আবে, মার্কেল অবাধ মুক্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ইংক চুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে!
শিনজো অ্যাবে ও অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের অবাধ মুক্ত বাণিজ্য তৈরী করতে চাচ্ছে, জাপানের সঙ্গে একটি অবাধ মুক্ত বাণিজ্যের সন্মতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে প্রায় চার বছর ধরে আলাপ আলোচনায় এই চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়ার হয়েছে।
উভয় দেশের নেতা গত রোববার এই অবাধ মুক্ত বাণিজ্যে সুবিধার কথা তুলে ধরেন। জাপানি প্রথম সারির মধ্যস্থতাকারীরা এই চুক্তি বিপক্ষে খুব শীঘ্রই ধর্মঘট করার চাপ দেওয়া হচ্ছে, বলা হচ্ছে জাপান ও ইউরোপের এই অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি বন্ধ করতে হবে।
কারেন্সিগুলোতে এর প্রভাব ও বিস্তারিত দেখুনঃ https://goo.gl/y90j15
আবে, মার্কেল অবাধ মুক্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে, ইংক চুক্তির আহ্বান !
বাউলি বনঃ সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের এক সরল সমীকরণ
বাংলা মায়ের রূপের মহিমা দেখতে ও জানতে হলে ঘর হতে দুই পা ফেলে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। দেশে এমন এমন দর্শনীয় স্থান আছে যা বিদেশের দর্শনীয় স্থানকে হার মানায়। তেমনি ভ্রমণ পিপাসুদের অবকাশ যাপনের জন্য অনন্য পর্যটন কেন্দ্রের নাম কুয়াকাটা। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার শেষপ্রান্তে সাগর পাড়ের জনপদ কুয়াকাটা। আর এ কুয়াকাটার মধ্যে আরেকটি অপরূপ সৌন্দর্যপূর্ণ স্থানের নাম হলো বাউলি বন। বাউলি বনের নৈসর্গিক রূপ কুয়াকাটার সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। কুয়াকাটার বেলাভূমের একই স্পটে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বিরল মনোরম সৌন্দর্য। একদিকে বিশাল সাগর, নয়নাভিরাম ঝাউবন, সেইসঙ্গে হাজার হাজার লাল কাঁকড়ার প্রাকৃতিক লুকোচুরি খেলার মনোরম দৃশ্যে আকৃষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার পর্যটক-দর্শনার্থী। শুধু দেখতে নয় হাজার হাজার পর্যটক বাউলি বনে ছুটে আসছে লাল কাঁকড়ার সাথে খেলা করতেও। ১৫৪ হেক্টর জমির উপর বিশাল এ উপকূলীয় ঝাউবন দেখলে যেকোন পর্যটকের মনে আসবে আনন্দের নতুন মাত্রা। বাউলি বনের নৈসর্গিক রূপ যেকোন বয়স/শ্রেনীর পর্যটকের মন জয় করতে সক্ষম। তাই প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক-দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর থাকছে বাউলি বন। পৃথিবীর যেখানেই থাকুন না কেন বাউলি বনের অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আপনিও আমন্ত্রিত। আসুন উপভোগ করুণ এবং সুন্দর স্মৃতি নিয়ে ঘরে ফিরুন।
[B]ওপেকের প্রস্তাবিত চুক্তি বৃদ্ধি, তবে অ-উৎপাদনকারীদেরও যুক্ত হতে হবে
ওপেকের প্রস্তাবিত চুক্তি বৃদ্ধি, তবে অ-উৎপাদনকারীদেরও যুক্ত থাকা উচিত: একটি সূত্রের তথ্যমতে
ওপেক সংস্থাটির কাছে উৎপাদনকারীরা জুন মাসের পরেও তাদের তেল উত্তোলনের এই চুক্তির বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানিয়েছেন, কিন্তু রাশিয়া এবং অন্যান্য অ-উৎপাদকদের বোর্ডে থাকা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে, এ ব্যাপারেটি গোপন সুত্রে মানুষ বলাবলি করছে।
এই বছরের ১লা জানুয়ারিশেুরু থেকে ছয় মাসের জন্য তেলের প্রতিদিনের উত্তোলন 1.2 মিলিয়ন ব্যারেল কমিয়ে আনতে তাদের মাঝে এই চুক্তিটি সাক্ষর করা হয়। তখন থেকে এই চুক্তিটি থাকার দাম আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
অথচ অনেক বেশী আয় এবং শিল্প নির্ভর দেশ আমেরিকায় বেড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বিগুণের বেশি উত্পাদন করেতে চায়।
কারেন্সিগুলোতে এর প্রভাব ও বিস্তারিত দেখুনঃ https://goo.gl/oGAMdu
মোবাইলগ্রাফী-২০ (ফুলের ছবি)
১। ও শেফালী লুকিয়ে আছিস ঘাসের বুকে
ঝরে পড়লি অসময়ে-বল্ না তুই কোন সে শোকে?
সব সময়ের সঙ্গী মোবাইল যেহেতু। কোনো কিছু সুন্দর দেখলেই ক্লিক হয়ে যায় -যেনো এটা অটো হয়ে গেছে। বিভিন্ন সময়ের তোলা কিচু মোবাইলগ্রাফী নিয়ে আবার হাজির । এবারও ফুলের ছবি। মৌসুম অনুযায়ী ফোটা ফুল....... যখন ইচ্ছে তখন তুলেছি। আমার চোখে সুন্দর যা -তা আমি একা দেখবো কেনো তাই আপনাদেরকে বিরক্ত করতেই পোস্ট করা হাহাহা। যদি ভাল লাগে তবেই না কষ্ট সার্থক। পোস্ট সাজানোটাও সময় সাপেক্ষ। কত পোস্ট সাজানোর জন্য আর দেয়া হয় না। আচ্ছা যাই হোক তো এবার স্ক্রল ঘুরিয়ে দেখতে থাকুন ফুলের ছবি। এবার ফুলের গায়ে লিখে দিছি ফুলের নাম।
২। বৃষ্টি ধোঁয়া কামিনীর পাতা-দেখো কেমন লাগছে সবুজ
একটি ফুলের পাপড়ি এনে দাও না বন্ধু-মন যে আবেগী অবুঝ
৩। ফুলের ডালা সাজিয়ে রাখি সন্তর্পণে-যদি তুমি আসো। শুকিয়ে ফুল হয় উদাসীন অহহো না আমি হই উদাস। ভাবি আর কুঁড়াবো না ফুল তোমার জন্য। মন দেউড়িটা খুলে রাখি-তুমি ভুলেও এ পথ মাড়াও না-তাতে কি আমি রোজ সকালে তোমার জন্য সাজিয়ে রাখবো রঙ্গন শিউলী আর বেলীর ফুলে। এসো কিন্তু সময় হলে-
৪। কাঠবেলীটা সবুজ বুকে-কেমন দেখো আছে শুয়ে
কেমন করে সজীবতার- স্নিগ্ধ ফসল যাচ্ছে রোয়ে
ধরো বন্ধু আমি যদি-থাকি তোমার শুয়ে বুকে
প্রেম রোবে কি ভালবেসে-সজীব মনে অথৈ সুখে?
৫। এমনি তো জীবন-কেউ তরতাজাই চলে যায় এই ধরা থেকে আর কেউ বুড়ো হয়েও পড়ে থাকে রোগে সোগে জীর্ণতায়। এখানেই তো সুখ আর দু:খ। এই দেখো -মরার পাশেই হেসে বেঁচে ফলবতী গাছ। কেমন বলো-জীবনতো মোদের এমনই তাই না।
৬। না, না আমি গোলাপ চাই-তোমার মনের মত শক্ত গোলাপের ছোয়া চাইনে বাপু। আমি তবে গোলাপই চাই-যাতে আছে স্নিগ্ধতার মাতাল করা ঘ্রাণ। তুমি হয়ে থাকো সেই কাঠগোলাপই-আর আমি হবো হাসনা হেনা।
৭। লাল সবুজের মাখামাখি-সেতো থাকবেই চিরকাল
আর আমিই বাবা রইলেম নে তোমার বুকের মাঝার। ছেড়ে চলে যাও-ফিরে আর আসলে না এদিক মাড়ালে না । ভালবাসার স্বপ্নও দেখতে জানো না। আচ্ছা তুমি যদি সবুজ হতে তবে কিন্তু আমি লালই হতাম-ছুয়ে থাকতাম তোমার বুকে। কি মন্দ বলেছি কি?
৮। রক্ত জবা এনে দাও গো- পরিয়ে দাও খোঁপায়
জীবন আমার রঙিন হবে-এমন সুন্দর তোফায়
কানের দুলটা বানাতে পারি-দাও না এনে রক্ত জবা
বলছো নাকো কোনো কথা-আচ্ছা তুমি কিগো বোবা?
৯। তুমি নিচের মরা দূর্বাঘাস আর এমনই সজীব কামিনী পাতা। তুমি মরে বেঁচে থাকো আর আমি বাঁচি মুগ্ধতায় সজীবতায়। আমার প্রহরগুলো কাটে বড্ড সুখে। আমি প্রভূর সৃষ্টির সকল সৌন্দর্য্য ভালবাসি যে। তুমি বড্ড বাস্তবমুখী। একটু কাল্পনিক হওতো এবার।
১০। ঝরে পরে ফুল আয়ূ যদি ফুরায় তার
অন্য ফুলের হৃদয় পুড়ে দেখো কেমন ছারখার
নুয়ে আছে জবা ফুলটি-সাথী তার গেছে ঝরে
দিবারাতি ফুলের চোখে-তবে কি সে অশ্রু ঝরে।
১১। বেলী ফুলের কলি- এখন ঘ্রাণ নেই। ফুটলেই ঘ্রাণে মাতাল হই। অথচ আমরা মানুষ নিজের মাঝেই চুপসে থাকি। ফুটে উঠিনা মানুষের সেবায়। আমাদের ঘ্রাণে কেউ সহজে মাতাল হয় না্ তাই না?
১২। কাঁটার মাঝে ফুটে থাকে রক্ত রঙা ফুল
হাত বাড়ালেই রক্ত ঝরবে-করো না সে ভুল
চাও গো যদি দিতে আমায় উপহার একটা কিছু
ভালবাসি বল তবে -তোমার মুখটি করে নিচু।
১৩। বেলীর ঘ্রাণে মাতাল আমি-তুমি তবে কিসের মাতাল
তোমার বাস যে আকাশ মাঝে -আমি থাকি পাতাল।
১৪। কাঠগোলাপ সুবাস নেই তাতে কি-তার সৌন্দর্য্য আছে।
১৫। কাঠগোলাপ
১৬। নাম জানি না ওরে ফুল-রাগ করিস না আমার সাথে
ভালবাসি তাইতো দেখ না-দেখা করি রোজ প্রাথে
লাল টুকটুক শাড়ি পড়ে-বসে আছিস সবুজ পাতায়
তোরে নিয়ে ইচ্ছে লাগে-কাব্য লিখি মনের খাতায়।
১৭। জবার বাগে আগ লেগেছে-ধোয়া কেনো নাইরে
দৃষ্টি দিয়ে দেখলে পরে-চোখ পুড়ে হয় ছাইরে......
১৮। হলুদ শাড়ি পড়ে গোলাপ সেজে আছে রাণী
ও গোলাপ তোর রাজা কোথায় বলবি একটু খানি
রাজা ছাড়া থাকিস একা-ভয় কি লাগে না তোর
একা কি তোর বোর লাগে না-কাটাস ক্যামনে রাত ভোর।
১৯। কচমচ কচমচ
২০। হলুদ গাদার বাগান
২১। কত জাতের ফুল যে ফুটে-আহা সুন্দর ধরায়
ফুটে থাকে ছয় ঋতুতে-হোক না চৈত্রের খরায়।
ভালবাসি ফুল যে আমি-ভালবাসি সবুজ পাতা
এখানটাতে যেনো আমার স্বপ্ন বিছনা পাতা।
ছবির সাথে মিলিয়ে মাত্রই লিখেছি -তাই এতে তাল মাত্রা লয় কিছুই ঠিক নাই .........
