখানে যদি আপনার সাবজেক্ট রাখতে পারেন তাহলে লেন্সের শার্পনেস খুব একটা ব্যপার না। তবে ল্যন্ডস্কেইপার দের জন্য কর্ণার শার্পনেস বেশ ইম্পর্টেন্ট। তাই ভালো লেন্স কিনলে আপনি ছবির যে কোনো স্থানে শার্পনেস আশা করতে পারেন। যদিও শার্পনেস আরো কিছু টেকনিক্যল বিষয়ের উপর নির্ভর করে সেগুলা আপাতত আমরা আলোচনা করবো না।
বিভিন্ন লেন্সের শার্পনেস টেস্ট করার জন্য এই ধরনের ছবি বেশ হেল্পফুল। কোনো লেন্স কেনার আগে আমি রেকমেন্ড করি ঐ একই ফোকাল লেন্থের আরো কয়েকটি লেন্সের শার্পনেস রিলেটেড টেস্ট দেখে নেয়ার জন্য। একটু খুঁজলেই অনলাইনে পেয়ে যাবেন
কালার রেনডিশন! এটা অনেক সিচুয়েইশনে ফটোগ্রাফার দের জন্য বেশ প্রয়োজনীয় একটা ব্যপার। আপনি যেভাবে ছবিটা দেখলেন সেভাবে যদি প্রেজেন্ট না করতে পারেন তাহলে ছবিটার ভাবমূর্তি আর কি রইলো! ছবির কালার কতটা সুন্দর ভাবে এবং কতটা রিয়েলিস্টিকলি আপনি উপস্থাপন করতে পারছেন সেটাও নির্ভর করে লেন্সের উপর। যেমন, কিছু লেন্স খুব সুন্দর ভাবে রেড কালার ফুটিয়ে তুলতে আবার কিছু লেন্স রেড কালার দেখাতে গিয়ে ক্রম্যটিক এবারেশন বা সংক্ষেপে CA নামক সমস্যা সৃষ্টি করে।
ছবিটিতে খেয়াল করে দেখুন। একটা অতিরিক্ত কালার দেখা যাচ্ছে সাবজেক্টের কর্ণারে। এটাই হলো ক্রম্যটিক এবারেশন। এই সমস্যার কারণে অনেক সময় ছবির শান্ত এরিয়া গুলো অনেক ব্যস্ত দেখায়। এবং এটাই হতে পারে আপনার ছবি নষ্টের একটা কারণ!
লেন্স ভিনিয়েটিং, অনেকেই পছন্দ করেন অনেকেই করেন না।
ছবির কর্ণার ডার্ক করে দেয়াই লেন্স ভিনিয়েটিং ইফেক্ট নামে সুপরিচিত। অনেকেই সাবজেক্টের প্রতি এটেনশন ড্র করার জন্য এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে করে থাকেন তবে এটা অনেক সময় আপনার লেন্সের ক্যরেক্টারিস্টিকস থেকে আসতে পারে। তাই আপনি লেন্স কেনার আগে দেখে নিতে পারেন আপনার লেন্স কতটুক ভিনিয়েটিং সৃষ্টি করছে।
চলবে..