হার্টের জন্য যে খাবার গুলি উপকারি
হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারি খাবারের কথা বললে আমাদের সামনে যেসব খাবারের কথা মনে আসে সেগুলো ছাড়াও কিছু খাবার রয়েছে। এসব খাবারের কথা তুলে ধরা হলো এ লেখায়।
শিমঃ শিমের এ স্বাস্থ্যগত উপকারিতার কথা আগে মানুষ জানত না। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, শিমের আঁশ ও এর পটাসিয়াম হৃদযন্ত্রের (হার্ট) জন্য খুবই উপকারী। এ ছাড়া শিমে রয়েছে প্রোটিন, যা মাংসের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে কাজ করে। এটি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন প্রচুর শিম খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। খাবারের সঙ্গে তরকারি হিসেবে পরিমিত শিম খেলেও উপকার মিলবে।
আঙুরের জুসঃ আঙুরের জুসে রয়েছে হৃদপিণ্ডের জন্য বহু উপকারী উপাদান। তবে এটি শতভাগ আঙুরের জুস হতে হবে। অর্থাৎ স্বাদ বাড়ানোর জন্য বাড়তি চিনি কিংবা অন্য কোনো উপাদান মেশানো যাবে না।
ডিমঃ ডিম পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বহুদিন ধরেই পরিচিত। তবে এর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, ডিম হৃদপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং উপকারী। এতে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, ১৩ ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল। আর একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে তাতে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে যায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত।
পেঁপেঃ বিভিন্ন শাকসবজি খেলে হৃদরোগ থেকে দূরে থাকা যায়। আর এ তালিকায় ওপরের দিকে রয়েছে পেঁপে। গবেষকরা জানান, পেঁপেতে রয়েছে লাইকোপেন। এটি হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। টমেটোর তুলনায় পেঁপেতে রয়েছে প্রায় আড়াই গুণ বেশি লাইকোপেন।
ডার্ক চকোলেটঃ অনেকেই চকোলেটকে ‘শত্রু’ হিসেবে বিবেচনা করেন। কোকোয়া বার দিয়ে তৈরি ডার্ক চকোলেট টাইপ টু ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে। ২০১৫ সালের এক গবেষণায় জানা যায়, ডার্ক চকোলেট খাওয়ার পর রক্তচাপ বেশ কমে যায়। আর রক্তচাপ কমলে হৃদরোগও কমে যায়। গবেষকরা বলেন, ডার্ক চকোলেট প্রতিদিন এক থেকে দুই আউন্স পরিমাণ খেলেই উপকার পাওয়া যাবে।
নিপুণ সৃষ্টি
কাউকে যদি বলা হয়, একটি বিশাল অট্টালিকা বা একটি রাজপ্রাসাদ নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে, তাহলে কেউ নিশ্চয় এটা বিশ্বাস করবেন না। যদি কেউ বলে, দেখ, এই দালানটি হঠাৎ নিজের থেকে তৈরি হয়ে গেল, সবাই তাকে পাগল বলবে। তাহলে বলুন, এ বিশ্ব চরাচর, এই যে সুউচ্চ আকাশ আর সুবিস্তৃত যমীন, এই ঊর্ধ্বজগত আর নিম্নজগত কীভাবে একজন স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে? কোনো বানানেওয়ালা ছাড়া আকস্মিকভাবে অস্তিত্ব লাভ করতে পারে? নিশ্চয় এসবের একজন স্রষ্টা আছেন। একজন অসীম ক্ষমতাবান নিয়ন্ত্রক আছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেন: ‘ তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা? তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না’ (সূরা আত-তূর: ৩৫-৩৬)।
একদা এক গ্রাম্য বেদুঈনকে বলা হয়েছিলো কিভাবে তুমি তোমার প্রতিপালককে চিনলে? তখন তিনি বললেন-পদচিহ্ন অতিক্রমকারীর প্রমাণ বহন করে, উটের মল উষ্ট্রীর অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে। তাহলে সুউচ্চ আসমান, সুপ্রসস্ত জমিন এবং উত্তাল সমুদ্র কেন সর্বশ্রোতা এবং সর্বদর্শীর অস্তিত্বের প্রমাণ করবে না?
প্রথম আমেরিকান মহাকাশচারী জন গ্লেন বলেন: “এ ধরনের সৃষ্টি দেখেও তুমি আল্লাহর উপর ঈমান আনবে না এটা অসম্ভব! এ সৃষ্টি তো আমার ঈমানকে আরো মজবুত করেছে। আমি এ চিত্রের আরো কিছু বিবরণ চাই।”
আল্লাহ তায়া’লা বলেন: আল্লাহ যথার্থরূপে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। এতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে)। (আনকাবুত: ৪৪)।
আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন: ‘ তারা কি তাদের উপরে আসমানের দিকে তাকায় না, কিভাবে আমি তা বানিয়েছি এবং তা সুশোভিত করেছি? আর তাতে কোনো ফাটল নেই। আর আমি যমীনকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক প্রকারের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদ্গত করেছি আল্লাহ অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশ হিসেবে’ (সূরা কাফ : ৬-৮)।
যে ব্যক্তি আসমানের দিকে তাকাবে, আসমানের নিপুণ সৃষ্টি, আসমানের সৌন্দর্য-বৈচিত্র্য এবং তার সুউচ্চতা ও শক্তির প্রতি লক্ষ্য করবে, সে তার মধ্য দিয়ে আল্লাহ তাআলার অসীম শক্তি ও ক্ষমতাই দেখতে পাবে।
বিস্তারিত পড়ার জন্য: bn.islamkingdom.com/s2/46635
আমাদের গ্রামেই আছে এশিয়ার একমাত্র “পানি জাদুঘর”
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রাম। সেই গ্রামেই আছে এশিয়া মহাদেশের একমাত্র ‘পানি জাদুঘর’। এ জাদুঘরের এক কক্ষে দাঁড়িয়ে অবলোকন করা যায় আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশের ৮৭টি নদ-নদীর পানি! স্বচ্ছ কাচের জারে সংরক্ষণ করা হয়েছে এ পানি। শুধু ৮৭ নদ-নদীর পানি দেখাই নয়, ওই সব নদ-নদীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যেরও ধারণা মেলে ওই জাদুঘরে। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর স্থাপিত হয় এ ‘পানি জাদুঘর’। এরপর যতই সময় গড়িয়েছে ততই এ জাদুঘরে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ব্যাপ্তি বেড়েছে। ঢাকা-কুয়াকাটা সড়কের পাশেই নির্মিত পানি জাদুঘরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, দোতলা টিনের ঘরের সামনে **ুর ওপর স্থাপন করা রয়েছে একটি নৌকা। এতে মানবসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদ-নদীতে নৌকা আটকে থাকার বাস্তব ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঘরটির দোতলায় প্রায় ৫০০ বর্গফুটের পানি জাদুঘরের বিভিন্ন স্থানে সারি সারি সাজানো রয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ও গ্রামীণ বাংলার মানুষের জীবিকা অর্জনের নানা উপকরণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—মাছ শিকারের ঝাঁকি জাল, খুচনি জাল, নৌকা, চাঁই, পল্লা, কাঁকড়া শিকারের চাঁই ও তাঁত বোনার মেশিন। কৃষিজমির উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের জন্য মাটির তৈরি মাইড, বাঁশের তৈরি ডোলা, মুড়ি ভাজার তলছা এবং ঝারড়া, মাটির তৈরি খাদ্য রান্নার হাঁড়ি-পাতিল, খাবারের থালা ও বাসন, পিতলের তৈরি থালা, বাটি, বদনা, মগিসহ নানা উপকরণ। দেয়ালে শোভা পেয়েছে দেশীয় খাল, নদ-নদীর ছবি, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, জেলে এবং কুমার, তাঁতিসহ সব স্তরের মানুষের জীবনধারণ ও জীবিকা অর্জনের নানা দৃশ্য। জাদুঘরটি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। জাদুঘর পরিদর্শন বাবদ শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি ১০ টাকা। স্থানীয় জেলার এবং বাংলাদেশি জনগণ জনপ্রতি ২০ টাকা। দেশি পর্যটকদের জনপ্রতি ১০০ টাকা। এ জাদুঘর স্থাপনের পর পর্যটকদের আগমন বাড়ছে। প্রতিদিন জাদুঘর পরিদর্শনে কমপক্ষে দেড় শতাধিক পর্যটক আসে। দেশি-বিদেশি সর্বস্তরের মানুষ নদ-নদীর সৃষ্টির ইতিহাস থেকে শুরু করে নদী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে। এই পানি জাদুঘরটি যদি সরকার নিজস্ব উদ্যোগে কুয়াকাটায় স্থানান্তর করে, তবে দর্শণার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশাবাদি সুশীল সমাজ।
আমি কি আমার পরিচয় গোপন রাখতে পারি?
আমি মৃ**। আমি ঢাকায় থাকি । আমি আমার পরিচয় গোপন রাখতে চাই।
এক দুর্গম নয়নাভিরাম বুনো ঝর্ণা
বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দিতে অবস্থিত সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকা ভেতরে একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত বা ঝর্ণা এটি। হামহাম নামের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত দিয়ে থাকেন। কারও কারও মতে এটার সাথে গোসলের সম্পর্ক আছে, "হাম্মাম" যার অর্থ গোসলখানা সেখান থেকেই এটার উৎপত্তি।আবার কারও মতে স্থানীয়
সিলেটী উপভাষায় "আ-ম আ-ম" থেকে এটার পরিবর্তিত হয়ে হামহাম হয়েছে, যার অর্থ হল পানির তীব্র শব্দ। সিলেটের উচ্চতম ঝর্ণাগুলো নাম লিখতে হলে তাতে চলে আসবে হাম হাম ঝর্ণার নাম। ২০১০ সালের শেষদিকে স্থানীয় পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে দুর্গম জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে একদল পর্যটক এই ঝর্ণা আবিষ্কার করেন বলে জানা যায়। দুর্গম জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা এই ঝর্ণাটির উচ্চতা নিয়ে দুটো তথ্য প্রচলিত আছে, কারও মতে এটি ১৩৫ ফুট উঁচু, কারও মতে এটি ১৬০ ফুট। তবে ঝর্ণার উচ্চতা বিষয়ে কোনও প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরীক্ষিত মত নেই। সবই পর্যটকদের অনুমান। তবে গবেষকরা মত প্রকাশ করেন যে, এর ব্যাপ্তি মাধবকুণ্ডের ব্যাপ্তির প্রায় তিনগুণ বড়। এখানে যেতে প্রথমেই আপনাকে ঢাকা বা যেখান থেকেই যান না কেন, সেখান থেকে আগে পৌঁছতে হবে সিলেট, শ্রী-মঙ্গল কিংবা সরাসরি মৌলভীবাজার। তারপরে সেখান হতে কমলগঞ্জ। ট্রেনে করে আপনি যেতে পারেন শ্রীমঙ্গল। সেখান থেকে জীপ রিজার্ভ করে কলাবন-পাড়া। কমলগঞ্জ হতে আদমপুর বাজার পর্যন্ত বাস ভাড়া পড়বে ১০ থেকে ২০ টাকা। সেখান থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ভাড়ায় সিএনজি নিয়ে আপনি অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারেন আদিবাসী বস্তি তৈলংবাড়ী কিংবা কলাবন বস্তি পর্যন্ত। সেখান থেকে আরও প্রায় ৮ কিঃমিঃ পথ পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত সেই হামহাম জলপ্রপাতের। এই ঝর্ণায় যাবার সেরা সময় হল বর্ষাকাল, তবে বছরের অন্যান্য সময়েও এর সৌন্দর্য যে কমে যায়, তা নয়। বর্ষায় এতে থাকে প্রচুর পানি, যার ফলে সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহুগুণে। কিন্তু একই সাথে যাবার পথটাও হয় অনেক বেশি দুর্গম। শীতকালে আপনি তুলনামূলক কম কষ্টে যেতে পারবেন এখানে, কিন্তু সে সময় ঝর্ণাতে পানি থাকবে কম। হামহাম যাওয়া মানে যে শুধু একটা ঝর্ণা দেখতে যাওয়া, তাই নয়। এর জন্য আপনাকে ঢুকতে হবে গভীর অরণ্যে, যেতে হবে কাদা মাটি পার হয়ে, কখনও উঠবেন, কখনও নামবেন কখনও দিনের আলো হারিয়ে যাবে আপনার চোখের সামনে থেকে। হাম হাম যাবার পথ এবং এর সংলগ্ন রাজকান্দি বনাঞ্চলে রয়েছে সারি সারি কলাগাছ, জারুল, চিকরাশি ও কদম গাছ। এর ফাঁকে ফাঁকে উড়তে থাকে রং-বেরঙের প্রজাপতি। ডুমুর গাছের শাখা আর বেত বাগানে দেখা মিলবে অসংখ্য চশমাপরা হনুমানের, এদের চোখের চারপাশে এমনভাবে লোমশ চামড়া রয়েছে, দেখে মনে হবে যে গোল গোল চশমা পড়ে আছে তারা। এছাড়াও রয়েছে ডলু, মুলি, মির্তিঙ্গা, কালি ইত্যাদি বিচিত্র নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ। পাথুরে পাহাড়ের ঝিরি পথে হেঁটে যেতে যেতে বিভিন্ন পাখির মিষ্টি ডাক আপনার মনকে ভালোলাগায় ভরিয়ে দেবে। সামনে এগিয়ে গেলে শুরুতেই আপনার সামনে ভেসে উঠবে এক আশ্চর্য দৃশ্য। পাহাড় থেকে ধোঁয়ার মতো ঘন কুয়াশা ভেসে উঠছে, যেন আঁকাবাঁকা শীতের ভাপা-পিঠা! এভাবেই পাহাড়ের ডাকে হাটতে হাটতে একসময় আপনি পৌঁছে যাবেন আপনার প্রিয় গন্তব্য হামহাম জলপ্রপাতের খুব কাছাকাছি। বেশ খানিকটা আগে থেকেই আপনার কানে আসবে হামহাম জলপ্রপাতের শব্দ।পুরো যাত্রাটাই হবে একটা এডভেঞ্চার বিশেষ!
নাগলিঙ্গম
নাম : নাগলিঙ্গম বা হাতি জোলাপ।
বৈজ্ঞানিক নাম: Couroupita Guianensis
ইংরেজী নাম : Cannonball Tree
ছবি তোলার স্থান : আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু বটানিক্যাল গার্ডেন, কলকাতা, ভারত।
তারিখ : ২৩/০৫/২০১৫ ইং
নাগলিঙ্গম এক প্রকার বিশাল বৃক্ষ যার ফুলের নাম নাগলিঙ্গম ফুল। নাগলিঙ্গমের আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বনাঞ্চল। এই গাছে ফুল ধরার পর বেলের মতো গোল গোল ফল ধরে। এগুলি দেখতে কামানের গোলার মত বলে এদের ইংরেজী নাম ক্যানন বল গাছ। আবার এই ফল গুলি হাতির খুবই প্রিয় খাবার বলে এই অঞ্চলে এর অন্য নাম হাতির জোলাপ গাছ।
নাগলিঙ্গম গাছ ৩৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। গুচ্ছ পাতাগুলো খুব লম্বা, সাধারণভাবে ৮ থেকে ৩১ সেন্টি মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। বছরের প্রায় সব ঋতুতেই এই গাছের পাতা ঝরে এবং কয়েকদিনের মধ্যে আবার নতুন পাতা গজায়।
শোনা যায়, নাগলিঙ্গম গাছে যখন ফুল ফোটে তখন ফুল হতে অদ্ভুত মাদকতাময় গন্ধ বের হয়। সেই গন্ধে নাগিনীর গায়ের ন্যায় কাম গন্ধ খুঁজে পায় নাগ। কামের নেশায় মত্ত হয়ে তখন নাগ ফনা তোলা নাগিনীর মতো দেখতে ফুলের কাছে ছুটে আসে। সাপুড়েরা তাই এই গাছের নাম দিয়েছেন নাগলিঙ্গম। উপমহাদেশে কালক্রমে এই নামটিই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। এটা কতটা সত্য তা সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
তিন হাজার বছর আগে থেকেই গাছটি ভারত উপমহাদেশে একটি পবিত্র উদ্ভিদ বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শিব ও সর্প পূজায় নাগলিঙ্গম ফুল ব্যবহার করেন। ভারতে নাগলিঙ্গমকে ‘শিব কামান’ নামে ডাকা হয়।
বৌদ্ধদের মন্দিরেও এই ফুলের যথেষ্ট কদর রয়েছে। এ কারণে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারের বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গণে নাগলিঙ্গম গাছ বেশি দেখা যায়।
ভেষজ গুণসম্পন্ন নাগলিঙ্গম গাছের ফুল,পাতা ও বাকলের নির্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ হয়।
দ্রুত বর্ধনশীল নাগলিঙ্গম গাছে চারা রোপণের ১২ থেকে ১৪ বছর পর গাছে ফুল ধরে। গ্রীষ্মকাল এবং বর্ষাকালে ফুল ফোটে। গাছের কাণ্ড ভেদ করে বেরিয়ে আসে প্রায় ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ অসংখ্য মঞ্জুরি। এক একটি মঞ্জরিতে ১০ থেকে ২০টি ফুল ক্রমান্বয়ে ফুটতে থাকে। মঞ্জরির একদিকে নতুন ফুল ফোটে অন্যদিকে পুরাতন ফুল ঝরে পড়ে। ফুলের রং অনেকটা লালচে কমলা বা লালচে গোলাপী হয়ে থাকে। ফুলে ৬টি মাংশল পুরু পাপড়ী থাকে। ফুলের মাঝে থাকে নাগের ফনা আকৃতির পরাগচক্র। ধারনা করা হয় এর কারণেই এই ফুলের নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম।
ফলগুলো চকলেট রঙের। যার ব্যাস প্রায় ১৫ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ফল পরিপক্ব হতে প্রায় এক বছর সময় নেয়। পরিপক্ব ফল মাটিতে পড়লে ফেটে যায়। বাতাসে খানিকটা ঝাঁঝালো গন্ধ সৃষ্টি হয়। ফল মূলত পশু পাখির খাবার। মানুষের জন্য এ ফল অখাদ্য। একটি ফলে ২০০ থেকে ৩০০ বীজ থাকে। ফ্রান্সের একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী জে এফ আবলেট ১৭৫৫ খ্রিস্টাব্দে এর নামকরণ করেন।
বাংলাদেশে নাগলিঙ্গম খুব একটা দেখা যায় না। আমি নিজে দেখেছি রমনা উদ্যানে আছে কয়েকটি গাছ, ফুল ফুটছে এখন। বলধা বাগানে দেখেছি কয়েকটিতে ফুল ফুটতে। আছে মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে কয়েকটি গাছ ফুল দেয়া অবস্থায়।
আমার নিজের একটি নাগলিঙ্গমের চারা আছে, এবছর লাগিয়েছি। দূর্লভ এই চারাটি দিয়েছেন অতি প্রিয় সিনিয়ার দুলাল ভাই। আশা করছি আগামী ২০৩০ইং সাল নাগাদ ফুল ফুটবে। সেই প্রথম ফুলটি এখনি উদসর্গ করছি দুলাল ভাইকে।
শুনেছি আরো কিছু নাগলিঙ্গমের গাছ আছে বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায়। যেমন-
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় একটি পুরনো গাছ রয়েছে।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা রাজবাড়িতে দুটি গাছ রয়েছে।
ময়মনসিংহের শশীলজের পিছনে আছে একটি বিশাল লম্বা নাগলিঙ্গম গাছ।
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই) ক্যাম্পাসে আছে নাগলিঙ্গম গাছ।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় মাঠের রয়েছে ৪টি বড় নাগলিঙ্গম গাছ।
কার্জন হল, নটরডেম কলেজ,শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং চন্দ্রিমা উদ্যানে বিভিন্ন বয়সী কয়েকটি নাগলিঙ্গম গাছ আছে। সিলেট ও হবিগঞ্জে দু’একটি গাছ এখনো দেখতে পাওয়া যায়। বান্দরবান এবং কক্সবাজারের কয়েকটি বৌদ্ধমন্দির প্রাঙ্গণেও এ গাছ দেখা যায়।
সূত্র : নেট, ফুলগুলি যেন কথা, উদ্ভিদ সংহিতা, নিজ।
প্রথমবারের মতো পালিত হবে ‘গণহত্যা দিবস’
স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর এবারই প্রথমবারের মতো ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে ঢাকায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার সেই বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে এ দিবস পালিত হবে। একইসঙ্গে এই দিনটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির (আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস) জন্য চলতি মার্চ মাসেই জাতিসংঘকে চিঠি দেয়া হচ্ছে। এবার ২৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ সংলগ্ন স্থানে ‘রক্তাক্ত ২৫ মার্চ গণহত্যা ইতিবৃত্ত’ শিরোনামে আলোক চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। এছাড়া প্রতিটি জেলা, উপজেলায় ২৫ তারিখ এ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও গণহত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন হতে যাচ্ছে। ২৫ মার্চ প্রথমবারের মতো ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করতে যাচ্ছে। এ স্বল্প সময়ের মধ্যে এবার কাঙ্ক্ষিত ব্যাপক কর্মসূচীতে এ দিবস পালন করা সম্ভব না হলেও বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসে এ ঘটনা মাইলফলক হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর জিয়াউর রহমান, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন। তারা এটার উদোগ নেইনি। আমরা যেমন একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস পালন করি এর পেছনে ইতিহাস রয়েছে। অনেকে সেদিন শহীদ হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালন করা হলেও এর পেছনে কোন ইতিহাস নেই। দিবস পালন করতে হয় সে হিসেবেই তা পালন করা হয়। ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিকভাবে কেন গণহত্যা দিবস পালন করা উচিত, কেননা এই দিনের ঘটনা বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের মানুষের মনে একটি শোকের ছায়া এনে দেয়। তাই বর্তমান সরকারের আমলে এই দিনটিকে ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যা বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়।
ওয়েব পেইজ এর ব্রাউজিং স্পীড কিভাবে বাংলা ট্রিভিউন এর মতো কিভাবে বাড়াবো
আমার একটি সাইট আছে www.bdpress24.com এর মতো। সাইটটি ভিপিএস এ হো্ট করা আছে। সাইটটির কম্পিউটার ব্রাউজিং স্পীড ভাল। কিন্তু মোবাইলে ব্রাউজিং স্পীড কম। বাংলা ট্রিভিউন ডটকম মোবাইলে ব্রাউজ করলে যে স্পীডে আসে আমিও আমার সাইটটি করতে চাচ্ছি। কোন অভিজ্ঞ/ ডেভলাপাপার এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করতে পারবেন কি ? ধন্যবাদ
কিভাবে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পেতে পারি সে ব্যাপারে সাহায্য চাই
আমি গ্রামে থাকি আমাদের এখানে প্রায় সবগুলো মোবাইল সিম অপেরেটর এর ইন্টারনেট স্পিড একেবারেই খারাপ। রবি, এয়ারটেল, টেলিটক, বাংলালিংক এর ইন্টারনেট স্পিড একেবারে পাইনা বললেই চলে তারমধ্য গ্রামিনফোন এ মোটামুটি স্পিড পাওয়া যায় তাও তা ১০০ কেবি..র উপরে উঠে না। আর ঘরের ভিতরে স্পিড ৫-৭ কেবি। এখন আমাদের এখানে ব্রডব্যান্ড কানেকশন ও না কয়েকটা আছে তাও আমাদের বাশা থেকে প্রায় ৩ কিমি. দূরে আর সেখান থেকে শুধু আমাকে কানেকশন দিতে তারা রাজি হচ্ছেনা।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এমনকি কোন বিকল্প ব্যবস্থা আছে যার মাধ্যমে আমি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পেতে পারি। অভিজ্ঞদের মতামত আশা করছি।
গাঁয়ের মাটি সবুজ খাঁটি
গাঁয়ের মাটি সবুজ খাঁটি
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
গাঁয়ের মাটি
সবুজ খাঁটি,
মাটিতে ফলে সোনার ফসল।
গাঁয়ের চাষী
নিত্য আসি,
মাঠে মাঠে চালায় লাঙল।
গ্রাম সীমানায়
সবুজ ডাঙায়,
গরু বাছুর বেড়ায় চরে,
গাঁয়ের রাখাল
নিয়ে গরুপাল
বাজায় বাঁশি মধুর সুরে।
পুকুর পাড়ে
গাছের আড়ে
বীর হনুমান আছে বসে।
তেঁতুল গাছে
পাখিরা নাচে
গাছের পাতা পড়ে খসে।
আমের শাখে
কোকিল ডাকে
পুলকেতে হৃদয় নাচে,
অজয় ঘাটে
নদীর তটে
নৌকোখানি বাঁধা আছে।
মাটির ঘরে
জোছনা ঝরে
নীল আকাশে চাঁদ ওঠে।
রাতের শেষে
সকাল আসে
কুসুম কাননে ফুল ফোটে।
দূর্লভ উদ্ভিদের সমারোহ বলধা গার্ডেনে
রাজধানীতে সবুজের সমারোহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বলধা গার্ডেন। অবস্থান ঢাকার ওয়ারীতে। ছোট এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে ৮০০ প্রজাতির ১৮ হাজার গাছ রয়েছে। বৃক্ষপ্রেমীরা যে কোন এক ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন এখানে। বলধা গার্ডেনের আয়তন ৩ একর। এর প্রতিষ্ঠাতা গাজীপুরের বলধার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নানারকম ফুলগাছ ও দুর্লভ উদ্ভিদ এনে তিনি লাগান । শাপলা পুকুর এখানকার প্রধান আকর্ষণ। নীল, লাল, সাদা, হলুদ জাতের শাপলায় ভরা বেশ কয়েকটি শাপলা হাউজ দেখতে পাবেন। এছাড়া রয়েছে বিরল প্রজাতির দেশি-বিদেশি ক্যাকটাস, অর্কিড, এনথুরিয়াম, ভূজ্জপত্র, বকুল, ক্যামেলিয়া, আশোক, আফ্রিকান টিউলিপ, আমাজান লিলিসহ নানা প্রজাতির গাছগাছালি।
দেশ বিদেশের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের স্মৃতি জড়িয়ে আছে বলধা গার্ডেনের সাথে। এই উদ্যান এক সময় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। নিয়মিত গান বাজনার আসর বসতো এখানে। কর্মব্যস্ত জীবনে একটু প্রশান্তি পেতে পরিবার নিয়ে এখানে আসতেন গণ্যমান্য অনেকেই। বলধা গার্ডেনের দু’টি অংশ। একটি সাইকী আর অন্য সিবলী। সাইকী অর্থ আত্মা ও সিবলী অর্থ প্রকৃতির দেবী। সিবলী অংশের জয় হাউজে বসে এখানকার ক্যামেলিয়া ফুলের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন তার ‘ক্যামেলিয়া’ কবিতাটি।
কীভাবে যাবেন:
গুলিস্তান থেকে রিকশায় চলে যেতে পারেন বলধা গার্ডেন। ভাড়া নেবে ৩০/৪০ টাকা। অথবা গাবতলি থেকে যাত্রাবাড়ীর দিকে ৮ নম্বর বলাকায় ,৩৬ নম্বর আর্ক পরিবহনের বাসে চড়ে রাজধানী সুপার মার্কেটে নামবেন । এখান থেকে হাটখোলা রোড ধরে পাঁচ মিনিট হাঁটলেই যাওয়া যায় বলধা গার্ডেন।
প্রবেশ মূল্য:
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০ টাকা। অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪ টাকা। শিক্ষার্থী ও গবেষণাকারীদের জন্য ৫ টাকা।
সময়সূচী:
সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে উদ্যানটি। তবে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত চলে মধ্যাহ্ন বিরতি। আসুন ঘুরে আসি দূর্লভ উদ্ভিদের সমারোহ বলধা গার্ডেন থেকে।
নীল হুড়হুড়ে
বাংলা নাম : নীল হুড়হুড়ে
ইংরেজি নাম : ফ্রেঞ্জেড স্পাইডার, পারপেল ক্লেওম
বৈজ্ঞানিক নাম : Cleome rutidosperma
ছবি তোলার স্থান : আড়াইহাজার, নারায়নগঞ্জ।
তারিখ : ২৮/১০/২০১৬ ইং
নীল হুড়হুড়ে গুল্ম জাতীয় এবং শাখাপ্রশাখাযুক্ত এক ধরনের সপুষ্পক উদ্ভিদ। এরা ১৫ থেকে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছের কান্ডের শাখাপ্রশাখাগুলি কৌনিক ভাবে বিস্তৃত এবং এদের পাতাগুলি ত্রিপত্রী। পাতাগুলি খানিকটা হীরকাকৃতির হয়।
নীল হুড়হুড়ে প্রধানত ক্রান্তিয় আফ্রিকাজাত হলেও এই প্রজাতিটিকে এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রান্তিয় জলাজমিতে প্রচুর পরিমানে দেখা যায়। আমাদের দেশে বাড়ির লনে, পথের ধারে, আগাছাদের সাথে এদের দেখা যায়।
নীল হুড়হুড়ে ফুলগুলি ছোট আকারের, প্রায় ১৫ মিলিমিটার। ফুলের রং বেগুনী রঙের। পাপড়িগুলির বিন্যাস উপরের দিকে থাকে এবং তার মধ্যে গর্ভকেশর এবং গর্ভরেণু সুসজ্জিত থাকে।
সূত্র : উইকি
এই প্রজন্মের সমস্যাটা কী?
১।
কিছুদিন আগে ঠিক এই ইংরেজি শিরোনামে একটা বক্তব্যের ভিডিও দেখেছিলাম (লিংক শেষে)। অসাধারণ এই বিশ্লেষনটা আমি পরে পরিচিত অনেক জনকেই দেখিয়েছি। এই বক্তব্য যিনি দিয়েছেন তাঁর নাম Simon O. Sinek – একজন ব্রিটিশ-আমেরিকান লেখক এবং মোটিভেশনাল বক্তা (জন্মসাল: ১৯৭৩)। তাঁর লেখা তিনটা বই আছে। আচ্ছা এবার মূল বিষয়ে ফেরত আসি: এইখানে তাঁর বক্তব্যের একটা কাছাকাছি বাংলা দেয়ার চেষ্টা করছি কারণ: মনে হয়েছে যাদের দেখার সুযোগ হয়নি বা ইংরেজিতে সমস্যা তাঁরা এই বিশ্লেষনটা জানুক।
২।
এবার আসি সংক্ষেপে সাইমন ভাইয়ের বিশ্লেষনটিতে:
বর্তমানের যে প্রজন্ম অর্থাৎ ৮৪ সাল বা এর পরে যাদের জন্ম তাঁদের চারটা বৈশিষ্ট আছে যা আগের প্রজন্মগুলো থেকে সম্পুর্ন আলাদা। এঁদের নামে অনেক অভিযোগ – এরা নবাবজাদা মানসিকতার; এদেরকে ম্যানেজ করা কঠিন; এরা আত্নকেন্দ্রীক; লক্ষ্যহীন; অলস ইত্যাদি।
এঁদেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়: জীবনে কী হতে চাও? এঁদের জবাব হবে - আমি একটা মহৎ কাজ করতে চাই; সবার জীবনে প্রভাব ফেলতে চাই (বিখ্যাত?), ফাও খেতে চাই ইত্যাদি। কিন্তু তাঁরা যা চায় সেগুলো দেয়া হলে, এমনকি ফ্রী খাইতে দিয়েও তাদেরকে খুশি করা যায় না দেখা যায় কিছু একটা বাকী আছে। এরকম হওয়ার পেছনে চারটি মূল কারণ বের করেছেন তিনি।
প্রথম কারণ হল ভুলভাবে বাচ্চা লালন-পালন। এদের বেশিরভাগের বাবা-মাগণ ছোটকাল থেকে এঁদেরকে বার বার বলেছে যে তাঁরা স্পেশাল; বলেছে যে তোমরা যা হতে চাও তাই হতে পারবে - ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এমন যে শুধুমাত্র চাইলেই হবে; কিন্তু এর জন্য যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সে ব্যাপারে কিছুই বলে না। এদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে কারণ এমন নয় যে এরা এর যোগ্য (মানে রেজাল্ট এ্যাত ভাল যে উচ্চতর ডিগ্রী করানো যায়), কারণ হল এটা এঁদের বাবা-মা’ চায় তাই। কেউ কেউ ক্লাসে এ গ্রেড পেয়ে এসেছে - যোগ্যতার কারণে নয়, বরং এই কারণে যে শিক্ষক এঁদের অতি নাক-গলানো স্বভাবের বাবা-মা’কে এড়াতে চায়। কেউ কেউ এমনকি ক্লাসে দেরিতে আসার জন্যও পুরষ্কার পায় – কাজেই যা হয় তা হল যারা সত্যিই পরিশ্রম করে তারা নিজেদেরকে বঞ্চিত মনে করে - পরিশ্রম করার আগ্রহ কমে যায়। আর যে শেষে আসার জন্য পুরষ্কার পায় সে একটু বিব্রত বোধ করে - কারণ সে জানে সে পুরষ্কারের যোগ্য না; তাই হীনমন্যতায় ভোগে। কিন্তু এই গ্রুপের পোলাপানগুলো যখন বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে এঁরা দেখে - তাঁরা মোটেও স্পেশাল নয়; মামা-চাচার লবিং ছাড়া প্রমোশন পাচ্ছে না; দেরিতে বা শেষে আসার জন্য কোন পুরষ্কার নাই; আর শুধুমাত্র চাচ্ছে বলেই কোন কিছু পাওয়া যায় না – ফলে মুহুর্তেই তার নিজেকে নিয়ে গড়া স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। ফলে একটা পুরা প্রজন্ম, তাদের পূর্বসূরীদের চেয়ে অনেক বেশি হীনমন্যতা নিয়ে বড় হচ্ছে।
৩।
দ্বিতীয় কারণ হল বাধাহীনভাবে সামাজিক মাধ্যম যথা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া। লোক-দেখানি ভাব নিতে এগুলোর জুড়ি নাই। অসাধারণ জীবন যাপনের একটা ভূয়া ভাব নেয়া যায় সেখানে, যদিও যে চরম ভাব নিচ্ছে আদতে হয়তো তাঁর মন খারাপ। ফলে এখানে ঘুরলে মনে হয় সবাই কী দারুন জীবন যাপন করছে, আর তাদের কথাবার্তা দেখলে মনে হয় জীবনে তাঁরা সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে যা বাস্তবের পুরা বিপরীত। আরেকজনের কাজ কারবার দেখলে মনে হয় আমারও এমনই করতে হবে - কিন্তু আদতে সেরকম হওয়া বা করা সম্ভব না। ফলে হীনমন্যতায় ভোগা একটা প্রজন্ম আরো বেশি হীনমন্যতায় ভুগতে থাকে - যদিও এতে তাঁদের কোন দোষ ছিল না।
একজনের হয়ত কিচ্ছু করার নাই, বা ভাল লাগছে না - তাই মেসেঞ্জারে গ্রুপকে লিখলো “হাই ...”। একটু পরেই আবার মেসেজ চেক করে দেখে দশটা রেসপন্স এসেছে …. “হাই”, “হাই”, “হাই”, “হাই” ... ... ... ... ... । এতে আসলে কী হল!? মনে হল কিছুই না, কিন্তু আসলে এটাতে প্রথম ব্যক্তির বেশ ভাল লাগলো। এই যে ভাল লাগা, এই অনুভুতিটার পেছনে একটা হরমোন কাজ করে - যেটার নাম হল ডোপামিন। এজন্যই আমরা বার বার চেক করি, কয়টা লাইক পড়লো, কয়টা রেসপন্স আসলো ইত্যাদি। অর্থাৎ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের ডোপামিন নিঃসরণ ঘটাতে সাহায্য করে। তবে জেনে রাখা ভাল, এই সামাজিক যোগাযোগের ডিজিটাল মাধ্যম ছাড়া আরো অনেক যে যে জিনিষগুলো আমাদের ডোপামিন নিঃসরণ ঘটায় সেগুলোর মধ্যে আছে – সিগারেট, মদ, জুয়া এবং অন্যান্য মাদক দ্রব্য। অর্থাৎ মাদকতার আনন্দ যে ডোপামিনে, যা আসক্তি সৃষ্টি করে - ঠিক সেই একই রকম আসক্তি এই সামাজিক মাধ্যম সৃষ্টি করে। ছোটরা যেন অবুঝের মত আক্রান্ত না হয়ে পড়ে সেজন্য বিদেশে মদ, সিগারেট কিনতে এবং জুয়া খেলতে বয়সের বিধিনিষেধ আছে - দোকানে নির্দিষ্ট বয়েসের কমবয়সী কেউ সেগুলো কিনতেই পারে না; অথচ একই রকম আসক্তিদায়ক সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে বাচ্চাদের কোনো বাধা নাই। এর মানে হল অনেকটা এরকম: একজন কিশোরকে বা বালককে নিজের সিগারেট প্যাকেটে/মদের ভাণ্ডারে বাধাহীন অধিকার দেয়া।
৪।
কাজেই এই প্রজন্ম বিশেষত কৈশোরের মানসিক পরিবর্তনের সময়ে যখন বিভিন্ন সামাজিক ও মানসিক চাপ সামলাতে খাবি খায় তখন তাঁদের সামনে এরকম একটা নেশাদ্রব্য দিয়ে দেয়া হচ্ছে সেই চাপ ভুলে থাকার জন্য। সেই আবেগ মানসিক চাপ ইত্যাদি সামলাতে যখন বাবা-মা কিংবা বন্ধুদের সাহায্য দরকার ছিল, তখন তাঁরা নেশার সাহায্য নেয় – নেশা মানে এই সামাজিক মাধ্যম – ফেসবুক ইত্যাদি। আর এই ব্যাপারটা যখন তাঁদের মাথায় গেঁথে যায়, তখন জীবনের যে কোন পর্যায়ে সামাজিক, অর্থনৈতীক কিংবা পেশাগত চাপ সামলাতে তাঁরা কোন বন্ধু বা গুরুজনের কাছে সাহায্য চাওয়ার বদলে নেশার বোতল তথা ফেসবুক টাইপের জিনিষপাতি খুলে বসে। আর এ-তো জানা কথাই, নেশা কখনই দীর্ঘমেয়াদে ভাল কিছু করতে পারে না; এটা জীবন ধ্বংসকারী একটা বস্তু।
আর এই আসক্তির কারণে দেখা যায়, এই প্রজন্মের বড় একটা অংশ সত্যিকারের বন্ধুত্ব, গভীর সম্পর্কের অর্থই বোঝে না। তাদের বন্ধুত্বগুলো ভাসা ভাসা; যে বন্ধুর উপর নির্ভর করা যায় না – আর এমনও হতে পারে যে মজা শেষে তাকে খুব সহজেই আনফ্রেন্ড করে দিতে পারে। বাস্তব জীবনে ঝগড়া, মারামারি, মান অভিমানে যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার কথা সেরকম গভীর বন্ধুত্ব হওয়ার মত সুযোগই তাদের হয়না। বন্ধু তৈরীর যে পথ, যে কৌশল: সেটা শেখারই কোন সুযোগ তারা পায় না। আর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন চাপ সামলাতে নেশাতে ডুবে যাওয়া ছাড়া তাদের উপায়ও থাকে না।
নেশার যে দ্রব্যগুলো - সেগুলো কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারেই নেশা হয়। বুঝে শুনে সীমিত পরিসরে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে সেগুলো কিন্তু আনন্দের উৎস হতে পারে। কিন্তু এই সময়ে যেটা হচ্ছে ২৪ ঘন্টাই সেলফোনের প্রভাবে নেশাগ্রস্থ থাকছে একটা প্রজন্ম। আরেকজনের দিকে মাথা তুলে তাকানোর পর্যন্ত সময় নাই। খুব জরুরী দুই একটা কথার বাইরে যে কেমন আছেন, মুরগী ডিম পারছে কি না, কিংবা বাসায় মশার উপদ্রব – বন্ধুত্ব বা পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক তৈরীর শুরুতে জরুরী এই জাতীয় নির্দোষ আলাপচারিতা করার মত সময় বা দক্ষতা তাদের থাকেনা। বন্ধুদের সাথে খেতে বসে যদি সেদিকে মনযোগ না দিয়ে আরেকজনের সাথে ফোনে চ্যাট করতে থাকে কেউ – তাহলে সেটা অবশ্যই একটা নেশা, একটা সিরিয়াস সমস্যা। একটা অফিসিয়াল মিটিংএ যদি মনোযোগটা ফোনের মেসেজে বেশি থাকতে হয়, তাহলে সেটা সমস্যা। ঘুম থেকে উঠে পাশে শুয়ে থাকা প্রিয়জনের খবর নেয়ার আগে যদি ফোনের মেসেজ চেক করে কেউ – তাহলে সেটা নেশা – অবশ্যই একটা সমস্যা।
কাজেই দেখা যাচ্ছে, আমাদের একটা প্রজন্ম গড়ে উঠছে যাদের আত্মসম্মানবোধ গড়ে উঠতে দেয়া হয়নি; আরও দেখা যাচ্ছে চাপ সামলানোর টেকনিকগুলো শেখার সুযোগ আমরা তাদেরকে দেই নাই – নেশাগ্রস্থ হওয়াটা কোন টেকনিক হতে পারে না।
৫।
এবার আসা যাক তৃতীয় কারণে (যেটার সমস্যাটা হল অসহিষ্ণুতা) – তাৎক্ষনিকভাবে চাহিদা মিটে যাওয়ার অভ্যাস। বর্তমান ডিজিটাল যুগে কেউ কিছু কিনতে চাইলে আয়োজন করে টাকা পয়সা জোগাড় যন্ত্র, হাটের দিন কবে ইত্যাদি খোঁজ নিয়ে সময় করে বাজার/হাটে যেতে হয় না; অনলাইনে তখনি কিনে ফেলতে পারে, টাকা না থাকলে অসুবিধা নাই – কারণ এজন্য ক্রেডিট কার্ড আছে, পেমেন্ট অন ডেলিভারি আছে, ইনস্টলমেন্টের সুবিধা আছে; আর একদিনের মধ্যেই সাধারণত জিনিষটা বাসায় চলে আসে। কেউ সিনেমা দেখতে চাইলে ইউটিউব বা অন্য মিডিয়াতে সাথে সাথে দেখতে পারে, কিংবা পে-চ্যানেলে গিয়েও দেখতে পারে। সিনেমাটা কাছের সিনেমাহলে আছে কি নাই, শো-এর টাইমটেবল, টিকেট আছে কি না – এসব নিয়ে কোন ঝামেলাই নাই। একটা টিভি সিরিজ দেখার ইচ্ছা হলে সাথে সাথেই ইন্টারনেটে সেটা দেখে ফেলা যায়। পরের পর্বের জন্য সপ্তাহের পর সপ্তাহ বা মাসের পর মাস অপেক্ষার ফলে সহিষ্ণুতার যে শিক্ষা সেটার কোন বিষয়ই আর নাই এখন। কেউ কেউ তো আবার এতই অধৈর্য যে, মাঝের পর্ব বাদ দিয়ে একেবারে সিজনের শেষ পর্ব দেখে ফেলে।
এমনকি, কাউকে প্রপোজ করাটাও এখন এঁরা শিখতে পারে না। কিভাবে হাত ঘষে ঢোক গিলে বোকা বোকা কথা শুরু করবে ডিজিটাল যুগে এধরণের সামাজিকতা শেখারও প্রয়োজন নাই। ডেটিং সাইটে গিয়ে শুধু ক্লিক করলেই সব ঠিক। এই যুগে যাই চাওয়া হয়, সাথে সাথে পাওয়া যায়, শুধুমাত্র যা পাওয়া যায়না সেটা হল – পেশাদারিত্ব আর গভীর সম্পর্ক। কারণ, এগুলোর জন্য কোন অ্যাপ নাই। এগুলোর অর্জন হয় ধীরগতির, আঁকাবাঁকা, বন্ধুর পথে – যা পেরোতে দরকার ধৈর্য আর একাগ্রতা। কিন্তু এই প্রজন্মের এই অর্জনগুলোর জন্য যে প্রশিক্ষণের দরকার ছিল তা হয়নি। কর্মস্থলে গিয়ে এরা হতাশ হয়, গভীর সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয় / পিছিয়ে যায়: কারণ ধৈর্য ধরে সফলতার জন্য অপেক্ষা আর লেগে থাকা, তিল তিল করে সফলতার ভিত্তি গড়ে তোলা বা কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী চর্চা - এ ধরণের কোন প্রশিক্ষণই বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এরা পায় না। ব্যাপারটা অনেকটা পর্বতের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থেকে চূড়াতে যাওয়ার কামনার মত – এঁরা শুধু চূড়া দেখে আর সরাসরি সিরিয়ালের শেষ পর্ব দেখার মত স্টাইলে সেখানে যেতে চায়। কিন্তু বাস্তব তো এমন নয়: এর জন্য পাহাড় ডিঙানোর পরিশ্রম, ধৈর্য, পরিকল্পনা, দক্ষতা এইসব দরকারী বিষয়গুলোর কোন ধারণাই এদের মধ্যে থাকে না। ফলাফল আরো বেশি হতাশা, হীনমন্যতা।
এইসব কারণে হতে পারে যে সমাজে আত্মহত্যা, মাদকাসক্তির হার বেড়ে যাবে। ডিপ্রেশনের কারণে পড়ালেখা ছেড়ে দেয়ার হার বেড়ে যাবে। মন্দের ভাল হিসেবে সবচেয়ে ভাল যেটা হতে পারে, তা হল: পুরা সমাজের একটা বড় অংশ রোবটের মত একঘেয়ে একটা জীবন পার করবে কিন্তু কখনই জীবনের আনন্দঘন দিকগুলো সেভাবে উপভোগ করতে পারবে না। কখনই তাদের মধ্যে জীবনবোধের গভীরতা কিংবা পরিপূর্ণতার অনুভূতি আসবে না।
৬।
শেষ বা চতূর্থ পয়েন্টটা হল পরিবেশ। কর্পোরেট কালচারেও সবকিছু স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে করা হয়। এঁরা যে নতুন কর্মী যোগ দিয়েছে তার কোন উন্নয়ন হল কি না সেটা মোটেও ভাবে না বরং নিজেদের স্বল্পমেয়াদী অর্জনের লক্ষ্য ঠিক আছে কি না সেটা নিয়েই চিন্তিত। এটা এমনই একটা পরিবেশ যেটা তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে মোটেই সাহায্য করছে না। এই কর্পোরেট পরিবেশ তাদেরকে পারস্পরিক আস্থা, বন্ধুত্ব স্থাপনের যে কৌশল তা শিখতে সাহায্য করছে না। অসহিষ্ণুতা থেকে বেরিয়ে আসতে যে প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং দরকার – ধৈর্যধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যস্থির করে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়ার – সেটার কোন ক্ষেত্র সৃষ্টি করছে না এই কর্পোরেট সংস্কৃতি। যে ধরণের অর্জনগুলো করতে বছরের পর বছর ধৈর্য ধরে এক লক্ষ্যে কাজ করতে হয় এবং সেটা অর্জনের পর যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, সেটা অনুভব করার কোন সুযোগই তাদেরকে এখানে দেয়া হয় না। এসব কারণে দিনকে দিন তারা আরও হতাশ হয়ে যায়, মনে করতে থাকে তাঁদের কোন যোগ্যতাই নাই।
বাব-মা’র ভুল, সমাজ-ব্যবস্থার ভুলের ফলে এই প্রজন্ম ক্রমেই আত্মকেন্দ্রীক, অসহিষ্ণু এবং অসামাজিক হয়ে যাচ্ছে – অথচ তার দায় কেউ নিতে রাজি হয় না। ... ... ... ...
৭।
সাইমন ভাইয়ের বিশ্লেষনের পরিপ্রেক্ষিতের সাথে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত হয়তো পুরাপুরি মিলবে না। কিন্তু কিছুটা শিক্ষনীয় চিন্তা-জাগানিয়া বিশ্লেষনী দৃষ্টিভঙ্গি যে সেখানে আছে - সেটাও অস্বীকার করা যাবে না। এই যে আমাদের পোলাপানগুলোকে না চাইতেই গণহারে উচ্চতম জিপিএ দিয়ে পাশ করিয়ে দেয়া হচ্ছে সেটার দীর্ঘমেয়াদে প্রায় একই রকম খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার কথা। কারণ এতে যাঁরা সত্যিকারের পড়াশোনা করতো তাঁরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তেল আর ঘি’য়ের যখন একই মূল্যায়ন হবে তখন কেন কষ্ট করে ঘি উৎপাদন করবে কেউ? আর এই না চাইতেই পাওয়ার ফলে তাঁদের অবচেতন মনে এমন ধারণা পাকাপোক্ত হয়ে গেছে যে এই ডিগ্রীগুলো ছেলের হাতের মোয়া, সহজলভ্য বস্তু - যা না চাইতেই পাওয়া যায়। এর জন্য পরিশ্রম, অধ্যবসায় এসবের কোন প্রয়োজন নাই। শুধু আসবো যাবো, ফূর্তি করবো, ফেসবুকিং করবো, চকচকে ক্যাম্পাসে ফ্যাশন করে ছবি তুলবো – কয়দিন পর প্রসেসের কারণে ডিগ্রী এমনিই পাওয়া যাবে।
জানি, উচ্চশিক্ষার কিছু জায়গায় এই চর্চাটাই চলছে। কিন্তু অবচেতন মনে হীনমন্যতা ঢুকে আত্মসম্মানবোধহীন যে প্রজন্ম আমরা তৈরী করছি তাতে করে সমস্যা বাড়তেই থাকবে। কর্মক্ষেত্রে এঁদের বড় অংশ শুধু খাবি খাবে। কোত্থাও টিকতে পারবে কি না জানিনা, তবে হতাশা বাড়তেই থাকবে।
আমিরাতে সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এক বাংলাদেশির
সততা এবং ন্যায়পরায়ণতা দিয়ে আপনি যদি কাউকে বিচার করেন, তাহলে নিশ্চিতভাবে সেই বিচারের চূড়ায় অবস্থান করবে তার সাক্ষী সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক জহির রহমান। ৪২ বছর বয়সী এই বাংলাদেশি আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকেন। তার মাসিক আয় ৭০০ দিরহাম। দুবাইয়ের একটি পার্কে তিনি জার্মানির এক নাগরিকের একটি মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। মানিব্যাগটিতে নগদ অর্থ ও ক্রেডিট কার্ডও ছিল। জার্মানির ওই নাগরিকের কাছে মানিব্যাগ ফিরিয়ে দিয়ে সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাংলাদেশি জহির। তার সততা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে আরব আমিরাতের গণমাধ্যম। দেশটির জাতীয় দৈনিক খালিজ টাইমস এক প্রতিবেদনে জহিরের সততা ও ন্যায়পরাণতা তুলে ধরেছে। যখন তিনি কাজ করছিলাম, এ সময় আবু ধাবি চেম্বার অব কমার্সের পাশে একটি বেঞ্চের ওপর কালো মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি জানতেন মানিব্যাগটির মালিক খুঁজতে আসবেন। আর এ জন্যই তিনি ওই জায়গায় অপেক্ষা করতেছিলেন। এক ঘণ্টা পরে আন্দ্রেস ক্রসে নামের এক জার্মান নাগরিক এসে সেখানে বাংলাদেশি জহিরের হাতে মানিব্যাগটি দেখেন। বিনয়ী রহমান কখনো কল্পনা করেননি এটি একটি বড় ধরনের আমানত। তিনি মানিব্যাগটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দিয়ে দিলেন। বাংলাদেশে জহির রহমানের ঘরে স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। ১৫ বছর ধরে আরব আমিরাতে কাজ করছেন তিনি। জহিরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জার্মানির নাগরিক ক্রসে। জার্মানি নাগরিক বলেন, ‘মানিব্যাগটি হারিয়ে গেলে কি ধরনের ঝামেলায় পড়তাম তা আমি কল্পনাও করতে পারি না। মানিব্যাগের ভেতরে আমিরাতের ড্রাইভিং লাইসেন্স, ক্রেডিট, ডেবিট কার্ড, স্বাস্থ্য বীমা ও জার্মানির বিভিন্ন নথি ছিল। ক্রসে বলেন, ওই পার্কের বেঞ্চে তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছিলেন। কাজে ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন মানিব্যাগটি হারিয়ে গেছে। জার্মানির এই নাগরিক বাংলাদেশি জহিরের সততার প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি একজন প্রকৃত নায়ক। তার সততায় আমি মুগ্ধ।’ বাংলাদেশি জহিরের সতায় মুগ্ধ হয়ে ক্রসে তাকে আর্থিক পুরস্কার দিয়েছেন।
ডেস্কটপ ক্রয়ে পরামর্শ প্রয়োজন
বেশ কয়েক বছর চালানোর পর পুরনো পিসি বেচে দিয়েছি। এখন একটি নতুন পিসি কিনতে হবে। ডেস্কটপই আমার পছন্দের। কিছুটা রিসার্চ করে নিচের কম্পোনেন্টগুলো সিলেক্ট করলাম।
Processor: Intel Core-i-5 7500
Mainboard: Gigabyte B250M-D3H
Ram: G.Skill 8GB DDR4
PSU: Corsair vs550 / Thermaltake TR2 450
Casing: Cooler Master k380
Harddisk: Toshiba 1TB
Speaker: Microlab M200 Platinum
Keyboard:???? (EXCLUDING BIJOY)
Mouse: A4Tech
UPS: MAX GREEN 650VA
এখন অভিজ্ঞদের মতামত চাচ্ছি এ বিষয়ে।
“পবিত্র কাবা ঘর ও মহানবি মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) এঁর রওজা মুবারক জিয়ারত
“পবিত্র কাবা ঘর ও মহানবি মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) এঁর রওজা মুবারক জিয়ারত।”
১
আমার জীবনে ২০১২ ইং সালটি চরম চাওয়ার ও পাওয়ার বছর। প্রতিটি মুসলমানের মনের একান্ত কামনা ও বাসনা এই দুইটি পবিত্র জায়গা জিয়ারত করা। সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে ও মহানবীর দয়ায় ২০১২ ইং সালে পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় যাইতে সৌভাগ্য হয়েছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, হজ কষ্টসাধ্য ইবাদত। এই পবিত্র হজব্রত পালন করতে গেলে অবশ্যই কষ্ট সহ্য করা মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। এই বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে সঠিকভাবে লিখা আছে ও বিভিন্ন অলি আওলিয়াগণ সঠিক তথ্যসহ লিখে গেছেন। আমি খুবই ক্ষুদ্র ব্যক্তি, আমার এই বিষয়ে জ্ঞান নাই, আমি শুধু আমার সমস্যা, কষ্ট ও আল্লাহর কুদরত ও মহানবীর প্রত্যক্ষ দয়া দেখেছি তা লিখার চেষ্টা করলাম। আমি ইচ্ছা করে কাহাকেও কোনো প্রকার কষ্ট দিবার চেষ্টা করি নি। তবুও আমার এই লিখার জন্য কেহ কোনো প্রকার কষ্ট বা দুঃখ পান তাঁর বা তাঁদের নিকট আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
আমার চাকুরী জীবনে শত কষ্টের মধ্যে সৎ থাকার চেষ্টা করেছি। চাকুরীর প্রথম জীবন থেকেই ইচ্ছা ছিল, আল্লাহ যদি সুস্থ রাখেন তবে সরকার হতে প্রাপ্ত গ্র্যাচুইটির টাকা দিয়ে প্রথম হজব্রত পালন করব। ইচ্ছা ছিল জীবন সংগিনীকে সঙ্গে নিব। কিন্তু সে বেশি হাঁটতে পারে না, তাই তাকে সঙ্গে নিতে পারলাম না।
আমার এলাকার দুইজন সুহৃদ বড় ভাইয়ের কথায় আমি সরকারি ভাবে হজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। বাংলাদেশের সরকারি আমলাদের ব্যবস্থাপনা নিচু মানের হওয়ায় ও ২০১২ইং সালে সৌদি বাজার দর বেশি হওয়ায় আমি আর্থিক ও শারীরিকভাবে খুবই কষ্ট পেয়েছি, এটা মানুষের সৃষ্টি। এগুলি আল্লাহ আমার ভাগ্যে রাখেননি।
আল্লাহর কুদরত ও রহমতঃ
আমি নিয়মিত ভাবে দাড়ি কাটতাম। হজের নিয়ত যখন করলাম, তখন একদিন কামদিয়ার বাজারে একটা কাজের জন্য হাঁটতেছিলাম, হঠাৎ মনে পড়লো আমাদের দয়ার মহানবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা:) পবিত্র নগরী মদিনায় জীবিত অবস্থায় শুয়ে শুয়ে তাঁর উম্মতের অর্থাৎ আমাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতেছেন। আমি কোন সাহসে দাড়িহীন মুখে (সুন্নত ছাড়া) তাঁকে সালাম দিব ? তখনই নিয়ত করলাম, আমি আর কখনোই দাড়ি কাটবো না এবং সুন্নত ভাবে দাড়ি রাখবো। ইতিপূর্বে বহু আতœীয় -স্বজন ও বন্ধু বান্ধব আমাকে দাড়ি রাখার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিল, কিন্তু দাড়ি রাখার জন্য মনের গভীর থেকে তাগাদা বা প্রয়োজন মনে করি নাই। আমার দাড়ি রাখাটা আমার জীবনে আল্লাহর কুদরত মনে করি।
হজে যাওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে ভীষণ সর্দি, জ্বর আর আমাশয় রোগে আক্্রান্ত হলাম। স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক ১০২ ডিগ্রি জ্বরকে শিরায় ইনজেকশন দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেন, কিন্তু ফল শূন্য। হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নাম নিয়ে ঐ অসুস্থ অবস্থায়, সকলের নিকট হতে দোয়া নিয়ে বাড়ি
২
থেকে রওয়ানা দিলাম, সঙ্গে ছেলে। যথা সময়ে ঢাকা হজ ক্যাম্পে উপস্থিত হলাম। ছেলে এক আতœীয়ের বাসায় থাকার জন্য চলে গেল। আমি আমার বেড ঠিক করে, পায়খানার চাপ দিলে টয়লেটে গেলাম, শুধু রক্ত আর রক্ত। আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিলাম, কোনো মতে বেডে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবারও টয়লেটে গেলাম, আবারও রক্ত ঝড়লো। কোনো মতে টয়লেট থেকে এসে হাজী ক্যাম্পের ডাক্তারের নিকট যেয়ে আমার রোগের কথা বলায় উনি কিছু ঔষুধ দিলেন। তার ঔষুধ খেয়ে আমার কোনো উপকার হলো না। সারা রাত্রিতে বেশ কয়েকবার টয়লেটে যেতে হলো, প্রত্যেকবার রক্ত ঝড়তে লাগলো। ছেলেকে মোবাইল করলাম, ছেলে আমাকে সান্তনা দিয়ে বলল, আগামিকাল ভোরে বাহির থেকে ঔষুধ নিয়ে আসবো। সকালেই ছেলে ঔষুধ নিয়ে হাজির। ঔষুধগুলো যথা নিয়মে খেতে লাগলাম,কিন্তু রক্ত বন্ধ হয় না।
মরার উপর খাঁরার ঘা হিসাবে দেখা দিলো আমার গা ঘেসে পাশের বেডে জৈনক হজ যাত্রী হিসাবে এক ব্যাক্তি অবস্থান করতে ছিলেন। তাঁর অভ্যাস ছিলো দিনের বেলায় তীব্র আলো ও হৈচৈর মধ্যেও মুখ হাঁ করে নাকের ঘরঘরি শব্দ তুলে গভীর ভাবে ঘুম পারতো আর সারা রাত্রি জেগে মবাইলে উচু শব্দে ওয়াজ শুনতো,এতে আমি কিছুতেই ঘুমাতে পারতাম না। অসুখ এবং ঘুমাতে না পারায় আমার শরীর আর মন একদম ভেঙ্গে পরলো। আমাদের ফ্লাইট মাত্র দুই দিন পর। এক সময় মনে হলো, আমি আর বোধ হয় হজে যেতে পারবো না। আমি শুধু আল্লাহর নিকট কান্নাকাটি করে, কায়মনে তাঁর রহমত কামনা করতে লাগলাম। আল্লাহর নিকট চাইলাম, পবিত্র শহর মক্কায় যেয়ে কাবা ঘর দেখে যেন আমার মৃত্যু দেন। দুইদিন রক্ত পড়ার পর একটুক কমলো। গোসল ও অজু করে চোখের পানিতে সকলের সঙ্গে ইহরাম বেঁধে (নির্দ্দিষ্ট দোয়া) “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হামদা,ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।” পড়তে পড়তে বিমান বন্দরের বাসে উঠে বসলাম। ছেলেও অন্য বাসে বিমান বন্দরে আসলো এবং লাইন পর্যন্ত আগাইয়া দিল, ছেলের সঙ্গে আর দেখা হলো না। আমি সব সময় আল্লাহর নাম নিতেছিলাম। অফিসের নিয়ম সেরে সকলে একটা ঘরে বসে হজ পালনের নিয়মনীতি শুনতে লাগলাম। এক ঘণ্টার উপর অপেক্ষার পর অনেক নিয়ম কানুনের পর আমরা বিশাল বিমানে উঠলাম, যাত্রী সংখ্যা ৫৬০ জনের উপর। বিশাল বিমানের মধ্যে বিমানবালা ও পুরুষ কর্মকর্তারা আমাদিগকে ১ম বার চা নাস্তা,২য় বার দুপুরের খাবার ও ৩য় বার চা নাস্তা দিল। খাবারের মান উন্নত এবং তাদের ব্যবহার খুবই ভালো।
প্রায় ৭ ঘণ্টার পর আমাদের বিমানটি আল্লাহর রহমতে ভালোভাবে জেদ্দা বিমান বন্দরে অবতরণ করে। জেদ্দা বিমান বন্দরে প্রায় ৩ ঘণ্টা লাগলো সৌদি সরকারের নিয়মনীতি পালন করতে। বিমান বন্দরের বাইরে সৌদি মোয়ল্লেমের বাস দাঁড়াইয়া আছে। আমাদেক গুনতি করে বাসে উঠানো হলো। বাসে উঠানোর পর হাজিদিগকে আবার দুইবার গণনার পর বিভিন্ন চেক আপের পর আমাদের বাস পবিত্র মক্কার দিকে যাত্রা করলো। সকলের মুখে লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।” প্রায় ৪ ঘণ্টার পর আমাদের প্রাণ প্রিয় পবিত্র কাবা শহর মক্কার মিসফালার ৫নং বিল্ডিংয়ের সামনে বাস থামলো। চোখের
৩
সামনে ভেসে উঠল পবিত্র কাবা চতরের ঘড়ির মিনার । মনে হলো প্রাণ প্রিয় কাবাঘর অল্প একটু দূরে। সেখানে ৫ওয়াক্ত নামাজ আদায় এই বৃদ্ধ বয়সে সহজ হবে, অথচ পবিত্র হেরেম শরীফ এতো কাছে নয়। আমরা লিফটে ৫তলায় নিজেদের রুমে যেয়ে যার যার বেড ঠিক করে নিলাম। আল্লাহর খাস রহমতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা আমার টয়লেটে যাওয়ার চাপ হয় নাই। আমি টয়লেটে গেলাম, আবার রক্ত আর রক্ত পড়লো। আমি আর কিছুতেই ভয় পেলাম না। আমি আমার প্রাণের পবিত্র শহরে পৌঁছেছি, এখানেই আমার মৃত্যু হলে মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট কোটি কোটি শুকুরিয়া।
পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ ঃ (ফরজ)
রুমে ঢাকার এক মুরব্বি যিনি ইতিপূর্বে ৭বার হজ করেছেন, এবার দিয়ে ৮বার হজ করতেছেন, তাঁর সঙ্গে পরিচয় হলো, তাঁর নাম হাজী মো: আ: খালেক,বর্তমানে ইনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না:)। তিনি বললেন, আপনারা ওযু ও গোসল সেরে নিন, আমরা রাত্রিতেই পবিত্র কাবাঘর ৭বার তাওয়াফ (ফরজ) ও ৭বার সাঈ (ওয়াজিব) করতে হবে। সকলে গোসল ও ওযু করে কিছু নাস্তা খেয়ে মহা শক্তিমান আল্লাহর নাম নিয়ে মুরুব্বির নেত্রিত্বে হেরেম শরীফের দিকে রওয়ানা দিলাম, মুখে সব সময় লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।” আল্লাহর নাম জিকির। পথে নেমে অবাক, পথের দুধারে বিভিন্ন রকমের বহুতলা বিল্ডিং, গভীর রাত্রিতে দিনের মতো আলো এবং বহু লোক আসা যাওয়া করতেছেন। তর সইছে না, কখন আল্লাহর পবিত্র কাবাঘর, পৃথিবীর সব চেয়ে আদি পবিত্র ঘর, হযরত ইব্রাহিম(আ:), ইসমাইল(আ:), বিবি হাজেরা(আ),বহু রসুল, নবীর স্মৃতি জড়িত স্থান এবং সর্বশেষ মহানবী দয়ার নবীর জন্ম স্থান দেখার জন্য মন প্রাণ ব্যাকুল। এক সময় হঠাৎ দুই চেখের সামনে অবাক বিস্ময়ে দেখতেছি সর্বশক্তিমান আল্লাহর পবিত্র ঘর। মনের গভীরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। দু’চোখ বেয়ে অঝর ধারায় পানি ঝড়ছে। নিদ্দিষ্ট দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে আল্লাহর পবিত্র ঘর তাওয়াফ করার জন্য ঢাকার মুরুবীর পিছে পিছে নিচে নামলাম। কাবার আঙ্গিনাটা কয়েক ধাপ সিঁড়ির নিচে। নির্দিষ্ট জায়গা হতে কাবাঘর তাওয়াফ করতে আরম্ভ করলাম। খুবই ভির থাকায় হাজ্রে আস্ওয়াদ (বেহেশতের পাথরে) চুমু দেওয়া সম্ভাব হয় নাই, তবে ইশারায় চুমু দিলাম। আর আল্লাহর পবিত্র কাবা ঘরের ইয়ামানির কোনের শুরু থেকে শেষ স্পর্শ ও অসংখ্যবার চুমু দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আল্লাহর পবিত্র কাবা ঘরে যখন প্রথম স্পর্শ ও চুমু দিলাম তখন যেন আমার দেহের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল, তা শেষ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এইভাবে নিষ্টার সহিত ৭বার আল্লাহর পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ (ফরজ) করলাম ও হাজ্রে আস্য়াদে ইশারায় চুমু দিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে মাকামে ইব্রহিমে ও হাতিমের ভিতরে তাওয়াফের নিয়তে দুই রাকাত (ওয়াজেব) নামাজ পড়ে দোয়া করার সুযোগ হয়েছে। এখানে দুই জায়গা দোয়া কবুলের স্থান। মহান আল্লাহ্র দরবারে রহমত ও রোগমুক্তির দোয়া কামনা করে জমজমের পানি তৃপ্তি সহকারে পান করলাম।
হযরত বিবি হাজরা (আঃ) এঁর শিশু পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)এঁর পানির জন্য সাফাÑমারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে ৭বার দৌড়া-দৌড়ি (সাঈ) করেছিলেন, তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে ও আল্লাহর আদেশে
৪
প্রত্যেক হজযাত্রীগনকে সাফা-মারওয়া ৭বার সাঈ (ওয়াজিব) করতে হয়। আমিও (মুরুবির নেত্তিত্বে) সাঈর নিয়ত করে যথারীতি ভাবে সাফাÑমারওয়া ৭বার সাঈ শেষ করে মহান আল্লার্হ দরবারে দোয়া করি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সঃ)এর আদর্শের অনুসরণে আমরা সকলে সম্পূর্ণ মাথা মুন্ডন (হলক করাÑওয়াজিব) করি। এরপর বাসায় এসে গোসল করে ইহ্রাম খুলি।
পবিত্র হেরেম শরীফে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করিলে এক লক্ষ,মদিনা মনোয়ারায় ৫০০০০ এবং বায়তুল মোকাদ্দাসে ১০০০০ ওয়াক্তের নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়। তাই প্রত্যেক মুসল্লির একান্ত ইচ্ছা এই সব মসজিদে নামাজ আদায় করা সুযোগ হাত ছাড়া করেন না। আমি বা আমরা যত দিন পবিত্র কাবা শরীফে ও পবিত্র মদিনায় নগরীতে ছিলাম তত দিন তাহাজ্জতের নামাজসহ জামাতে নামাজ আদায় করেছি।
পবিত্র মক্কা ও মদিনা শরীফে যত দিন অবস্থান করেছিলাম, তত দিন আমার জীবনে অনেক ঘটনা ঘটেছিল। পবিত্র মক্কায় হাজী ক্যাম্পের ডাক্তারের ঔষধ খাওয়ার পর আল্লাহ্র রহমতে রক্ত আমাশয় ভাল হয় কিন্তু সাদা আমাশয় ভালো হয় না। তাই আমি বাধ্য হয়ে ইহ্রাম,খাটো পান্জাবী ও লুঙ্গী পড়ে হজের যাবতীয নিয়ম কানুন পালন করি। বাঙ্গালীর খাটো পানজাবী ও লুঙ্গী পড়ে হজ্জব্রত পালন করতে যেয়ে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তার কয়েকটি ঘটনা উল্ল্যেখ না করে পারলাম না। হজ্জব্রত পালন মুসলিম জাহানের মিলন ক্ষেত্র হওয়ায়, আমি তা মনে প্রানে বিশ্বাস করি। তাই আমি প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজের আগে আমার লাইনের ডানে- বামে যে কোন দেশের মুসুল্লির সংগে সালাম বিনিময় ও নাম, কোন দেশের নাগরিক, কেমন আছেন ও কি করেন ইত্যাদি ইংরাজিতে জিজ্ঞাসা করি। কোন কোন দেশের নাগরিক বলে, নো নো ইংলিশ নো, আবার বেশী ভাগ দেশের নাগরিক সাবলিল ভাবে ইংরাজীতে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দেয়। তার মধ্যে মিশর, আফ্রিকার বিভিন্নদেশ,জার্মানী,ইউকে,আমেরিকা, ইরাক, ইরান, আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ভারত,শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া,মালোশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের হাজীগন ছিল। থাইল্যান্ড,ইন্দোনেশিয়া,মালোশিয়া হাজীগন বিশেষ ভাবে লুঙ্গি পড়ে ও বাঙ্গালিরা কেহ কেহ লুঙ্গি পড়ে,কোন কোন দেশের নাগরিককে শার্ট-প্যান্ট-গেনজি পড়ে, আফ্রিকা মহাদেশের নিগ্র হাজীগন বিচিত্র ধরনের পোষাক পড়ে নামাজ পড়তে দেখেছি। আফগানিস্থানের হাজীদের পাগড়ি পাখির বাসার মত বড় হয়। পাকিস্তান ও ভারতের কোন কোন হাজীদের গোঁফ একটুকু বড় দেখেছি। হজ্জব্রত পালনের ক্ষেত্রে সকল মুসলিমকে সাদা কাপড়ের সেলাইহীন ইহ্রাম পড়তে হয়। যখন কোন পকিস্তানের একাধিক হাজীদের সংগে আমার খাটো পানজাবী ও লুঙ্গি পড়িহিত অবস্থায় সালাম বিনিময় করি এবং যখন আমি আমার বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে পরিচয় দেই, তখন পুত-পবিত্র স্থানেও তাদের চোখে-মুখে রাগ বা ঘৃনার বহির প্রকাশ দেখতে পাই।
একদিন পবিত্র হেরেম শরীফে খাটো পানজাবী ও লুঙ্গি পড়ে জহুরের নামাজ পড়তে যাই। নামাজের আগে সেদিন সকলের সংগে এক লিটার বোতলে জমজমের পানি নিতে কাছের পানির ড্রামে যেয়ে যেমন টেপ খুলে বোতলে পানি নিতেছিলাম ওমনি নিকটে থাকা পরিচ্ছন্ন এক কর্মী আমার কাধের নিকট পানজাবীর কাপড় টেনে আমাকে দাঁড় করালো এবং জমজমের পানি নিতে কোঠর ভাবে নিষেধ করলো।
৫
উপস্থিত যারা জমজমের পানি নিতেছিল,তাদেক জমজমের পানি নিতে নিষেধ করলো না। তারা তো অবাক,কিন্তু তারা কোন প্রতিবাদ করলো না। আমি অপমানে কেঁদে ওখান থেকে নিজ জায়গায় চলে আসি। আমি জানতাম না জমজমের পানি বাহিরে নেওয়া নিষেধ। যদি জমজমের পানি বাহিরে নেওয়া নিষেধ হয়, তবে কেন? কেন? হাজার হাজার মুসুল্লিকে (হাজীগন) পানি নিতে দেওয়া হয়? আমার অপরাধ কোথায়? আমার খাটো পানজাবী ও লুঙ্গি পড়া বাঙ্গালী হজযাত্রী ছিলাম? ঐ নিষেধকারী পরিচ্ছন্নকারী কর্মী কি চির বৈরী পাকিস্তানের নাগরিক ছিল? আমি মহান আল্লাহর দরবারে বিচার প্রার্থী।
৫নং বিল্ডিংএর ৫ তলায় এক রুমে আমরা ৫জন হজযাত্রী ছিলাম। রুমটা একটু ছোট ছিল, তবুও আমাদের রুমে সৌদির মোয়াল্লেমের হুকুমে এক হজযাত্রীকে (তিনি আমাদের দলের হজযাত্রী ছিলেন না) জোর করে ঢুকে দেন। আমাদের বাংলাদেশের গাইডকে এই বিষয়ে বলা হলো, কিন্তু তিনি কিছুই করতে পারলেন না। সৌদি মোল্লেমের হুকুমই একমাত্র হুকুম। তাতে আমাদের রুমের মধ্যে চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হলো। তাঁর বেড হলো যে পার্শ্বে লাইট, ফ্যান ও এয়ারকুলারে সুইচ। ওনার সর্দ্দি ও কাশি ছিল, উনি আবার কোন ঔষধ খান না। উনি প্রতি রাত্রিতে ফ্যান ও এয়ারকুলারের সুইচ বন্দ করে রাখেন। ফলে আমরা গরমের জন্য ঘুম পারতে পারি না। উনার ছেলে ও ভাতিজা সৌদিতে চাকুরি করতো,তারা প্রতিদিন উনার জন্য বিভিন্ন প্রকার খাবার এনে দিত। সুইচ বন্দ করার ব্যাপারে তাদেক ও আমাদের দলের গাইডকে বলেও এটার সুষ্ট ব্যবস্থা করতে পারেন নাই বা তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন নাই। এসবের ব্যাপারে রুমের মধ্যে একমাত্র আমিই প্রতিবাদ করতাম। শেষের দিকে বাধ্য হয়ে আমি আমার সর্দ্দি, কশির ঔষধ তাঁকে দিয়ে সুস্থ্য করি, আরোগ্য করার একমাত্র মালিক আল্লাহ ॥ উনি একদিন রাস্তায় যে টেক্সিতে খেলনা বিক্রয় করে, তার নিকট থেকে ভিড়ের মধ্যে রিয়েল না দিয়ে খেলনাটি নিয়ে আসেন, এটা উনি আমাদেক নিজে বলেছেন। আমরা বলি চুরি করা পাপ, হজের সময় হাজী হয়ে না বলে কোন জিনিষ লওয়া মহা পাপ, আপনি দোকানদারকে বলে অর্থটা তাকে ফেরৎ দেন। উনি নিজে আমাদেক বলেছেন, উনি কয়েক বৎসর আগে বদ্ধ পাগল ছিলেন। তাঁর মধ্যে এখনও মাথায় ছিট বর্তমান, তিনি কেমন করে পাসর্পোট ও ভিসা পান? ইনি সেই ব্যাক্তি, যিনি আমাকে ঢাকার হজ ক্যাম্পে ২রাত্রিতে ঘুমাতে দেন নাই।
হজ্জব্রত পালন করতে যেয়ে যেমন কষ্ট পেয়েছি, তেমনি শান্তিও পেয়েছি। আমার যে মুরুব্বি ৮বার হজ্জ করতেছেন, তিনার ছেলের এক বন্ধুর লোক পবিত্র মক্কায় চাকুরি করেন। মুরুব্বির ছেলে তাঁকে ফোনে আমাদের খোঁজ খবর নিতে বলেন। একদিন উনি এলেন আমাদের খোঁজ খবর নিতে। উনি এসে বললেন, আপনারা আগামি কাল দুপুরের খাবার আনবেন না, আমি আপনাদের দুপুরের খাবার আনবো। উনি তাঁর মেয়েকে সংগে নিয়ে আমাদের জন্য প্রচুর খাবার নিয়ে আসেন এবং নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করে তৃপ্তি সহকারে খাওয়ান। তিনি বলেন, আপনারা আল্লাহ্র মেহমান, আপনাদেক মেহমানদারী করা আমার সৌভাগ্য। তাঁর ও পরিবারের সদস্যগনের সর্বপ্রকার মঙ্গল কামনা করে আল্লাহর নিকট দোয়া করি। হজ্জব্রত পালন করতে এসে আমি আল্লাহ্র অনেক কুদরত ও রহমত দেখেছি। আজ আমি একটা আল্লাহ্র কুদরত বর্ননা করতেছিÑ আমরা দলসহ পবিত্র কাবাঘর তোওয়াব
৬
ও সাঈ করার পর সংগের কয়েকজন বলল আমরা প্রশ্রাব করবো। আবু জেহেলের বাড়ীতে (লেট্রিন) প্রশ্রাব করার জন্য সকলেই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলাম। কয়েকজন আবার সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে লেট্রিনে গেল। আমি ও মুরুব্বি উপরে থেকে পবিত্র কাবার আসপাশের দৃশ্য দেখতে থাকলাম। সোবহানাল্লাহ্ সামনের দৃশ্যটি আমি কয়েক মাস আগে বাড়ীতে ঘুমের মধ্যে স¦প্নে দেখেছি। এ কথাটা আমার মুরুব্বিকে বললাম, তিনি বললেন স্বপ্নটি খবুই ভাল, যা মহান আল্লাহ্ পাক আপনাকে এখনে পবিত্র হজ্জে এনেছেণ।
পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থানকালে নগরীর আশ পাশের কয়েকটা পবিত্র জায়গা দেখার জন্য আমরা কয়েকজন একটা কার ভাড়া করলাম,যাওয়া-আসার জন্য জনপ্রতি ১০ রিয়াল। গারে হেরাÑ মক্কার সর্বাধিক উঁচু পাহাড়ের একটি নির্জন স্থান। এখানে নবী করিম (স:) ধ্যানমগ্ন থাকতেন এখানেই সর্বপ্রথম ওহি নাজিল হয়। গারে সাওর Ñ মসজিদুল হারামের পশ্চিমে হিজরতের সময় এই প্রকান্ড সুউচ্চ পাহাড়ে রাসূলুল্লাহ (স:) ও আবু বক্কর(রা:)সহ তিন দিন অবস্থান করেছিলেন। মিনা Ñমক্কা মুয়াযযমা থেকে তিন মাইল পূর্বে অবস্থিত একটি মাঠের নাম। যেখানে কোরবানী এবং কংকর নিক্ষেপ করা হয়। মিনা হরমের অন্তর্ভুক্ত। মুযদালিফা Ñ মিনা ও আরাফাতের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত একটি ময়দান। এ ময়দান মিনা থেকে তিন মাইল পূর্বদিকে অবস্থিত। আরাফাত Ñ আরাফাতের ময়দানে জাবাল-ই-রহমত অবস্থিত। এ পাহাড়ে সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ:)এর দোয়া কবুল হয়। এখানে তিনি বিবি হাওয়া (আ) এর সাক্ষাৎ পান। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ট ও সর্ব শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (স) বিদায় হজের খুতবাও এখান থেকেই দিয়েছিলেন। এইসব পবিত্র স্থান দেখানোর জন্য ড্রাইভারের সংগে চুক্তি হয়।
পবিত্র নগরী মদিনাতে মহাবনী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (স:) এঁর রওয়াজা মুবারক জিয়ারত ঃ পবিত্র নগরী মক্কায় বেশ কিছুদিন থাকার পর সৌদি মোয়াল্লেম আমাদেক বাসে করে পবিত্র নগরী মদিনাতে নিয়ে আসেন। দয়ার মহানবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (স) এঁর রওয়াজা মুবারক জিয়ারত ও মদিনা মনোয়ারায় ৫দিনে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয়। অর্থাৎ ৪০,০০০ ওয়াক্তের নামাজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। মসজিদের নববিতে বিশেষ বিশেষ জায়গায় নামাজ পড়া সর্বত্তোম মর্যাদা,কিন্তু সেখানে খুবই ভীরের জন্য নামাজ পড়া কঠিন হয়। সব সময় মুরুব্বিকে অনুসরন করি। দয়ার মহা নবীর রওয়াজা মুবারক জিয়ারত, রিয়াযুল জান্নাত ও আসহাবের ছুফ্ফাতে নামাজ পড়া মনের একান্ত কামনা ও বাসনা, খুব ভীরের জন্য জিয়ারত ও নামাজ আদায় করতে পারতেছি না। আমার এক মাত্র সম্বল দুচোখের পানি,রহমতের মালিক আল্লাহ্ ও তাঁর মহা দয়ালু নবীর নিকট হৃদয় হতে দুচোখ পানি ফেলে আকুল আবেদন নিবেদন করতে লাগলাম, আমার বাবা-মা রসুলের নামে আমার নাম রেখেছেন মোহাম্মদ। আমি তো আল্লাহর ও মহানবীর পথে চলি নাই, আমার মত মহা পাপী দুনিয়াতে কেহ নাই। আল্লাহ্ তুমি আমাকে রহমত আর দয়ার মহা নবী আমাকে দয়া না করলে আমি চ’ড়ান্ত ক্ষতি গ্রস্ত হবো। আমাকে শুধু মাত্র একবার সুযোগ করে দাও। ফলে আমার হৃদয় হতে নিঙ্ড়ানো দুচোখের পানি ব্যাথা গেল না। দয়ার মহা নবী রওয়াজা মুবারক জিয়ারত, রিয়াযুল জান্নাতে ও আসহাবের ছুফ্ফাতে দু’রাকাত নামাজ ফাঁকা অবস্থায় অর্থাৎ প্রথমে একজন অচেনা বিদেশী হাজী, ২য়জন আমার মুরুব্বি ও ৩য়জন
৭
আমি অধম বান্দা জিয়ারত ও নামাজ পড়তে আল্লাহ্ রহমতে ও মহানবী দয়া করে সুযোগ করে দিয়েছেন। মুরুব্বি বার বার বেশী করে নামাজ ও জিয়ারত করার জন্য আমাকে বলতেছিলেন। আমি তাঁকে বললাম, আমি আল্লাহ্ ও তাঁর দয়ার নবীর নিকট মাত্র একবার সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি, আমি তা অমান্য করবো না। এই ছিল আমার প্রতি আল্লাহ্র রহমত ও মহানবীর দয়া।
জান্নাতুল বাকী জিয়ারত:
একদিন সময়- সুযোগ বুঝে জিয়ারতের নিয়মনীতি মেনে জান্নাতুল বাকী জিয়ারত করলাম। জান্নাতুল বাকী হল পবিত্র মদিনা শরীফের কবরস্থান। মসজিদে নববীর পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে রসুলুল্লাহর (স:) বংশধর, পবিার পরিজন, বহু সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, শহীদান, ইমামগন, এবং বহুওলী দরবেশ শায়িত রয়েছেন।
আমি মুরুব্বির জন্য বাংগালী হোটেল হতে খাবার এনে দিতাম। আমাদের রুমে আমার পার্শ্বের জেলার দুজন হাজী সাহেব ছিলেন। অন্য রুমে তাঁদের স্ত্রীরা ছিল, তাঁরা রান্না করে খেতেন। পবিত্র মদিনা নগরীতে মুরুব্বির এক চাচাতো ভাই চাকুরী করতেন। মুরুব্বি তাঁর ভাইকে পবিত্র মদিনাতে পৌছার খবর জানানো হলে তিনি আমাদের সংগে দেখা করলো বিভিন্ন প্রকার খাবার নিয়ে। মুরুব্বির সংগে অনেকক্ষন পারিবারিক ও সৌদির সর্ম্পকে আলোচনা করে বিদায় নিলেন। বিদায়কালে বলে গেলেন, আগামি কাল দুপুরের খাবার নিয়ে আসবেন না। পরের দিন জহরের নামাজ পর তিনি আমাদের দুজনের জন্য বড় দুইটি প্যাকেট খাবার নিয়ে হাজির। এক প্যাকেটের খাবার মুরুব্বি ও আমি দুজনে শেষ করা কঠিন। এক প্যকেট খাবার বাঁকি রইল, রাতে খাবার জন্য তা রাখলে নষ্ট হবে। তাই প্যাকেটটি আমার পার্স্বের জেলার দুজন হাজীকে দেওয়া হলো, তাঁরা হাসি মুখে তা গ্রহন করলেন এবং সংগে সংগে তা তাঁরা যে রুমে তাঁদের স্ত্রীরা থাকে সে রুমে নিয়ে গেলেন। কিছুক্ষন পরে রুমে ফিরে আসলেন এবং বললেন প্যাকেটে অনেক আইটেমের সুস্বাদু খাবার ছিল। আমরা পরে কৌশলে জানতে পেরেছি যে, এক প্যাকেটের খাবারের দাম বাংলাদেশী টাকায় ৪০০/=। মুরুব্বির ভাইকে অত বেশী বেশী করে খাবার আনতে মানা করা সত্বেও প্রায়দিন বিভিন্ন আইটেমের খাবার আনতেন। আমরা দুজনে অত খাবার খেতে পারতাম না। তাই বেশী খাবার গুলি রুমের হাজীদ্বয়কে দিতাম তাঁরা হাসি মুখে তা গ্রহন করতেন এবং সংগে সংগে তা তাঁরা যে রুমে তাঁদের স্ত্রীরা থাকেন সে রুমে নিয়ে যেতেন।। উক্ত হাজী সাহেবরা নিজেরাও বিভিন্ন খাবার নিয়ে এসে রুমে খেতেন এবং স্ত্রীদের রুম থেকে খাবার খেয়ে এসে আমাদের উপস্থিতে সুস্বাদু খাবারের গল্প করতেন। যে কয়েক দিন পবিত্র মদিনা নগরীতে ছিলাম, উক্ত হাজীদ্বয় শুধু আমাদের খাবার নিয়েছেন। কিন্তু সৌজন্যের জন্য একবারও তাঁরা কোন খাবার আমাদেক অফার করেন নাই। এটাই কি আরাফাতের ভাইয়ের মন বা হৃদয়?
অথচ পবিত্র মদিনা নগরীতে বাংগালী মুসলিম ভাইয়ের মেহমানদারীর আন্তরিকতা দেখেছি, যা জীবনে ভুলবার নয়। মুরুব্বির এক ছেলের বন্ধুকে মোবাইল করায় একদিন তিনি তাঁর কার নিয়ে আমাদের
৮
সংগে দেখা করলেন, তিনি পবিত্র মদিনা নগরীতে ভালো ব্যবসা করেন। তিনি বললেন যে, আগামি কাল জহুরের নামাজ বাদ আমার বাসায় দুই জনের দাওয়াত। আপনারা তৈরী থাকবেন, আমি কার নিয়ে এসে আমার বাসায় নিয়ে যাব। পরের দিন তিনি যথা সময়ে কার নিয়ে এসে আমাদেক তাঁর বাসায় নিয়ে আসলেন। তাঁর বাসায় বসার ঘরে তাঁর শ্বশর সাহেব(যিনি হজ্জ করতে এসেছেন), তাঁর ছোট ছোট ২ ছেলে ১ মেয়েকে দেখলাম। তাঁর এক আত্বীয়ও আছেন। মুরুব্বির ছেলের বন্ধু আমাদেক বললেন, আমি আমার কয়েক জন বন্ধুদেকেও দাওয়াত করেছি। আমি তাদেক নিতে যাচ্ছি, আপনারা খেতে বসুন। ঘরের এক পার্শ্বে দস্তরখানা বিছানো রয়েছে, তার উপর সারি ভাবে বিভিন্ন রান্না করা খাদ্য রয়েছে। আমরা বেসিনে হাত মুখ ধুয়ে দস্তরখানার উপর বসলাম, তাঁর আত্বীয়টি আন্তরিকতার সহিত ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন আইটেমের খাবার পরিবেশন করলেন। আমাদের খাবার শেষ হওয়া মাত্র তিনি তাঁর বন্ধুদেক নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন। সংগে সংগে তাঁরা হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসলেন। খাবার পর তিনি মুরুব্বি ও আমাকে তাঁর কারে করে আমাদের বিল্ডিং পৌছে দিলেন।
আমরা কয়েকজন একমত হয়ে পবিত্র মদিণা শরীফের নি¤œ স্থান সমুহ জিয়ারত করার জন্য প্রতিজন ১০ রেয়াল করে দেওয়ার জন্য এক টেক্স্রি ডাইভারের সংগে চুক্তি হল। অসমাপ্ত
হাজী মোহাম্মদ আলী আকন্দ
গ্রাম ঃ পিয়ারা, পো ঃ ছাতিনালী, ৮নং আওলাইউ:পি:
উপ-জেলা: পাঁচবিবি, জেলা ঃ জয়পুরহাট।
মোবাইল নং ০১৭১৮-৪৮৪১১১, তারিখ ঃ ২৭Ñ৩Ñ১৭ইং
1 minute and 51 second after:
[img][/img]